প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী
Sri
Ramakrishna
|
'
সেন্ট
লুইস বেদান্ত সােসাইটির
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে
১৩/৯/১৯ws
তারিখে
মহারাজ নিত্যমুক্তানন্দের
সঙ্গে সেন্ট লুইসে আসেন এবং
১৯ তারিখ চিকাগাে
চলে যান। ১৪/৯/৮৮
তারিখে আমরা মহারাজকে ব্যাসিলিকা
(ক্যাথলিক
ক্যাথিড্রাল)
দেখাতে
নিয়ে যাই। এরকম মােজেইকের
কাজ পৃথিবীতে আর কোথাও আছে
কি না সন্দেহ। Father
Vincent Hier মহারাজকে
অভ্যর্থনা জানান এবং ভিতরে
সব দর্শনীয় স্থান দেখান।
তারপর আমরা মহারাজকে মিসিসিপি
নদীর পশ্চিম তীরে arch
(Gateway of the West) দেখাই।
এখান থেকে শুরু হয়েছিল
ক্যালিফোর্নিয়ার gold
rush অভিযান।
তারপর নদী পার হয়ে আমরা
মিসিসিপি ও মুসৌরি নদীর
সঙ্গমস্থলে যাই। সেখানে আমি
নদীতে নেমে হাতে করে জল এনে
মহারাজকে দিই। তিনি তা নিজের
মাথায় ছিটিয়ে দেন।১৫
সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মহারাজ
শ্রীশ্রীমা ও ব্রহ্মানন্দজীর
স্মৃতিচারণ করেন। ১৬ তারিখে
বাবুরাম মহারাজ,
লাটু
মহারাজ ও হরি মহারাজের কথা
বলেন। ১৭ সেপ্টেম্বর মহাপুরুষ
মহারাজের স্মৃতিকথা আলােচনা
করেন এবং ১৮ তারিখ সকালে
‘বেদান্ত কী?'—এই
বিষয়ে এক সুন্দর বক্তৃতা
দেন। তাঁর সব বক্তৃতা আমরা
ভিডিও টেপ করে রেখেছি। পরবর্তিকালে
একদিন আমি মহারাজকে মজা করে
বলি,
“আমরা
এখন আপনাকে বিক্রি করে টাকা
রােজগার করছি।” “কীরকম?”—তিনি
জিজ্ঞাসা করলেন। আমি বললাম,
“অনেকে
আপনার টেপ কিনছে।” তিনি হাসলেন।
Sri
Ramakrishna
|
ব্রেকফাস্টের
সময় আমরা তাঁকে নয়-দশ
রকম ফল সাজিয়ে দিতাম। ভক্তেরা
নানারকম খাবার তৈরি করে আনত।
মহারাজ মিষ্টি-দই
খুব পছন্দ করতেন। আমি একদিন
দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে চিনি
মিশিয়ে Dannon-এর
দই থেকে একটু সাজা দিয়ে দই
পাতলাম। তার পরদিন তা জমল না।
কারণ,
ঐ
সাজা যথেষ্ট টক ছিল না। তারপর
ওভেনে হিট দিয়ে দই রাখলাম,
তাতে
তিন ভাগের একভাগ জমল। মহারাজকে
বললাম,
“আমার
দই ভূগােল হয়ে গিয়েছে—অর্থাৎ
পৃথিবীর একভাগ স্থল ও দু-ভাগ
জল। দই জমেনি।” তিনি বললেন,
“যা
জমেছে তা-ই
নিয়ে এসাে।” তিনি আমার পাতা
দই খেয়ে বললেন,
“বেশ
হয়েছে। খুব সুস্বাদু।” তাঁকে
দেখে মনে হতাে,
‘সন্তুষ্টঃ
সততং যােগী'।
অবশ্য পরের দিন এক বাঙালি ভক্ত
ভাল দই এনে দেয়।
Sri
Ramakrishna
|
১৭
সেপ্টেম্বর মহারাজকে বললাম,
আজ
আপনাকে ‘গ্রেটেস্ট শাে অন
আর্থ’ দেখাব। রিঙ্গলিং ব্রাদার্স
এবং বার্নাম বেইলি সার্কাস—তিন
রিং-এর
সবচেয়ে বিখ্যাত সার্কাস।
আমাদের সেক্রেটারি চার খানা
সবচেয়ে দামি টিকিট নিয়ে
এলেন। মহারাজকে নিয়ে
নিত্যমুক্তানন্দ,
ব্রহ্মচারী
নীল ও আমি এরিনাতে গেলাম।
অর্ধেক দেখে মহারাজ বললেন,
“চলাে,
এবার
আশ্রমে ফিরে যাই।” তিনি কেন
পুরাে সার্কাস দেখলেন না,
আমাকে
বললেন না। আমার মনে হলাে
ট্রাপিজে মেয়েদের স্বল্প
পােশাক-পরা
খেলা পছন্দ করলেন না।
ডাঃ
জিতেন গুপ্ত মহারাজকে খুব
ভালভাবে চেক আপ করল এবং ইকো
কার্ডিওগ্রামও করা হলাে।
কারণ,
তিনি
তখন ক্রমাগত ঘুরছিলেন। আমরা
মহারাজকে পরে ঔষধ পাঠাতাম।
মহারাজ একদিন কথাপ্রসঙ্গে
বললেন,
“দেখ,
বিধানচন্দ্র
রায় বলতেন,
‘অসুখ
হলে ডাক্তার ডাকবেন,
কারণ
তাদের
তাে বাঁচতে হবে। তারা ওষুধ
প্রেসক্রাইব করলে তা কিনবেন,
কারণ
ওষুধের কোম্পানিগুলিকে তাে
বাঁচতে হবে। আর আপনি দয়া করে
ঐ ওষুধগুলাে খাবেন না,
কারণ
আপনাকেও তাে বাঁচতে হবে। ”
মহারাজ খুব রসিক ছিলেন। ।
No comments