শ্রীরামকৃষ্ণ ও তার শিষ্যবৃন্দের দৃষ্টিতে আদর্শ সন্ন্যাসী - Spirituality Religion

Header Ads

শ্রীরামকৃষ্ণ ও তার শিষ্যবৃন্দের দৃষ্টিতে আদর্শ সন্ন্যাসী

শ্রীরামকৃষ্ণ ও তার শিষ্যবৃন্দের দৃষ্টিতে আদর্শ সন্ন্যাসী


Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna



স্বামী বিজ্ঞানানন্দ

দেখ, তােমরা সন্ন্যাসী হয়েছ। 
কিন্তু সন্ন্যাস জীবন বড় কঠিন। 
বিশেষ করে যারা ঠাকুরের নামে সন্ন্যাসী হয়েছে তাদের জীবন সর্ববিষয়ে আদর্শস্থানীয় হওয়া চাই।
 কায়-মন-বাক্যে কাম-কাঞ্চন ত্যাগ সন্ন্যাস জীবনের একমাত্র আদর্শ। 
নইলে শুধু বিরজা হােম করে গেরুয়া পরে সন্ন্যাসী হলে তাে হবে না ! আত্মজ্ঞান লাভ করার জন্যই তােমাদের জীবন।
 কিন্তু সে আত্মজ্ঞান লাভ সহজ ব্যাপার নয়, কামিনী-কাঞ্চনে এতটুকু আসক্তি থাকলে হবে না। 
          সম্পূর্ণ অনাসক্ত না হলে যত ধ্যানই কর, যত জপই কর, যত কাজকর্ম কর, বা যত পাণ্ডিত্য অর্জনই কর না কেন, কিছুতেই কিছু হবে না। 
ঠাকুর বলতেন - সন্ন্যাসী স্ত্রীলােকের পট পর্যন্ত দেখবে না।
 আর সন্ন্যাসীকে কাঞ্চন কাকবিষ্ঠার ন্যায় ত্যাগ করতে হবে।
 কামিনী আর কাঞ্চন এ দুয়ের মধ্যে এমন নিকট সম্বন্ধ রয়েছে যে, একটি জুটলেই অপরটিও এসে পড়ে।
 তা বলে যে স্ত্রীলােকদের ঘৃণা করতে হবে বা অবজ্ঞার চোখে দেখতে হবে, তা নয়। 
বরং তাদের খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখবে - মন্দিরে যে “মা” আছেন, ঠিক তেমনি মনে করতে হবে তাদের 
তাঁরা মায়ের জাত, তাঁদের দূর থেকে প্রণাম করবে।
 তােমরা যে সন্ন্যাসী ! তাই তাে তােমাদের জীবনের আদর্শ এত মহান ! মেয়েদের সঙ্গে কখনও অধিক মেলামেশা করবে না। 
অবশ্য তােমাদের পাঁচ রকম কাজকর্মের ভিতর থাকতে হয়, তাতে মেয়েদের একেবারে বাদ দেওয়া বড়ই মুস্কিল। 

তবে কি জান
কাজ তাে ঠাকুরেরই, আর সন্ন্যাসীর পক্ষে এই যে উপদেশ তাও দিয়েছেন তিনি।
 এই দুয়ের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য করে নিতে হবে।
 যখন নেহাৎ দরকার হয় তখন একটু আধটু কথাবার্তা বলতে তাে হবেই; তাও কিন্তু সাবধানে।
 কাজকর্মের সম্পর্কে যে মেশা তা আর কতক্ষণই বা ! কিন্তু সাবধান, তার অতিরিক্ত যেন না হয়। 
আমার বলার উদ্দেশ্য এই নয় যে, তােমরা কাজকর্ম বন্ধ করে ঘরের দরজায় খিল দিয়ে সব বসে থাক।
 কাজকর্ম করবে চিত্তশুদ্ধির উপায়জ্ঞানে।
 কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নিজ জীবনাদর্শের দিকে দৃষ্টি স্থির রাখতে হবে।
 নচেৎ বিপদ এত অতর্কিতভাবে এসে পড়বে যে, তখন আর সামলাবার সময় থাকবে না।
 আমার এক একবার এ-ও মনে হয় যে, এসব কাজকর্মের প্রবর্তন করে স্বামীজী মহা অনর্থের সূচনা করেছেন। 
এতে জগতের লােকের খুব উপকার হচ্ছে সন্দেহ নেই; কিন্তু যারা ঐ সব কাজ করছে তাদের জীবন করে দিয়েছেন খুবই বিপদসঙ্কুল।
       তবে এও খুব সত্যি যে, বসে বসে পশ্চিমের সাধুদের মতন কুডেমি করে আর পাঁচ রকম গল্প-গুজব করে সময় নষ্ট করার চাইতে এ সব সেবাদি কর্মে মনকে লিপ্ত রাখা সহস্রগুণে শ্রেয়।
 কিন্তু যারা ঠিক ঠিক সাধন ভজন করতে পারে, সর্বক্ষণ ভগবদ-চিন্তায় বিভাের হয়ে থাকতে পারে, তাদের পক্ষে এসব কাজকর্মের কোনই প্রয়ােজন নেই। 
স্বামীজীর সঙ্গে একদিন এ বিষয়ে আমার অনেক কথাবার্তা হয়েছিল ...।”

স্বামী বিজ্ঞানানন্দের দৃষ্টিতে শ্রীশ্রীমা সারদা

No comments

Powered by Blogger.