প্রাচীন সাধুদের কথা_ স্বামী পরমেশানন্দ(১৯০৪-১৯৮৬)
প্রাচীন সাধুদের কথা_ স্বামী পরমেশানন্দ(১৯০৪-১৯৮৬)
Sri
Ramakrishna
|
স্বামী পরমেশানন্দ(১৯০৪-১৯৮৬)
স্বামী
পরমেশানন্দ (ধরণী
মহারাজ)
ছিলেন
শ্রীশ্রীমায়ের শিষ্য এবং
দূর
সম্পর্কে শরৎ মহারাজের আত্মীয়।
মহারাজ আমাকে পুরানাে স্মৃতি
বলতেন।
১৮/৮/১৯৮২,
কাশী
অদ্বৈত আশ্রম।
মহারাজ
রােজ বিকালে সেবাশ্রমের মাঠের
চারিদিকে কয়েক বার ঘুরে গেস্ট
হাউসের সিঁড়িতে এসে বসতেন।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
“মহারাজ,
আপনি
কি রােজ বেড়ান?”
মহারাজ
বললেন,
“হ্যাঁ,
রােজ
বেড়াই। দেখ,
অভ্যাস
ছেড়ে দিলে আর পাওয়া যায়
না।”
এরপর
তিনি প্রসঙ্গক্রমে বলেন,
“কিশােরী
মহারাজের (পরমেশ্বরানন্দ)
সন্ন্যাসের
জন্য শিবরাত্রির পরদিন শ্রীমা
একখানা চিঠি দিয়ে তাঁকে
বেলুড় মঠে রাজা মহারাজের
কাছে পাঠান। বাবুরাম মহারাজ
চিঠির মর্ম জানতে পেরে বলেন,
‘ওরে,
তুই
যে হাইকোর্টের চিঠি নিয়ে
এসেছিস। কিশােরী মহারাজ উত্তর
দেন,
‘মহারাজ,
আমি
কিছুই জানি না। মা এই চিঠি
দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। সন্ন্যাস
হয়ে গেল। মা পরে বলেছিলেন,
'বাবা,
তােমার
মৃত্যুযােগ ছিল। সন্ন্যাস
নিলে নবজন্ম হয়। তাই তােমাকে
সন্ন্যাস নিতে বলেছিলাম যাতে
তােমার মৃত্যুযােগটা কাটে।
কিশােরী মহারাজ নিজে আমাকে
এই ঘটনাটা বলেছিলেন।
Sri
Ramakrishna
|
“মা
বলতেন,
'বাবা,
জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে,
এ
তিন বিধাতা নিয়ে। জনৈক শিষ্যের
তিনটি বিবাহের যােগ ছিল। ঠাকুর
খেয়ে দিলেন। ঠাকুর কর্মফল,
প্রারব্ধ
কৃপা করে কাটিয়ে দেন।
“ধ্যানজপ
ভাসা-ভাসা
করলে হবে না। সিদ্ধমন্ত্র
তুবড়ির মতাে ভেতরটা পুড়িয়ে
দেয় এবং সব বের করে দেয়।
বহুকাল জপধ্যান করছে,
অথচ
ভেতরে ইষ্ট দেখছে না—এর অর্থ
ঠিক হচ্ছে না। শুয়ে স্মরণমনন
হতে পারে,
জপধ্যান
হয় না। তীব্র পুরুষকার অবলম্বন
করে রােজ বসতে হয়।
Sri
Ramakrishna
|
“বিজ্ঞান
মহারাজ নিজে আমাকে এই ঘটনাটি
বলেন ?
একদিন
ঠাকুর বিজ্ঞান মহারাজের কাছে
এসে বললেন,
‘পেসন,
তুমি
এর (শ্রীশ্রীমায়ের)
কথা
কিছু বললা। কেবল আমার কথাই
বলছ। এর কথা না বললে লােকের
মুক্তি হবে কী করে?
মুক্তি
দেবার মালিক যে ও। তারপর থেকে
বিজ্ঞান মহারাজ ঠাকুর ও মার
মন্ত্র দিতেন।”
২৭/৮/১৯৮২,
কাশী
অদ্বৈত আশ্রম
মহারাজ
বললেন,
“নামীর
যত চিন্তা করা যায় তত তাঁর
শক্তি ভেতরে আসে। দেখবে ঠাকুর
কত ভাবে তােমার ভেতর দিয়ে
কাজ করবেন।
“মহেন্দ্রনাথ
দত্ত বলেছিলেন,
স্বামীজীকে
বারবার পড়বি। যদি বুঝতে না
পারিস সেইটা বারবার পড়বি।
ঐ পড়াটাই ধ্যান। দেখবি সব
পরিষ্কার হয়ে যাবে।
“প্রভু
মহারাজের এক শিষ্যা মন্ত্র
পায়। কিন্তু মন্ত্রটা মহারাজের
কাছ থেকে ভালভাবে শুনতে না
পাওয়ায় ভুল মন্ত্র জপ করে।
একদিন স্বপ্নে মা। একদিন
স্বপ্নে মা এসে তার মন্ত্র
শুদ্ধ করে দেন। সে দেখে,
এক
জ্যোতির্ময়ী নারীমূর্তি
বলছেন,
‘তুমি
মন্ত্রটা আমাকে বললা।'
‘না,
মন্ত্র
কাউকে বলতে নেই। আমাকে বলতে
পারাে। তারপর মা নিজেই মন্ত্রটা
শুনে জোরে উচ্চারণ করে তাকে
শুদ্ধ মন্ত্রটা বলেন এবং
সমস্বরে বলতে বলেন।”
No comments