প্রশ্ন : মহারাজ, স্বামীজী রামকৃষ্ণ সংঘের আদর্শ বলতে গিয়ে বলেছেন : “ আত্মনাে মােক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ।” শাস্ত্রে কি এধরনের কোন কথা আছে, যা থেকে তিনি এটি নিয়েছেন ?
|
Ma
Bhabatarini (Kali)
|
Swami
Shivananda
|
BANERSHAR
SHIVA LINGA
|
প্রশ্ন
:
মহারাজ,
স্বামীজী
রামকৃষ্ণ সংঘের আদর্শ বলতে
গিয়ে বলেছেন :
“আত্মনাে
মােক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ।”
শাস্ত্রে কি এধরনের কোন কথা
আছে,
যা
থেকে তিনি এটি নিয়েছেন?
মহারাজ
:
স্বামীজীর
কথাই তাে শাস্ত্র।
প্রশ্ন:—সেটা
তাে আমরা স্বীকার করি মহারাজ,
তবুও
স্বামীজী অনেক কথাই বলেছেন
যেগুলাে শাস্ত্রে রয়েছে।
এর সদৃশ কোন বাক্য পাওয়া যায়
কি?
মহারাজ
:
শাস্ত্র
তাকে ঠিক বলা যায় না।
“বসন্তবল্লোকহিতং চরন্তঃ”
(বসন্ত
ঋতু যেমন লােকের সুখ প্রদান
করে থাকে )-আচার্য
শঙ্কর বলেছেন।
প্রশ্ন:—স্বামীজী
আত্মমুক্তির সঙ্গে জগদ্ধিত—এই
দ্বিতীয় জিনিসটি যােগ করলেন
সন্ন্যাসীর আদর্শের সঙ্গে।
মহারাজ :
সঙ্গে
একথা বলাে না। এ হল সহানুষ্ঠান।
কারাে গুরুত্ব কম নয়,
কারাে
বেশি নয়।
প্রশ্ন:—স্বামীজীর
আগে সন্ন্যাসীদের জীবন ও তাদের
আদর্শের কথার মধ্যে দেখা
যায়—শুধু আত্মমুক্তিই হল
লক্ষ্য। তাহলে,
তিনি
এই জগৎ-হিত
যােগ করলেন কেন?
মহারাজ
:
স্বামীজী
লক্ষ করেছেন,
শুধু
আত্মমুক্তি-আত্মমুক্তি
বলে সন্ন্যাসীরা স্বার্থপর,
অলস
এবং নির্দয় হয়ে পড়ছে। তাতে
না হচ্ছে আত্মমুক্তি,
না
হচ্ছে
কারাে
উপকার। স্বার্থপরতা সঙ্কীর্ণতা
থেকে আসে। স্বার্থপরতাই
মালিন্য ;
চিত্তশুদ্ধি
আত্মজ্ঞানের পূর্বশর্ত।
চিত্তশুদ্ধ হওয়া মানে
স্বার্থপরতা চলে যাওয়া।
জগদ্ধিতটা প্রথমদিকে ঠাকুরের
সন্তানদের ভিতরেও অনেকে গ্রহণ
করেননি। স্বামীজী সেটাকে খুব
গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তিনি
জোর দেওয়ার পর গুরুভাইরা
সেটা গ্রহণ করেছেন। কথামৃত
পড়লে জগদ্ধিতটা যেন গৌণ মনে
হয় কখনাে কখনাে। ঠাকুর বলেছেন
:
জগৎ
কী এতটুকু গা যে তার উপকার
করবে?
ঠাকুরের
এসব কথার অর্থ প্রসঙ্গ অনুযায়ী
বুঝতে হবে।
No comments