স্বামী অভেদানন্দ-স্মৃতি _ স্বামী আত্মস্থানন্দ
স্বামী অভেদানন্দ-স্মৃতি
স্বামী আত্মস্থানন্দ
Swami Atmasthanand |
স্বামী অভেদানন্দ মহারাজের সঙ্গে আমার বেশ কয়েক বার সাক্ষাৎ হয়েছে।
একবার পূজনীয় মহারাজ আমাকে মন্ত্রদীক্ষা দেওয়ার ইঙ্গিত দেন।
কিন্তু আমি রাজি হইনি।
একদিন কলকাতা বেদান্ত মঠে স্বামী অভেদানন্দজীকে দর্শন করতে গেলাম।
তাঁর ঘরের মেঝেতে তিন-চার জন বসে ছিলেন।
পূজনীয় মহারাজ চেয়ারে বসে ছিলেন।
আমি যখন ঘরে ঢুকে অন্যদের সঙ্গে বসলাম, পূজনীয় মহারাজ আলমারিতে রাখা একটি কৌটো দেখিয়ে বললেন, “দেখ, ঐ কৌটোটা সােনাতে ভর্তি।
নতুন মন্দির তৈরি হচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই।
উদ্বোধন হবে।
স্বামী অভেদানন্দ-স্মৃতি _ স্বামী আত্মস্থানন্দ |
একদিন এই সােনাভর্তি কৌটো নিয়ে সিংহাসন তৈরি করাতে দেব বলে স্যাকরার।
দোকানের উদ্দেশে যাত্রা করলাম।
যে-মুহুর্তে আমি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে শুরু করলাম, কেউ একজন চিৎকার করে বলে উঠল,
- 'তুমি কী করছ?
- তুমি জান না, আমি ধাতু স্পর্শ করতে পারি না?'
আমি অবাক হয়ে নিচে নামতে লাগলাম।
ভাবলাম, আমার মনের ভুল।
আমি তিন ধাপ নিচে নামলাম, মনে হলাে কেউ খুব ঝাঁকুনি দিল এবং ভৎর্সনা করে বলল, ‘বােকা, আমি বারবার বললাম যে, আমি ধাতু স্পর্শ করতে পারি না, আর তুমি কিনা আমাকে সােনার সিংহাসনে বসাতে চাও! ফিরে যাও।
' এবারই আমি বুঝলাম, শ্রীরামকৃষ্ণদেব স্বয়ং আমাকে আমার কাজের জন্য ভৎর্সনা করছেন।
তখন আমি মহীশূরে লিখলাম একটি চন্দন কাঠের তৈরি সিংহাসন পাঠাতে। সিংহাসনের প্যাকেটটি এখন এসেছে।”
আরেক দিন স্বামী অভেদানন্দজীর আশ্রমে গিয়েছিলাম।
তাঁর সহকারী এবং সেবক মহারাজ বললেন,
“মহারাজ খুব মন খারাপ করে রয়েছেন এবং বারবার কেঁদে কেঁদে বলছেন, 'বেলুড় মঠ ত্যাগ করে এবং একটি নতুন কেন্দ্র—বেদান্ত মঠ খুলে আমি জীবনে একটি মস্ত ভুল করেছি! এটি মস্ত বড় ভুল।তিনি এই ভাবে তিন-চার দিন ছিলেন এবং তার কিছুদিন পরে প্রয়াত হন।”
(ব্রহ্মচারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মহারাজ প্রদত্ত ভাষণের নির্বাচিত অংশ)।
No comments