দরিদ্র মানুষ যে দুঃখ পাচ্ছে ------- তা আমাদের মুক্তির জন্য।
প্রেমের ঘনীভূত মূর্তি -------------------------
সাধারণ মানুষ ঐ রোগী, পাগল, পাপীদের সেবা করে ভববন্ধন ছেদন করবে, লাভ করবে অনাবিল আনন্দ ও শান্তি।
দেওঘরে স্বামীজী একদিন নিরঞ্জনানন্দজীর সঙ্গে বেড়াতে বেড়িয়েছেন।
সেখানে প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে অতিথি হিসেবে তিনি ছিলেন।
স্বামীজী তখন বেশ অসুস্থ, হাঁপানিতে কষ্ট পাচ্ছেন।
দেখলেন, রাস্তার ধারে এক দুস্থ মানুষ আমাশয়ে আক্রান্ত,
যন্ত্রণায় ছটফট করছে,
পরিধানে তার ছিন্নবস্ত্র,
শীতে ঠকঠক করে কাঁপছে।
মানুষটিকে ঐ অবস্থায় দেখে তাঁর অন্তর কেঁদে উঠল।
তিনি বুঝলেন, ঐ মুহূর্তে মানুষটিকে সেবা করার দরকার,
তার একটা আশ্রয় দরকার।
অথচ তিনিই রয়েছেন পরের বাড়িতে অতিথি হয়ে।
নিজের শারীরিক অসুস্থতা,
প্রিয়নাথবাবু কি মনে করবেন এসব তুচ্ছ হয়ে গেল তাঁর হৃদয়বত্তার কাছে।
নিরঞ্জনানন্দজীর সাহায্যে তিনি রোগীকে প্রিয়নাথবাবুর বাড়ি নিয়ে গেলেন, তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়ে কাপড়জামা পালটে দিলেন।
এরপর তাকে আগুনের সেঁক ও পথ্য দিতে লাগলেন।
মানুষটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠল।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে স্বামী গম্ভীরানন্দ লিখেছেন,
" প্রিয়নাথবাবু ইহাতে বিরক্ত হওয়া তো দূরের কথা, বরং স্বামী বিবেকানন্দ শুধু বক্তৃতা দেন না, মুখে যাহা বলেন, কার্যেও তাহা করেন, অতি মূর্খ, দরিদ্র ইত্যাদির মধ্যে তিনি সত্যই নারায়ণকে দর্শন করিয়া থাকেন ------- এই চাক্ষুষ প্রমাণ পাইয়া আহ্লাদিত হইলেন। "
হৃদয়বান না হলে যথার্থ সেবা করা যায় না।
স্বামীজী বিশ্বাস করতেন, দরিদ্র মানুষ যে দুঃখ পাচ্ছে ------- তা আমাদের মুক্তির জন্য।
সাধারণ মানুষ ঐ রোগী, পাগল,
পাপীদের সেবা করে ভববন্ধন ছেদন করবে,
লাভ করবে অনাবিল আনন্দ ও শান্তি।
No comments