Kalpataru Utsav 2023 কল্পতরু উৎসব যে যা চাইবে, তা-ই পাবে কিন্তু - Spirituality Religion

Header Ads

Kalpataru Utsav 2023 কল্পতরু উৎসব যে যা চাইবে, তা-ই পাবে কিন্তু

  Kalpataru Utsav 2023 কল্পতরু উৎসব যে যা চাইবে, তা-ই পাবে 

Kalpataru Utsav 2023

Kalpataru Utsav 2023 


 Kalpataru Utsav 2023 কল্পতরু উৎসব 

ভগবান Kalpataru Utsav কল্পতরু -- তাঁর কাছে যে যা চায় সে তাই পায় । 

যার যেমন ভাব তেমন লাভ । 

দুর্লভ মানুষজন্ম পেয়েও যখন মানুষ তার সদ্ব্যবহার না করে , ভগবানের পাদপদ্মে মন না দিয়ে অসার মায়ামোহের সমুদ্রে ডুবে থেকে মনে করে 'বেশ আছি' , তখন তিনিও বলেন , "বেশ থাক" । 

আবার যখন দুঃখকষ্ট পেয়ে হায় হায় করে ভাবে 'এ জীবনে করলুম কি' ? 

তখন তিনিও বলেন , "করলি কি" ? 

মানুষ কল্পতরুর নীচে বসে আছে , তাঁর কাছে যা চাইবে তাই পাবে , দেবত্ব চাও পাবে , পশুত্ব চাও পশুত্ব পাবে ।

 

Kalpataru Utsav 2023 কল্পতরু উৎসব হল একটি হিন্দু উৎসব।

 রামকৃষ্ণ মঠের সন্ন্যাসীবৃন্দ ও রামকৃষ্ণ মিশনের গৃহস্থরা এই উৎসব পালন করেন। 

বিশ্বব্যাপী বেদান্ত সোসাইটিগুলিতেও এই উৎসব পালিত হয়।

১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি এই উৎসব শুরু হয়েছিল। 

এই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংস তাঁর অনুগামীদের কাছে নিজেকে ঈশ্বরের অবতার বলে ঘোষণা করেছিলেন। 

বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব পালিত হলেও কাশীপুর উদ্যানবাটীতে এই উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়।

 এখানেই রামকৃষ্ণ পরমহংস জীবনের শেষদিনগুলি অতিবাহিত করেছিলেন। 

রামকৃষ্ণ পরমহংসের অনুগামীরা এই উৎসবকে "ঠাকুরের বিশেষ উৎসব"গুলির অন্যতম উৎসব হিসেবে গণ্য করেন।

 

দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতেও এই উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়। 

সারা দেশ থেকে রামকৃষ্ণ-অনুগামী তীর্থযাত্রীরা এই দিন দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে পূজা দিতে আসেন।

উৎস

১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম কল্পতরু উৎসবের দিনটি রামকৃষ্ণ পরমহংস ও তাঁর অনুগামীদের জীবনে ছিল এক অভূতপূর্ব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। 

রামকৃষ্ণ পরমহংস সেই সময় দুরারোগ্য গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থারও যথেষ্ট অবনতি ঘটেছিল। 

উত্তর কলকাতার কাশীপুর অঞ্চলের একটি বাগানবাড়িতে চিকিৎসার সুবিধার জন্য তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল। 

১ জানুয়ারি একটু সুস্থ বোধ করায় তিনি বাগানে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। 

সেখানে তিনি তাঁর অনুগামী নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষকে জিজ্ঞাসা করেন, “তোমার কী মনে হয়, আমি কে?” 

গিরিশচন্দ্র বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে রামকৃষ্ণ পরমহংস “মানবকল্যাণের জন্য মর্ত্যে অবতীর্ণ ঈশ্বরের অবতার।”

 রামকৃষ্ণ পরমহংস বলে, 

“আমি আর কী বলব? তোমাদের চৈতন্য হোক।”

 এরপর তিনি সমাধিস্থ হয়ে তাঁর প্রত্যেক শিষ্যকে স্পর্শ করেন।

 রামকৃষ্ণ-অনুগামীদের মতে, তাঁর স্পর্শে সেদিন প্রত্যেকের অদ্ভুত কিছু আধ্যাত্মিক অনুভূতি হয়েছিল।

 

রামকৃষ্ণ পরমহংসের অন্যতম শিষ্য রামচন্দ্র দত্ত ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, সেই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংস হিন্দু পুরাণে বর্ণিত কল্পতরুতে পরিণত হয়েছিলেন।

 তিনিই এই দিনটিকে কল্পতরু দিবস নাম দিয়েছিলেন, যা পরে কল্পতরু উৎসব নামে পরিণত হয়েছিল।

১৯৫৯ বা ১৯৬০ সালের ১ জানুয়ারি স্বামী গম্ভীরানন্দজী মহারাজ কাশীপুরে কল্পতরু উৎসবে সভাপতিত্ব করেন।

