‘কুরুক্ষেত্রে স্বামী তুরীয়ানন্দ ও অতুলানন্দ’ - Spirituality Religion

Header Ads

‘কুরুক্ষেত্রে স্বামী তুরীয়ানন্দ ও অতুলানন্দ’

‘কুরুক্ষেত্রে স্বামী তুরীয়ানন্দ ও অতুলানন্দ’
*************************************
      কুরুক্ষেত্র মেলায় আমরা বিভিন্ন জায়গায় একটু আস্তানা পাবার চেষ্টা করলুম, শেষে কোথাও কিছু না পেয়ে একটা বিরাট বটগাছের নিচে অন্যান্য তীর্থযাত্রীদের মতো কম্বল বিছালুম।  আমাদের কাপড়ের পুঁটলিগুলো কম্বলের নিচে রেখে বালিশ করে বিশ্রাম করতে লাগলুম।  আমি সেই বৃক্ষের শাখার ভিতর দিয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্ররাজি দেখতে লাগলুম। এমন সময় স্বামী তুরীয়ানন্দজী উঠে বসলেন।আমি জিজ্ঞাসা করলুম, “কী ব্যাপার, স্বামী ?”  তিনি বললেন, “গুরুদাস, এখন তুমি ঠিক ঠিক সন্ন্যাসী।” “আমি তো তাই হতে চাই,” উত্তরে বললুম।  তারপর স্বামীজীর ‘সন্ন্যাসীর গীতি’ থেকে আবৃত্তি করলুম—‘সুখ তরে গৃহ করো না নির্মাণ, কোন্ গৃহ তোমা ধরে হে ধীমান্।’
“ঠিক বলেছ, ঠিক বলেছ,”স্বামী তুরীয়ানন্দজী উত্তেজিতস্বরে বললেন।“আমরা জগন্মাতার সন্তান।  আমাদের ভয় নেই।  তিনিই দেন, তিনিই নেন।  তাঁর নাম জয়যুক্ত হোক।” তারপর তিনি স্বামীজীর মহিমা কীর্তন করে বললেন, “তিনি ছিলেন প্রকৃত সন্ন্যাসী।  ঐশ্বর্যে ও দারিদ্রে তিনি সমান থাকতেন।  তিনি জানতেন যে তিনি সাক্ষিস্বরূপ নিত্যমুক্ত আত্মা। সুখদুঃখ তাঁকে বিচলিত করতে পারত না।  পৃথিবীটা ছিল তাঁর কাছে একটা রঙ্গমঞ্চ।  কী সুন্দরভাবেই না তিনি ঐ রঙ্গমঞ্চে তাঁর অভিনয় করে গেলেন। পরার্থেই ছিল তাঁর জীবনধারণ।  তাঁর ভিতর স্বার্থপরতার লেশমাত্রও ছিল না।  তাঁর নিজের কোনও মতলব বা স্বার্থ ছিল না।  ঠাকুরের বাণী ও সাধনপ্রচারই ছিল তাঁর জীবনব্রত।  আমাদের ঠাকুর বলতেন, ‘সে যা খুশি করুক না কেন, তাতে তাঁর কোন দোষ হবে না।’ ”
      একটু থেমে স্বামী তুরীয়ানন্দজী বললেন, “কিন্তু আমাদের সাবধান হতে হবে।  মায়ার অসীম শক্তি, আমরা সহজেই মায়ার দ্বারা আবদ্ধ ও মোহিত হই।”  আমি বললুম, “মা আমাদের মায়া থেকে রক্ষা করবেন।”  “তুমি ঠিক বলেছ।  এটি কখনও ভুলো না।  মাকে সদা বিশ্বাস কর।  মা ছাড়া জীবনের মূল্য কী ?  এ সংসার তো মিথ্যা ও ফাঁকি।  একমাত্র তিনিই সত্য।”
ওঁ শান্তিঃ !  ওঁ শান্তিঃ !  ওঁ শান্তিঃ !

No comments

Powered by Blogger.