প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ (১৯০৭-১৯৯৮) - Spirituality Religion

Header Ads

প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ (১৯০৭-১৯৯৮)


প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ (১৯০৭-১৯৯৮)

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna
প্রশংসা করেছেন। জ্ঞান-ভক্তির সমন্বয়, এমন আর কোথাও দেখা যায় না। একজন বলেছিল—ব্রাহ্মরা বলে যে কেশববাবুই জ্ঞান-ভক্তির সমন্বয়। করেছেন। ঠাকুর শুনে বলেন—“সে কী? তাহলে অধ্যাত্ম কী?” অর্থাৎ, অধ্যাত্মরামায়ণে তাে ঐকথা বহুধা ঘােষিত হয়েছে। ঠাকুরের কথাতেই এই পুস্তকটির ওপর একটা বিশেষ আকর্ষণ সারাজীবনই ছিল এবং রয়েছে। আর রঘুবীর আমাদের ঠাকুরের কুলদেবতা। তাঁর ওপর ঠাকুরের বিশেষ টান ছিল।
পূজনীয় মতি মহারাজ (স্বামী শিবস্বরূপানন্দ) চলে গেলেন। খুব ভুগছিলেন। খুব গুরুসেবা করেছেন। রাতদুপুরে কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করছে। মহাপুরুষ মহারাজের ঘুম নেই। হাঁপানি মহারাজ বললেন, “এই মতি, কুকুরটা ডাকছে কেন রে?”
মতি মহারাজ-ও একটা সন্দেশ খেতে চায়।
মহাপুরুষজী—হু শালা! সন্দেশ খাবে? না—দিস না। আচ্ছা যা—একটা সন্দেশ দিয়ে আয়।

এরূপ মহাপুরুষজীর কত লীলার সাক্ষী মতি মহারাজ।
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

/১০/১৯৭৭, কাশী সেবাশ্রম, ১০ নম্বর ওয়ার্ড
সকালে ব্রেকফাস্টের পর ধীরেশানন্দ মহারাজের ঘরে গেলাম। তিনি বিছানায় বসে ধ্যানজপ ও পড়াশােনা করেন। ঘরে বই ভর্তি। সাধনভজন ও ভগবৎ-কৃপা সম্বন্ধে আমার প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “দেখ, কৃপা চার প্রকার-গুরুকৃপা, ঈশ্বরকৃপা, শাস্ত্ৰকৃপা ও আত্মকৃপা। গুরু কৃপা করে দীক্ষা দিয়ে সাধন-পথ দেখিয়ে দেন। সেবা ও শুশ্রুষা দ্বারা প্রসন্ন হয়ে গুরু শিষ্যকে তত্ত্ব উপদেশ করেন। এটিই গুরুকৃপা।
শ্রদ্ধা-প্রেমাদি গুণ পরিপূর্ণরূপে বিকশিত হলে শাস্ত্রের মর্ম মুমুক্ষুর হৃদয়ে বিকশিত হয়। এটিই শাস্ত্ৰকৃপা।
সাধকের স্বপ্ৰযত্নই আত্মকৃপা। এটিই মুখ্য। আত্মকৃপা থাকলে অপর কৃপাসমূহ সাধকের সহায়ক হয়।

আত্মকৃপা হলে ঈশ্বরেরও কৃপা হয়। ঈশ্বরকৃপা ব্যতীত সব পুরুষের
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

প্রযত্ন ব্যর্থ হয়। অতএব নিরভিমান হয়ে সাধনভজন দ্বারা ঈশ্বরকৃপালাভে যত্ন করা কর্তব্য। ঠাকুর তাে বলেছেন—কৃপার বাতাস তাে সর্বদাই বইছে, তুই পাল তুলে দে।
দেখ, তােমাকে একটা কথা বলি—রােজ শাস্ত্র পড়তে পড়তে শাস্ত্রদৃষ্টি খুলে যায়। তখন মর্মার্থ বােধ হয়। জ্ঞানের উন্মেষ হয়। হরি মহারাজের এই শাস্ত্রদৃষ্টি খুলে গিয়েছিল। তিনি শাস্ত্রের ওপর সবসময় নতুন আলােকপাত করতেন।”

ঐদিন সকালে স্বামী ধীরেশানন্দ বেদান্তের ব্যাবহারিক দিকটা উদাহরণের পর উদাহরণ দিয়ে আলােচনা করেন, “দেখ, ব্রহ্মকে বাক্য দ্বারা বর্ণনা করা যায় না, ‘অবচন’ অর্থাৎ মৌনের দ্বারাই ইঙ্গিত করা যায়। গুরু বাধ্ব শিষ্য বাঙ্কলিকে উপদেশ দেওয়ার কালে বলেন—উপশান্তোহয়মাত্মা অর্থাৎ আত্মা উপশান্ত-স্বরূপ। যােগবাসিষ্ঠএ আছে বসিষ্ঠ রামচন্দ্রকে নানা উপদেশ দিয়ে। মৌন অবলম্বন করেন। তখন রাম বলেন, এত উপদেশ না দিয়ে প্রথম থেকেই মৌন হলেই হতাে। প্রত্যুত্তরে বসিষ্ঠ বলেন, 'তাহলে লােকে ভাবত আমি মূর্খ, কিছু জানি না। তাই সব বলে আমি চুপ করে আছি। তত্ত্ব মুখে বলা যায় না। তুমি মৌন অবলম্বন করলে এই রহস্য বুঝতে পারবে।
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna



সৎসঙ্গ  না করলে মন ভগবন্মুখী হয় না। সৎসঙ্গ শব্দের মুখ্য অর্থ সতের সঙ্গ অর্থাৎ সৎস্বরূপ পরমাত্মার সঙ্গ। তাঁর সঙ্গে এক হয়ে যাওয়া অর্থাৎ ব্রহ্মাকারা বৃত্তিতে স্থিত হওয়া। আর সৎসঙ্গ শব্দের গৌণ অর্থ সৎস্বরূপ পরমাত্মার চিন্তাকারী সাধুগণের সঙ্গ। তত্ত্বজ্ঞ মহাপুরুষগণের রচিত গ্রন্থ ও তাঁদের অনুভূতিময় কথা বা বাণী অধ্যয়ন করাকেও সৎসঙ্গ বলা হয়।”

মহারাজ মানুষের ভিতরের ও বাইরের অশান্তি প্রসঙ্গে এই উদাহরণ দিলেন, “দেখ, একটা কুকুরের মাথায় ঘা ও তাতে পােকা হয়েছে। কুকুরটি খাঁচার ভেতর আছে। সে কেবল ভেতরের যন্ত্রণা ভােগ করছে। তারপর কুকুরটি যেই খাঁচা থেকে বাইরে এল তখন মাছি বসতে শুরু করল। কুকুরটির তখন ভেতরে ও বাইরে জ্বালা ও অস্বস্তি। তেমনি নির্জনে মানুষের মনে ভােগ্যবস্তুর প্রতি কামনা থাকলে সে অশান্তিতে ছটফট করে। সেই মানুষ যখন লােকালয়ে এসে ভােগ্যবস্তুর সম্মুখীন হয়, তখন অতৃপ্ত লালসা পূরণের জন্য সে পাগল হয়ে ওঠে। ভেতরের মন ও বাইরের ইন্দ্রিয়

No comments

Powered by Blogger.