 জনৈক বিখ্যাত বক্তা (হরিপদ ভারতী) তাঁর ভাষণে বলেন যে, শ্রীরামকৃষ্ণএবার গৃহস্থদের জন্য এসেছেন। 

সন্ন্যাসীরাতো  ভগবান লাভের জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছেন, ইত্যাদি। 

স্বামী গম্ভীরানন্দজী মহারাজ সভাপতির ভাষণে বলেন, শ্রীরামকৃষ্ণদেব গৃহস্থদের জন্যও আসেননি, সন্ন্যাসীদের জন্যও আসেননি যাঁরা মনে-প্রাণে ভগবানলাভ করতে চান—তাঁদের জন্যই  তিনি এসেছিলেন।

সূর্য মহারাজ বলেন, 

“একদিন হরি মহারাজকে (স্বামী তুরীয়ানন্দ) বললাম, 

“মহারাজ, ঘরবাড়ি, বাপ-মা সব ছেড়ে মঠে এলাম, কিন্তু ভগবানদর্শন তাে হলাে না। 

হরি মহারাজ উত্তরে বললেন,

 “দেখ, ঠাকুর হলেন কল্পতরু।

 তোমরা সব কল্পতরু বৃক্ষের নিচে এসেছ।

 ঐ বৃক্ষে ফল ঝুলছে এই গাছের তলায় থাকলে একদিন না একদিন ফল পাবে। 

তবে ঐ ফল যদি এখনই চাও তাহলে shake the tree, shake the tree জোরে ঐ গাছে ঝাঁকুনি দাও।

 তাহলে ফল শীঘ্রই পাবে। 

এই ঝাঁকুনিই হচ্ছে তীব্র পুরুষকার।” 

ঈশ্বর কল্পতরু । যে যা চাইবে, তা-ই পাবে । কিন্তু কল্পতরুর কাছে থেকে চাইতে হয় । 

তবে একটি কথা আছে --- তিনি ভাবগ্রাহী । 

যে যা মনে করে সাধনা করে তার সেইরূপ‌ই হয় ।

যেমন ভাব তেমনি লাভ । 

একজন বাজিকর খেলা দেখাচ্ছে রাজার সামনে । 

আর মাঝে মাঝে বলছে রাজা টাকা দেও, কাপড়া দেও । 

এমন সময় তার জিব তালুর মূলের কাছে উল্টে গেল । 

অমনি কুম্ভক হয়ে গেল । 

আর কথা নাই,শব্দ নাই , স্পন্দন নাই । 

তখন সকলে তাকে ইটের কবর তৈয়ার করে সেই ভাবেই পুঁতে রাখলে । 

হাজার বছর পর সেই কবর কে খুঁড়েছিল ।

 তখন লোকে দেখে যে একজন যেন সমাধিস্থ হয়ে বসে আছে ।

 তারা তাকে সাধু মনে করে পূজা করতে লাগল । 

এমন সময় নাড়া চাড়া দিতে দিতে তার জিব তালু থেকে সরে গেল ।

 তখন তার চৈতন্য হল । 

আর সে চিৎকার করে বলতে লাগল, লাগ ভেলকি লাগ !রাজা টাকা দেও, কাপড়া দেও ।

কেউ শ্ৰীমকে জিজ্ঞাসা করেছিল— আপনি শ্রীরামকৃষ্ণের কাছ থেকে কি পেয়েছেন?

 তিনি উত্তর দিয়েছিলেন: “জ্বলন্ত বিশ্বাস”

—এই আমরা পেয়েছিলাম প্রভুর কাছ থেকে।

  •  
  • বিশ্বাস, 
  • ভগবানে বিশ্বাস, 
  • গুরুর প্রতি বিশ্বাস, 

আর যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হল—আত্মবিশ্বাস।

 Kalpataru Utsav 2023

১ জানুয়ারি, ১৮৮৬। 

শ্রীরামকৃষ্ণের সমস্ত অাচরণের ও বক্তব্যের সারাৎসার ছিল তাঁর একটি কথা-‘তোমাদের চৈতন্য হোক’।

যার মধ্যে চৈতন্য যত বেশি প্রকাশিত হবে, তার মধ্যে এই সৎ, সুন্দর গুণগুলি তত বেশি উন্মোচিত হবে।

 যার মধ্যে প্রকাশিত হচ্ছে না, বুঝতে হবে সেখানে এই চৈতন্য অপ্রকাশিত রয়েছে।

কিন্তু প্রকাশ ও অপ্রকাশ এই দু’টিতেই রয়েছে তাৎপর্য। 

অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত অালো।

অালোটা রয়েছে। 

অন্ধকারের অাড়ালে রয়েছে। 

সেই অাড়াল থেকে অালোটা বের করে অানতে হবে।

 সেটাই জীবনের সাধনা। 

প্রত্যেকটা মানুষের ভিতরে থাকা চৈতন্যর সাধনার পথে স্বাভাবিকভাবেই কিছু নির্দেশিকা দরকার। 

