গার্হস্থ্য আশ্রম ও শ্রীরামকৃষ্ণ
গার্হস্থ্য আশ্রম ও শ্রীরামকৃষ্ণ
Sri
Sarada Devi
|
Swami
Shivananda
|
BANERSHAR
SHIVA LINGA
|
Sri
Sarada Devi
|
Swami
Vivekananda
|
খাবি
বল?
নরেন্দ্র
বললে,
“আমি
খুলির আড়ায় । বসে মুখ বাড়িয়ে
খাব!
" এইটি
হল দ্বিতীয় দলটির 'ভাব।
অর্থাৎ সংসারে দৃঢ়ভাবে পা
দুটি স্থাপন করে গলা বাড়িয়ে
যতটা ঈশ্বরীয় রস আস্বাদন
করা যায়। তাদের আশঙ্কাটি
নরেন্দ্র ব্যক্ত করেছিলেন
ওই কথারই রেশ ধরে :
“কেন
না বেশি দূরে গেলে ডুবে যাব।"
ঈশ্বরীয়
রসাস্বাদনের ভরসায় সংসার।
থেকে পা দুটি তুলে নিলে
অনিশ্চয়তার আশঙ্কাতেই মারা
যাব।
শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন, “বাবা, এ সচ্চিদানন্দ-সাগর—এতে মরণের ভয় নাই, এসাগর অমৃতের সাগর।” কিন্তু সংসারী ভক্তদের তা বিশ্বাস হয় না; আর সে-বিশ্বাসটুকু দেওয়ার জন্যই শ্রীরামকৃষ্ণ তাদের আকর্ষণ করেন।
তৃতীয় দলটি নিশুদ্ধ জন্ম-ৱাৈগ্যবান বালকের দল, যাঁদের সম্বন্ধে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেন, তাদের এটুকু জানলেই হল—তিনি কে, তারা কে, এবং তার সঙ্গে তঁাদের কী সম্পর্ক। এটুকু জানলেই তারা হয়ে উঠবেন অবতারে ভাবাদর্শ প্রচারে যন্ত্র। মাস্টারমশাই সংসারহনে প্রায় দগ্ধ হয়ে পৌঁছেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে।
সাধারণত ছুটির দিনে তিনি আসেন, কারণ তিনি সংসারী, তাকে উপার্জনের কারণে পরের দাসত্ব করতে হয় । যতই সম্মানজনক হােক। ছুটির দিন সংসারী ভক্তদের ভিড়, তাই কথামৃত মূলত সংসারী ভক্তদের অধ্যাত্মদিশা প্রদর্শনের কথামালা। তৃতীয় ধারার গ্যৈবান বালক ভক্তদের উদ্দেশে প্রদত্ত উপদেশ পঞ্জীকৃত হয়নি, শ্রুতি হিসেবেই প্রচলিত, কোথাও বা বিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশিত। কর্ণপক্লিয় বা সহজপাঠের ছাত্রকে যেমন উচ্চতর বিজ্ঞানের সূত্রগুলি বােঝানাে সম্ভব নয় তেমনই অধ্যাত্মপথে সবে পা-রাখা সংসারী ভক্তদের কাছেও উচ্চতর অধ্যাত্ম- বিনলাভের সূত্রগুলি উপস্থাপন নিরর্থক।
শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষকশিরােমণি, তাই কখনও তালার বা বােঝানাের চেষ্টাও করেননি।
শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন :
শ্রীরামকৃষ্ণের গার্হস্থ্য জীবন, তাঁর স্ত্রীগ্রহণ, চাকুরীজীন, তার দক্ষিণেশ্বর বসের প্রতিটি পদক্ষেপ সংসারীদের সেই বিশ্বাসটি দেওয়ার উদ্দেশ্যে, যে-বিশ্বসে আড়া থেকে মুখ না বাড়িয়ে রসসমুদ্রে অবগাহনের ইচ্ছা জাগে।
সেযুগে ধর্ম অর্থে সংসারীদের আচার ধর্ম। ব্রাহ্মধর্ম অসংখ্য দেবদেবী পূজা-অর্চনার ভেদন্দু ঘুচিয়ে এক সগুণ নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনা প্রবর্তিত করলেন বটে কিন্তু তা অনেকটাই খ্রিস্টধর্মের অনুকৃতি এবং নৈতিকতামূলক। জীবনে একটু সংযম, অচিরণে নৈতিকতা, খ্রিস্টানদের মতন সমবেত উপাসনা, মঞ্চ থেকে আচার্যে উপদেশ ও সমবেত বৈদিক মন্ত্রের উচ্চারণের সঙ্গে ঈশ্বরে ভক্তির প্রার্থনা। সংসারের সঙ্গে কোনও বিরােধ নেই, দুইই চলতে পারে। তারা বলতেন, “আমাদের জনক রাজার মত। কিন্তু একথা বললেই ‘ফস করে’ জনক রাজছওয়া যায় না, সে-অবস্থা যে বহু তপস্যার ফল—তা শ্রীরামকৃষ্ণ বললেও তারা বুঝতে পারেন না।
তাই গভীরতাহীন ভাবাবেগপূর্ণ প্রার্থনা : “হে ঈশ্বর, যেন আমরা ভক্তি-নদীতে একেবারে ডুবে যাই-.” এটি শুনে শ্রীরামকৃষ্ণ হেসে বলেছিলেন, “ভক্তিনদীতে যদি একেবারে ডুবে যাবে, তাহলে চিকের ভিতর যারা রয়েছেন, ওঁদের দশা কি হবে?” ত্রৈলােক্যনাথ সান্যাল মহাশয় “কেশবচরিত গ্রন্থে লিখলেন, শ্রীরামকৃষ্ণ কেশল্পে সংস্পর্শে এসে শিখেছেন যে সংসারে থেকেও ধর্ম হয়। এ-প্রসঙ্গ শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে উঠলে তিনি বললেন, “এ-দিকের আনন্দ পেলে
শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন, “বাবা, এ সচ্চিদানন্দ-সাগর—এতে মরণের ভয় নাই, এসাগর অমৃতের সাগর।” কিন্তু সংসারী ভক্তদের তা বিশ্বাস হয় না; আর সে-বিশ্বাসটুকু দেওয়ার জন্যই শ্রীরামকৃষ্ণ তাদের আকর্ষণ করেন।
তৃতীয় দলটি নিশুদ্ধ জন্ম-ৱাৈগ্যবান বালকের দল, যাঁদের সম্বন্ধে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেন, তাদের এটুকু জানলেই হল—তিনি কে, তারা কে, এবং তার সঙ্গে তঁাদের কী সম্পর্ক। এটুকু জানলেই তারা হয়ে উঠবেন অবতারে ভাবাদর্শ প্রচারে যন্ত্র। মাস্টারমশাই সংসারহনে প্রায় দগ্ধ হয়ে পৌঁছেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে।
সাধারণত ছুটির দিনে তিনি আসেন, কারণ তিনি সংসারী, তাকে উপার্জনের কারণে পরের দাসত্ব করতে হয় । যতই সম্মানজনক হােক। ছুটির দিন সংসারী ভক্তদের ভিড়, তাই কথামৃত মূলত সংসারী ভক্তদের অধ্যাত্মদিশা প্রদর্শনের কথামালা। তৃতীয় ধারার গ্যৈবান বালক ভক্তদের উদ্দেশে প্রদত্ত উপদেশ পঞ্জীকৃত হয়নি, শ্রুতি হিসেবেই প্রচলিত, কোথাও বা বিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশিত। কর্ণপক্লিয় বা সহজপাঠের ছাত্রকে যেমন উচ্চতর বিজ্ঞানের সূত্রগুলি বােঝানাে সম্ভব নয় তেমনই অধ্যাত্মপথে সবে পা-রাখা সংসারী ভক্তদের কাছেও উচ্চতর অধ্যাত্ম- বিনলাভের সূত্রগুলি উপস্থাপন নিরর্থক।
শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষকশিরােমণি, তাই কখনও তালার বা বােঝানাের চেষ্টাও করেননি।
শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন :
ন
বুদ্ধিভেদং জনয়েদানাং
কর্মর্সঙ্গিনা।
যােষয়েৎ
সর্বকর্মাণি বিদ্বান্ যুক্তঃ
সমাচর।”
অধ্যাত্মবিজ্ঞনী
সংসারে আসক্ত ব্যক্তিদের
বুদ্ধিবিম ঘটাবেন না,
অর্থাৎ
যা তারা বুঝতে পারে না সেরকম
উপদেশ দেবেন না,
বরং
“আপনি আচরি ধর্ম তাদের সেইরকম
আচরণে প্রবৃত্ত করার চেষ্ট
করবেন। শ্রীরামকৃষ্ণের গার্হস্থ্য জীবন, তাঁর স্ত্রীগ্রহণ, চাকুরীজীন, তার দক্ষিণেশ্বর বসের প্রতিটি পদক্ষেপ সংসারীদের সেই বিশ্বাসটি দেওয়ার উদ্দেশ্যে, যে-বিশ্বসে আড়া থেকে মুখ না বাড়িয়ে রসসমুদ্রে অবগাহনের ইচ্ছা জাগে।
সেযুগে ধর্ম অর্থে সংসারীদের আচার ধর্ম। ব্রাহ্মধর্ম অসংখ্য দেবদেবী পূজা-অর্চনার ভেদন্দু ঘুচিয়ে এক সগুণ নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনা প্রবর্তিত করলেন বটে কিন্তু তা অনেকটাই খ্রিস্টধর্মের অনুকৃতি এবং নৈতিকতামূলক। জীবনে একটু সংযম, অচিরণে নৈতিকতা, খ্রিস্টানদের মতন সমবেত উপাসনা, মঞ্চ থেকে আচার্যে উপদেশ ও সমবেত বৈদিক মন্ত্রের উচ্চারণের সঙ্গে ঈশ্বরে ভক্তির প্রার্থনা। সংসারের সঙ্গে কোনও বিরােধ নেই, দুইই চলতে পারে। তারা বলতেন, “আমাদের জনক রাজার মত। কিন্তু একথা বললেই ‘ফস করে’ জনক রাজছওয়া যায় না, সে-অবস্থা যে বহু তপস্যার ফল—তা শ্রীরামকৃষ্ণ বললেও তারা বুঝতে পারেন না।
তাই গভীরতাহীন ভাবাবেগপূর্ণ প্রার্থনা : “হে ঈশ্বর, যেন আমরা ভক্তি-নদীতে একেবারে ডুবে যাই-.” এটি শুনে শ্রীরামকৃষ্ণ হেসে বলেছিলেন, “ভক্তিনদীতে যদি একেবারে ডুবে যাবে, তাহলে চিকের ভিতর যারা রয়েছেন, ওঁদের দশা কি হবে?” ত্রৈলােক্যনাথ সান্যাল মহাশয় “কেশবচরিত গ্রন্থে লিখলেন, শ্রীরামকৃষ্ণ কেশল্পে সংস্পর্শে এসে শিখেছেন যে সংসারে থেকেও ধর্ম হয়। এ-প্রসঙ্গ শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে উঠলে তিনি বললেন, “এ-দিকের আনন্দ পেলে
No comments