আমার মামণি বলেছেন যে,আমার বুকের ভেতর বাঁদিকে নাকি ভগবান্ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ ঠাকুর থাকেন। তুমি যখন আমার হার্টটা খুলবে তখন দেখো তো তিনি সত্যি আছেন কি না! যদি থাকেন তবে আমার জ্ঞান ফিরে আসার পর আমাকে বলো- তিনি ঠিক কেমন দেখতে! - Spirituality Religion

Header Ads

আমার মামণি বলেছেন যে,আমার বুকের ভেতর বাঁদিকে নাকি ভগবান্ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ ঠাকুর থাকেন। তুমি যখন আমার হার্টটা খুলবে তখন দেখো তো তিনি সত্যি আছেন কি না! যদি থাকেন তবে আমার জ্ঞান ফিরে আসার পর আমাকে বলো- তিনি ঠিক কেমন দেখতে!

একটি অত্যাশ্চর্য সত্য ঘটনা
====================

ভারতের একজন বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, নাম ডঃ শৈলেশ মেহেতা।থাকেন বরোদায়। তাঁর চিকিৎসা-জীবনের একটি এমন অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন, যা তাঁর জীবনে গভীর রেখাপাত করছে। সেই অভিজ্ঞতার গল্প তাঁর মুখেই শোনা যাক—
“জীবনে আমি বহু ওপেন হার্ট অপারেশন করেছি।সফলতাও পেয়েছি।তবে একটি ছোট্ট মেয়ের ওপেন হার্ট সার্জারী করতে গিয়ে আমার  যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা সারাজীবনের জন্য আমার দৃষ্টিভঙ্গিকে  বদলে দিয়েছে।
এক পিতা মাতা তাঁদের ছয় বছরের অসুস্হ মেয়েকে  নিয়ে আমার কাছে এলেন। জন্মের পর থেকেই সে হার্টের যন্ত্রণায় ভুগছে। তাঁরা বহু ডাক্তারকে দেখিয়েছেন। সবাই যখন আশা ছেড়ে দিলেন তখন  মেয়েকে নিয়ে আমার কাছে এলেন। আমি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বুঝলাম এই মেয়ের আয়ু আর মাত্র কয়েকমাস। আমি খোলাখুলিভাবে তাঁদের সে কথা জানালাম।বললাম, মেয়েটির ওপেন হার্ট সার্জারি করলে বেঁচে থাকার  সম্ভাবনা মাত্র ৩০ শতাংশ। তবে এমনও হতে পারে যে সে হয়ত অপারেশন টেবিলেই মারা যাবে। আর অপারেশন না করলে সে হয়ত আরো তিনমাস বেঁচে থাকবে।যে কোনো অবস্থাতেই তাঁদের মেয়েটিকে তাঁরা হারাতে চলেছেন। আমার কথা শুনে  মেয়েটির বাবা মা অপারেশন করার সম্মতি দিলেন। যেন একবার শেষ চেষ্টাটা করে দেখতে চাইছেন!
নির্ধারিত দিনে অপারেশন টেবিলের সামনে এসে আমি মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলাম,- "কেমন আছ মামণি? ভয় পাচ্ছ না তো?"
মেয়েটি উত্তর দিল, "না ভয় পাচ্ছি না। তবে আমার একটা প্রশ্ন আছে।"
- বল মা, তোমার কি প্রশ্ন?
- ডাক্তার আঙ্কল্, তুমি কি আমার ওপেন হার্ট সার্জারী করবে?
- হ্যাঁ।  কিন্তু তুমি ব্যথা পাবে না।আমি ইঞ্জেকশন দিয়ে তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি।
- ব্যথার কথা নয়, অন্য কথা।
আমার মামণি বলেছেন যে,আমার বুকের ভেতর বাঁদিকে নাকি ভগবান্ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ ঠাকুর থাকেন। তুমি যখন আমার হার্টটা খুলবে তখন দেখো তো তিনি সত্যি আছেন কি না! যদি থাকেন তবে আমার জ্ঞান ফিরে আসার পর আমাকে বলো- তিনি ঠিক কেমন দেখতে!
SRI RAMAKRISHNA