দরকার একটি দিশা থাকা।

যখনই পয়লা জানুয়ারি দিনটি অাসে, সমগ্র পৃথিবী এটিকে ইংরেজি নববর্ষ রূপে বরণ করে।

 সেই দিনটিই অামাদের রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ ভাবপ্রবাহে অাসে একটি অন্যতর তাৎপর্য নিয়ে।

 

শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন যে, মানুষকে দেখেছেন দু’টি ধর্মবিশিষ্টরূপে –

  1.  মান।
  2.  হুঁশ।

যে নিজের এই মান-চৈতন্য সম্পর্কে সচেতন, সেই-ই কিন্তু ‘প্রকৃত’ মানুষ।

মানুষ তো শুধু জৈববৃত্তিসম্পন্ন হয়ে বাঁচতে পারে না।

 গণমাধ্যমের দুর্ঘটনাগুলি যখন দেখি, আঁতকে উঠি নিজের ঘরের মধ্যে, ভাবি কেন এমন হচ্ছে, তখন অাসলে অামাদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা ওই চৈতন্যটি অামাদের অাঘাত করে। 

বলতে চায়, রুখে দাঁড়ানো উচিত। 

নেতি-র পথে যাওয়া সংসারের বিপক্ষে মানুষ দাঁড়াতে চায় বলেই সে প্রতিবাদ করে।

এই প্রতিবাদের মূলে আছে তার ভিতরে থাকা ধর্ম।

‘কল্পতরু’ পুরাণের শব্দ।

 স্বামী সারদানন্দজি মহারাজ ‘লীলাপ্রসঙ্গ’-এ ‘কল্পতরু’ শব্দটি ব্যবহার করেননি।

তিনি বলেছিলেন, কল্পতরুর কাছে যা চাওয়া যায়, সে তাই-ই দেয়।

অন্তত পুরাণে এমনই গল্প প্রচলিত অাছে। তাহলে হতেই পারে, কল্পতরুর কাছে খারাপ কিছু চাইলে কল্পতরু তাই-ই দিয়ে দিল।

 কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনে এমনটি ঘটেনি।
শ্রীরামকৃষ্ণ এসেছিলেন, জগতের মানুষের যাবতীয় কল্যাণের মহৌষধি সঙ্গে নিয়ে।

সেই কারণেই তিনি সেইরকম কল্পতরু, যিনি কেবলমাত্র সংসারের কল্যাণের জন্যই তাঁর অমোঘ অাশীর্বচনটি উচ্চারণ করেছিলেন।

এই আশীর্বাণীটি আয়নার মতো মনে হয় আমার।

আমাদের সামনেই থাকবে এবং সেটা দেখে বিচার করে নেওয়ার চেষ্টা চলবে যে, অামার ভিতরের এই চৈতন্য বিকশিত হচ্ছে কি না।

 সেই চৈতন্যের বিকাশেই অামাদের জীবনে ও সমাজে শিবত্ব ও সৌন্দর্য অাসবে।

কল্পতরু দিবসকে তাই সারদানন্দজি মহারাজ বলেছিলেন ‘অাত্মপ্রকাশে অভয়দান’-এর দিন।

 পয়লা জানুয়ারি, শ্রীরামকৃষ্ণ ওই অাশীর্বচনটি উচ্চারণ করে এই বিশ্বাসটিকেই মানুষের জীবনে, অামাদের সংসারের জন্য ফিরিয়ে দিয়েছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনীকার রিচার্ড শিফম্যান বলেছিলেন, অামরা এক অন্ধকারের যুগে এসে দাঁড়িয়েছি, যে যুগে শ্রীরামকৃষ্ণ এসেছেন মানুষকে অন্ধকার থেকে অালোর পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য। 

অালোর দিকে তীর্থযাত্রায় শ্রীরামকৃষ্ণ যেন তাঁর অাশীর্বাদী হাত দিয়ে ডাকছেন।

 অামরা যেন সেই অালোর পথে তীর্থযাত্রা করতে পারি।

সেই তীর্থযাত্রার লক্ষ্য হবে অন্তঃচৈতন্যের জাগরণ ঘটানো।

যে জাগৃতিতে অামাদের ব্যক্তিজীবন থেকে সমষ্টিজীবন – যে কোনও ক্লান্তি, যে কোনও বিপর্যয়ের মুখোমুখি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে।

 যে কোনও বিরুদ্ধতার, যে কোনও দুর্যোগের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারবে।

এই অভয়ই শ্রীরামকৃষ্ণ দিয়েছিলেন সংসারকে। 

তাই ‘কল্পতরু দিবস’ অামাদের সমাজে পথ দেখানোর, দিশা দেখানোর অব্যর্থ অার্শীবাদরূপে গৃহীত হতে পারে।

Read More:

 আলমবাজার মঠ আজ থেকে বেলুড় মঠের শাখা কেন্দ্র রূপে স্থাপিত হল Alambazar Math

No comments

Powered by Blogger.