আন্তরিক ভাবে ডাকলে পর তিনি সেই ডাকে সাড়া দিয়ে কৃপা প্রদান করেছেন বারংবার l শ্রীশ্রীমার কৃপা-কাহিনী দেশ-কালাতীত l - Spirituality Religion

Header Ads

আন্তরিক ভাবে ডাকলে পর তিনি সেই ডাকে সাড়া দিয়ে কৃপা প্রদান করেছেন বারংবার l শ্রীশ্রীমার কৃপা-কাহিনী দেশ-কালাতীত l

"কৃপাং কুরু মহাদেবি ..."
*****************************

স্বামী বিবেকানন্দের কৃপাধন্য বারাণসী রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রম l সেবাশ্রমে আছেন শ্রীশ্রীমায়ের সাক্ষাত শিষ্য স্বামী শান্তানন্দ মহারাজ l স্বামী শান্তানন্দ মহারাজকে মা স্বয়ং নিজের হাতে গেরুয়া বস্ত্র দিয়েছিলেন বন্ধু জিতেন মহারাজ এবং গিরিজা মহারাজের সাথে এবং ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন তাঁদের সন্ন্যাস রক্ষা করার জন্য l
চল্লিশ দশকের শেষের দিকে স্বামী শান্তানন্দ মহারাজের টি.বি রোগ ধরা পড়ল l সেই সময়ে টি .বি ছিল ভয়ংকর রোগ ---রোগীর যত না ছিল রোগ ,তার চেয়ে বেশি ছিল সকলের এড়িয়ে যাওয়ার মানসিক চাপ l ফলে মিশন কতৃপক্ষ ইতস্তত করছিলেন মহারাজের সেবক নিযুক্ত করার জন্য l কারণ সেবকের প্রাণ সংশয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে l
ঠিক সেই সময় সলিল নামের এক রোগা-কালোপনা-লম্বা যুবক এগিয়ে এলেন মহারাজের সেবা করার জন্য l কতৃপক্ষ দোমনায় ছিলেন l কিন্তু যুবক-ব্রহ্মচারীর দৃঢ়তা ,অদম্য ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকার করে তাঁকে শান্তানন্দ মহারাজের সেবায় নিযুক্ত করলেন l
Sri Sarada Devi
Sri Sarada Devi

সেই সময়ে কাশী সেবাশ্রমে টি.বি রোগী রাখা হত না l তাই স্বামী বিরজানন্দজী মহারাজের প্রচেষ্টায়
স্বামী শান্তানন্দজী মহারাজকে হিমাচলে একটি টি .বি স্যানেটোরিয়ামে রাখার ব্যবস্থা করা হয় l
শ্রীশ্রীমায়ের সন্তান স্বামী শান্তানন্দ মহারাজের স্বভাব ছিল একদম শিশুর মতন সহজ ও সরল l তিনি জানতেন ও না তাঁর টি .বি হয়েছে l রোগ হয়েছে এইটুকু মাত্র জানতেন তিনি l যাইহোক ট্রেনে চেপে ব্রহ্মচারী সলিলের সাথে মহারাজ হিমাচলের পথে যাত্রা করলেন l
ট্রেনে সলিল মহারাজের সেবা করেন ,তাঁর কাছে থাকেন ,তাঁর এঁটো পরিষ্কার করেন ---কোনো সময়ে একই প্লেট বা গ্লাস থেকে খাবার বা জল খান l শান্তানন্দ মহারাজ ও ব্রহ্মচারী সলিলের সেবায় সন্তুষ্ট l ট্রেন নিদিষ্ট স্টেশনে থামলে পর তাঁরা চললেন স্যানেটোরিয়ামের পথে l গাড়ি স্যানেটোরিয়ামে আসতেই মহারাজ বলে উঠলেন ঃ
"ওঃ , আমার টি .বি হয়েছে !!"
তখনই তিনি জানতে পারলেন তাঁর অসুখের কথা l কয়েকদিন পর থেকেই ব্রহ্মচারী মহারাজ লক্ষ করলেন স্বামী শান্তানন্দ মহারাজ গম্ভীর--কোনো কথা বলছেন না ,একেবারে অন্তর্মুখীন অবস্থা l খাচ্ছেন যন্ত্রবৎ l
ব্রহ্মচারী মহারাজ ভাবলেন ,টি .বি হয়েছে বলে মনখারাপ মহারাজের ? না , আমার সেবা করার কোনো ত্রুটি হয়েছে l এইভাবে তিনদিন কাটানোর পর সলিল মহারাজ দেখলেন স্বামী শান্তানন্দ মহারাজের চোখ-মুখ পুনরায় আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে l ব্রহ্মচারী সলিল স্বামী শান্তানন্দ মহারাজকে জিজ্ঞাসা করলেন ঃ
"কি ব্যাপার ,মহারাজ ! তিনদিন আপনি নির্বাক l আজ আপনার অন্য রূপ l কৃপা করে সব বলুন l "
স্মিতহাস্যে মহারাজ বললেন ঃ
"তুমি আমার সেবক l তুমি দিনরাত আমার সঙ্গে ওঠা-বসা করছ l আমার ঘরেই থাকছ-শুচ্ছ l আমাকে ছুঁয়ে হাত না ধুয়ে সব কিছু করছ l এমন কি খেয়ে যাচ্ছ l তাই মায়ের কাছে তোমার জন্য প্রার্থনা করেছিলাম ঃ
"মা ,সলিল আমার সেবা করছে l ওর যেন টি.বি রোগে না হয় l মা আমাকে তিনদিন কিছু বলেননি l তাই আমি ও রকম ছিলুম l মা আজ আমার প্রার্থণা শুনেছেন l তিনি গতরাত্রে দেখা দিয়েছেন l আমায় অভয় দিয়েছেন--বলেছেন সলিলের কোনোদিন টি .বি হবে না l তাই আজ আমার আনন্দ ধরে না l "
সব শুনে সলিল মহারাজ অবাক l
শ্রীশ্রীমায়ের সন্তান স্বামী শান্তানন্দ মহারাজ কৃপা পেলেন নিজ গুরু শ্রীশ্রীমায়ের l সলিল মহারাজ ও মায়ের কৃপাস্পর্শে ধন্য হয়ে গেলেন l সলিল মহারাজ এখন আমাদের সঙ্ঘের প্রাচীন সন্ন্যাসী l তিনি লক্ষ্ণৌ রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমের রূপকার l দেশে ও বিদেশের বহু জায়গায় বেদান্ত প্রচার করে চলেছেন l তাঁর এ পর্যন্ত টি .বি রোগ হয় নি l
শ্রীশ্রীমায়ের কি কৃপা !!!
আন্তরিক ভাবে ডাকলে পর তিনি সেই ডাকে সাড়া দিয়ে কৃপা প্রদান করেছেন বারংবার l শ্রীশ্রীমার কৃপা-কাহিনী দেশ-কালাতীত l
--স্বামী বিমলাত্মানন্দ
*********************

"জন্মজন্মান্তরের মা "


No comments

Powered by Blogger.