প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ (১৯০৭-১৯৯৮)
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ (১৯০৭-১৯৯৮)
Sri
Ramakrishna
|
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ শুদ্ধ,
বুদ্ধ,
মুক্ত,
সৎস্বরূপ,
পরমানন্দ,
অনন্ত,
অদ্বিতীয়
ব্রহ্ম—এরূপ চিত্তবৃত্তি
জন্মে এবং তা চৈতন্যপ্রতিবিম্বগ্রাহিণী
হয়।
-
“কেননাপনিষদ-এ
রয়েছে—‘প্রতিবােধবিদিতং
মতমমৃতত্বং হি বিন্দতে’ -
যখন
বুদ্ধিবৃত্তিসমূহের আত্মরূপে
ব্ৰহ্ম বিদিত হন,
তখনই
প্রকৃত জ্ঞান হয়,
কেননা
উক্ত জ্ঞানের ফলে মােক্ষলাভ
হয়।
“এই
ব্ৰহ্মসাক্ষাৎকারের ফলে
হৃদয়ের গ্রন্থি অর্থাৎ
অবিদ্যা বাসনাসমূহ। বিনাশপ্রাপ্ত
হয় ও সব সংশয় নিবৃত্ত হয়।
“বেদান্তশাস্ত্রে
দুটি শব্দ আছে—“অসৎ’ ও ‘মিথ্যা’।
অসৎ মানে নেই ও দেখা যায়
না—যেমন বন্ধ্যাপুত্র,
খরগােশের
শিং। মিথ্যা মানে নেই,
কিন্তু
দেখা যায়—যেমন মরীচিকাতে
জল,
রজ্জুতে
সর্প,
শুক্তিতে
রজত বা রুপা।।
“এই
জগৎটা আমাদের কাছে বাস্তব ও
সত্য বলে বােধ হচ্ছে,
অথচ
নিদ্রাকালে জগৎটা মন থেকে
বিলীন হয়ে যায়। যে-বস্তু
অতীত,
বর্তমান
ও ভবিষ্যৎকালে থাকে তা-ই
একমাত্র সত্য। এ জগতে একটি
জিনিসও নেই। যা তিন কালেই
থাকে। তাই জগৎ মিথ্যা।
Sri
Ramakrishna
|
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ “জগতের
সত্তা নিয়ে অনেক মতবাদ রয়েছে।
জগতের সত্তা আছে,
তাই।
দেখা যায়—এটি সৃষ্টিদৃষ্টিবাদীদের
কথা। এই মতে জগৎ অনিত্য,
কিন্তু
মিথ্যা,
নয়।
ব্যাবহারিক সত্তা স্বীকৃত।
“জগৎ
দেখা যায়,
তাই
আছে—এটি দৃষ্টিসৃষ্টিবাদের
কথা। এই মতে। জগতের প্রতিভাসিক
সত্তা স্বীকৃত। জগৎ স্বপ্নবৎ।
“জগৎ
নেই,
দেখাও
যায় না—এক ব্ৰহ্মই আছেন—এটি
অজাতবাদীদের কথা। এই মতে
একমাত্র পারমার্থিক সত্তা
স্বীকৃত হয়।
“দেখ,
এই
‘আমি’ নিয়েই যত গণ্ডগােল।
এই 'আমি'
আছে
বলে জগৎ আছে;
আবার
‘আমি’ না থাকলে জগৎ নেই। জ্ঞানী
‘অহং ব্রহ্মাস্মি’-র
দ্বারা ‘কাঁচা আমি’-কে
বিলয় করছে। আর ভক্ত ‘আমি
শরণাগত'
বলে
কাঁচা আমি’-র
বিলয় করছে।”
তারপর
মহারাজ উত্তরকাশী,
হৃষীকেশ,
হরিদ্বারে
যেসব সাধুর সঙ্গ করেছেন তাঁদের
সম্বন্ধে আমাকে বলেন। কী করে
মানুষ নিরালম্ব হয়ে হিমালয়ের
Sri
Ramakrishna
|
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ গিরিগুহায়
তপস্যা করেন এবং ঐসব মহাত্মার
ত্যাগ-বৈরাগ্য,
শাস্ত্রজ্ঞান,
পবিত্র
জীবনের কথা ও কাহিনি জানবার
আমার দারুণ কৌতূহল ছিল।
১৯৭৭
সালের অক্টোবর মাসে আমি কাশী
সেবাশ্রমের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে।
সকাল-সন্ধ্যায়
ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতাম।
তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে পুরানাে
দিনের স্মৃতিচারণ করতেন এবং
যেসব মহাপুরুষের সঙ্গ করেছেন,
তাঁদের
কথা বলতেন।
দেবীগিরিজী
প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে,
১৯৩৬
সালের আগস্ট মাসে উত্তরকাশীর
লক্ষেশ্বরে তাঁর দর্শন পান।
ঐকালে তিনি একটা কুঠিয়াতে।
তপস্যা করতেন। দেবীগিরিজীর
ধর্মপ্রসঙ্গ মহারাজ তাঁর
ডায়েরিতে।
No comments