SRI RAMAKRISHNA

— আচ্ছা বলবো, এখন তুমি চোখ বন্ধ কর।
অপারেশন শুরু হল।হার্টের আর্টারিগুলোতে অনেকগুলো ব্লক থাকায় হার্টে কিছুতেই রক্ত চলাচল করছিল না। প্রায় ৪৫ মিনিট অনেক চেষ্টা করে আমি হাল ছেড়ে দিলাম।মেয়েটিকে আর বাঁচাতে পারলাম না! নার্স এবং অন্যান্য জুনিয়র ডাক্তারদের বললাম অক্সিজেন এবং ইত্যাদি ইত্যাদি খুলে নিতে।আমি টেবিলের পাশ থেকে সরে এলাম।
তখনই  হঠাৎ  মেয়েটির সাথে আমার কথাবার্তাগুলো মনে এল।সাথে সাথে আমার অপরাধবোধ হতে লাগল। আমি চোখ বন্ধ করে বললাম, হে ঠাকুর ! তুমি তো সবই জানো !!
আশ্চর্য! তখনই জুনিয়র ডাক্তার বলে উঠল, হার্টে রক্ত চলাচল শুরু হয়েছে। আমি দৌড়ে কাছে গেলাম, তারপর দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে  অপারেশন শুরু করলাম। ব্লকগুলো খুলে গেল।সফলভাবে অপারেশন  শেষ করলাম।
বাইরে বেরিয়ে এসে হাসি মুখে, উৎকণ্ঠা নিয়ে বসে থাকা মা বাবাকে বললাম, আপনাদের মেয়ে  আরো ৬০ বছর বেঁচে থাকবে।
মেয়েটির জ্ঞান ফিরে এলে আমি তাঁর কাছে গেলাম। সে সপ্রশ্ন দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকাল, যেন জানতে চাইল- রামকৃষ্ণ ঠাকুরকে দেখতে পেয়েছি কি না! আমি বুঝতে পারছিলাম না যে তাকে কি বলব! বললাম, ঠাকুর আছেন। তবে তাঁকে তো দেখতে পাইনি। তোমার অপারেশনের সময় তাঁকে ভীষণভাবে অনুভব করেছি।তুমিও তাঁকে দেখবার মতো করে নয়, অনুভবে পাওয়ার চেষ্টা করো, তিনি তোমার মঙ্গল করবেন!”
ডঃ মেহেতা যখন ঘটনাটি বলছিলেন, তাঁর দুচোখ বেয়ে জলের ধারা নামছিল।তিনি তাঁর দীর্ঘ ৪০ বছরের কর্মজীবনে বহু ওপেন হার্ট সার্জারী করেছেন কিন্তু এই একটি ছোট্ট ঘটনা থেকে যে শিক্ষা তিনি পেয়েছেন অর্থাৎ তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখলে সফলতা আসে, তাও একটি ছোট্ট মেয়ের কাছ  থেকে, সেটি তাঁর কাছে সারা জীবনের সঞ্চয় হয়ে রইল। 
এই ঘটনার পর ডঃ মেহেতা তাঁর অপারেশন থিয়েটারের দেওয়ালে তাঁর নিজের বিশ্বাস অনুযায়ী ভগবান্ শ্রীশ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের ছবি লাগিয়ে রেখেছেন। এখনো প্রতিদিন সার্জারির আগে তিনি সে ছবিতে প্রণাম করেন, তারপর কাজ শুরু করেন।
প্রনাম ঠাকুর 
এই ঘটনা অনেকেই আগে পড়ে থাকবে , তবুও যত বার এই ঘটনা পড়া যায় ততই আমাদের জীবনে শ্রীরামকৃষ্ণ কে বুঝতে , তাঁকে ভালোবাসা দিয়ে অনুভব করতে সাহায্য করবে ।

No comments

Powered by Blogger.