Why doest thou see the mote that is in thy neighbour’s eye and seest not the beam that is in thy own eye
শ্রীম (ভক্তদের প্রতি) – কি বললেন বক্তৃতায়?
বড় অমূল্য – ভক্তির সম্বন্ধেই বললেন। কিন্তু জ্ঞানযোগের কথায় সন্ন্যাসকে আক্রমণ করেছেন আর সন্ন্যাসী সাধুদের নিন্দা করেছেন। বললেন, কলিতে সন্ন্যাস চলে না। আজকালকার সন্ন্যাসীর আদর্শ নীচু হয়ে গেছে। ভাল ভাল কম্বলের স্তুপের উপর বসে থাকে। উত্তম সোয়েটার গায়ে পরে। এর চাইতে ভক্তিযোগ নিয়ে গৃহস্থাশ্রমে থাকা ভাল। ইত্যাদি।
থিয়জফিক্যাল সোসাইটি। রাধাবিনোদন গোস্বামীর বক্তৃতা। বিষয় ভক্তিযোগ। বড় অমূল্য ও জগবন্ধু ঐ বক্তৃতা শুনিয়া ফিরিয়াছেন।
SRI
RAMAKRISHNA
|
শ্রীম সন্ন্যাস ও সাধুর উপর আক্রমণ হইয়াছে শুনিয়া উত্তেজিত হইয়া পড়িয়াছেন। বলিতেছেন, বলে কি? কোথায় সাধু আর কোথায় গৃহস্থ! শুনে গা জ্বালা করছে। কোথায় সুমেরু পর্বত আর কোথায় সরষেদানা। কিংবা, যেন সাগর আর গোষ্পদে জল। এইটুকুন মাত্র পার্থক্য – সাধু আর গৃহস্থে। নিন্দে না করে যদি তাঁদের সুখ্যাতি করতেন, কত উপকার হত লোকের। সাধুদের উপর যদি ভক্তি না হয় তা হলে ছাই হবে। সংসারী লোক উপদেশ দিতে গেলেই এই গোল করে। হক কথা বলবার উপায় নাই। তাহলে হয়তো কেউ আসবে না। যদি বলো এ-ও করো, ও-ও করো, তাহলে বেশ।
পিতা-মাতা আত্মীয়-কুটুম্ব সব ছেড়ে এসে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা কি সংসারে থাকতে পারতেন না! তাঁরা কি সংসারকে ফাঁকি দিয়ে এসেছেন! পাড়ে কেউ করতে তা? করুক দেখি সংসারত্যাগ! এক বছর থাকুক দেখি তাঁদের মতই কম্বল সোয়েটার গায়ে দিয়ে! দম বন্ধ হয়ে মরে যাবে। মোহে আচ্ছন্ন হয়ে আছে নিজে। অপরের দোষ দেখা? একদিন স্ত্রীপুত্র কন্যা চোখের সামনে না দেখতে পেলে অস্থির হয়ে যায় যে লোক, সেই লোকের মুখে সাধুর নিন্দা! থাক দেখি ভিক্ষা করে এক বছর। দেখবো কেমন বীর! এক পদ খাওয়া কম হলে বাড়িশুদ্ধ তোলপাড়। এইসব লোক যায় সাধুনিন্দা করতে! নিজে কলঙ্কসাগরে ডুবে আছে, আর অপরের কলঙ্ক দেখা। তাইতো ক্রাইস্ট বলেছিলেন, Why doest thou see the mote that is in thy neighbour’s eye and seest not the beam that is in thy own eye – অপরের চখে একটা তুচ্ছ কণামাত্র দেখছ, নিজের চোখে কড়িকাঠ দেখতে পাও না! চালুনি বলে ছুঁচকে, তোর কেন ছেঁদা!
দুই রকম আছে, গুণগ্রাহী আর দোষগ্রাহী। হাঁস গুণগ্রাহী। জলে-দুধে মিশান আছে, দুধ নেবে জল ছেড়ে। আবার শূকর। পাঁচ রকম উত্তম জিনিস রেখে দাও সামনে – পলুয়া হালুয়া ক্ষীর রাবড়ী সন্দেশ – ও সব নেবে না। ঐখানে একটা লোক হাগছে, সে তাই খাবে, গু খাবে। ঐ ব্যক্তি অত খুঁজে তাঁদের গুণ পেল না। সবই দোষ। সংসারী লোক ধর্মবক্তা হলে ঐ রকম হয়। ছি ছি, ও রকম বলতে আছে? সংসারী লোক দাঁড়ায় কোথায়, সাধুর নিন্দা করলে? ঠাকুর বলতেন, নিত্য সাধুসঙ্গ দরকার। সাধুদের ঘড়ি ঠিক, সংসারীদের ঘড়ি ভুল। তাই নিত্য ভুল ঘড়ি ঠিক ঘড়ির সঙ্গে মিলানো দরকার। তবে হুঁশ থাকে, কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। নইলে মনে হয়, আমার হয়ে গেছে। তার আর উন্নতি হবে কি? সর্বত্যাগের আদর্শকে মানতেই হবে, মর্যাদা দিতেই হবে। নইলে বুঝতে হবে নিচে পড়ে গেছে। তা নইলে ঈশ্বর কেন করলেন একটি স্বতন্ত্র থাক্? ছি ছি, সাধুর নিন্দা! রাম রাম, এসব লোকের কথা শুনে মানুষ কি লাভ করবে? অনিষ্ট হবে। তার অপকার হবে।
No comments