প্রশ্নঃ— মহাপুরুষ মহারাজ বলেছেন : “আমি চাইলে এক্ষুনি আমগাছটাকেও মুক্ত করে দিতে পারি।”
|
Sri
Ramakrishna
|
Sri
Ramakrishna
|
Sri
Ramakrishna
|
প্রশ্নঃ—মহারাজ, আপনি একবার উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন যে, মহাপুরুষ মহারাজ বলেছেন : “আমি চাইলে এক্ষুনি আমগাছটাকেও মুক্ত করে দিতে পারি।”
মহারাজ
:
এভাবটা
ওঁর। ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন।
ও নিয়ে বিচার চলবে
প্রশ্নঃ—আবার
উনিই বলেছেন :
“এই
সংঘে ঠিক কুকুরের মতাে পড়ে
থাকতে হবে। কুকুরের মতাে।”
মহারাজ : কুকুরের মতাে সংঘে পড়ে থাকা মানে, এতে বিশ্বাস হারিও না। এই কথা বলেছেন। পড়ে থাক না চুপ করে।
প্রশ্নঃ -না, এই যে মহারাজ বলেছেন, এই ধারাটা যেন আমাকে টেনে নিয়ে যাবে।
মহারাজ : কুকুরের মতাে সংঘে পড়ে থাকা মানে, এতে বিশ্বাস হারিও না। এই কথা বলেছেন। পড়ে থাক না চুপ করে।
প্রশ্নঃ -না, এই যে মহারাজ বলেছেন, এই ধারাটা যেন আমাকে টেনে নিয়ে যাবে।
মহারাজ :
এতে
বিশ্বাস হারিও না। সংঘ মানে
ঠাকুর। ঠাকুর আমাদের সংঘ।
তাকে আমরা আপনার করে নেব,
কিন্তু
কাজকর্মের মধ্যে সাধারণত তার
থেকে দূরে থাকি। কার্যত
খালি
দুবেলা ভগবানের নাম করলাম,
বসে
বসে খেলাম,
থাকলাম—স্বামীজী
তা তাে বলেননি।
একবার স্বামীজী বলছেন :
“তাকে
ডাকরে নিরন্তর।” স্বামীজীকে
ঠাকুর বলছেন :
“ওকথা
বলিস না।” বলছেন :
“এই
বল—ডাকরে দিনে দুবার।” তা
সংঘ মানে কী—সবটাই সংঘ। তার
ভিতরে ত্যাগ সবারই আছে। কারাে
তীব্র,
কারাে
মাঝামাঝি। অনন্তপ্রকার ভেদ।
কিন্তু সংঘ সকলকেই ভ্ৰাতৃভাবে।
একত্র করে রেখেছে। ভাল থাকবে,
তীব্র
থাকবে,
মন্দ,
মধ্যম,
উত্তম—সব
থাকবে। সংঘ সকলকেই সাহায্য
করবে। সংঘ যূপকাষ্ঠ-আমাদের
সব
অহং
সংঘের
বেদিমূলে
সমর্পণ করতে
হবে। যখন তুমি ব্রম্মজ্ঞানে
প্রতিষ্ঠিত হবে,
সংঘের
প্রয়ােজন তােমার হবে
না।
কিন্তু তার
আগে পর্যন্ত
সংঘ
তােমার অনুকূলে,
অর্থাৎ
তােমাকে সাহায্য করবে। এই
সংঘ সবটা অনুকুল—তা তাে নয়;
বরং
যতটা আনুকুল্য ব্যবহার করা।
যায় ততটাই ভাল। আমরা
বলি যে,
আমরা
অনুকূল জায়গায় বসে ধ্যান
করব। সেরকম জায়গায় হাজারাে
লােক বসে থাকে,
কিন্তু
তাদের
ধ্যান হয় না। সে-ধ্যানের
অনুকূলে সংঘের সাহায্য নিয়ে
যে আন্তরিক চেষ্টা করছি,
তাতেই
উন্নতি হবে।
এই
সংঘে এসেছি বলে সব হয়ে যাবে,
অথচ
এসেও হচ্ছে না—একথা বলাে না।
আমাদের সময় একজন। বৈরাগ্যবান
সাধু ছিলেন। পরে তাঁর পতন
হয়েছিল। কিন্তু তিনি কী
বলছেন?
তিনি
সংঘের দোষ দিচ্ছেন না। বলছেন
:
“এত
অনুকূলতা
পেয়েও
হল না আমার। কী দুর্ভাগ্য!”
বলতেন
:
“মনুষ্যত্বং
মুমুক্ষুত্বং মহাপুরুষ-সংশ্রয়ঃ-মনুষ্যত্ব
হল,
মহাপুরুষসংশ্রয়
হল;
কিন্তু
মুমুক্ষুত্ব হল না। ওটা কাজে
লাগাতে পারলাম না। ওটার যােগ্য
ব্যবহার করতে পারলাম না।” এই
তিনটিকে দরকার। মুমুক্ষুত্ব
শুধু হলে হবে না। মুমুক্ষুত্ব
হওয়ার পথে মূলধন থাকা চাই।
মুমুক্ষার পক্ষে মনুষ্যজীবন
হল বড় মূলধন। আবার শুধু
মহাপুরুষসংশ্রয় হলেই হবে
না। মুমুক্ষুত্ব
না এলে হবে না।
প্রশ্নঃ- মনুষ্যত্ব
ছাড়া কি মুমুক্ষা হতে পারে?
মহারাজ:- হয় কিনা আমরা জানি না। হতে পারে।দেবতাদেরও হয়। কিন্তু দেবতারা ভােগপ্রবণ বলে—বেশি ভােগের মধ্যে থাকে বলে তাঁদের মুমুক্ষুত্ব হয় কচিৎ।
মহারাজ:- হয় কিনা আমরা জানি না। হতে পারে।দেবতাদেরও হয়। কিন্তু দেবতারা ভােগপ্রবণ বলে—বেশি ভােগের মধ্যে থাকে বলে তাঁদের মুমুক্ষুত্ব হয় কচিৎ।
No comments