প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ - Spirituality Religion

Header Ads

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ


প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ (১৮৯৯-১৯৮৮)


Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna


আমাদের একজন ব্রহ্মচারী তখন অদ্বৈত আশ্রমের ভাণ্ডারি। সে দক্ষিণ ভারতীয় এক ব্রহ্মচারীকে মজা করে ডিম দিয়ে ফ্রেঞ্চ টোস্ট খাইয়ে দিল। অথচ ঐ ব্রহ্মচারী কঠোর নিরামিষাশী। সে বুঝতে পারেনি। যখন সে জানতে। পারল, সে অসুস্থ হয়ে পড়ল এবং স্বামী গম্ভীরানন্দ মহারাজকে জানাল। মহারাজ তখন ভাণ্ডারি ব্রহ্মচারীকে ডেকে বললেন, “এই প্রথম এবং এই শেষ। এরপর যদি তুমি এরূপ ব্যবহার কর, তােমাকে রামকৃষ্ণ মিশন থেকে বিদায় নিতে হবে। ঠাকুর কারাে ভাব নষ্ট করতেন না, জেনে রাখাে।” তিনি রেগে গেলে যে কী কঠোর হতে পারতেন—বলবার নয়। আরেক দিন সন্ধ্যাবেলায় এক ব্রহ্মচারী ও এক সাধু ক্যারাম খেলছিল। তিনি নিচ থেকে সােজা ওপরে উঠে এসে বললেন, “এখন সন্ধ্যাবেলা। জপধ্যান করতে যাও।” এমন দৃপ্তকণ্ঠে বললেন। যে, সবাই ভয় পেল। তার পরদিনই ক্যারাম বাের্ড চলে গেল সরিষা আশ্রমের ছেলেদের জন্য। আরেক দিন কয়েক জন সাধু মিলে একটা বিশেষ সিনেমা
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna


ছেলেদের জন্য। আরেক দিন কয়েক জন সাধু মিলে একটা বিশেষ সিনেমা দেখতে যান। স্বামী গম্ভীরানন্দ মহারাজ ও আমি মাত্র আশ্রমে। রাতে খাওয়ার পর আমাকে বললেন, “ওহে, তুমি যে গেলে না?” আমি বললাম, “আমার ওসব ভাল লাগে না।” তিনি বললেন, “দেখ, সাধুজীবনে ওসব দেখে বেড়ানাে ভাল নয়। বহির্মুখী বৃত্তি এসে পড়ে।” অদ্বৈত আশ্রমের প্রেসিডেন্টকে গরমের ছয় মাস মায়াবতী এবং শীতের ছয় মাস কলকাতায় থাকতে হয়। আমি একবার মায়াবতীতে স্বামী গম্ভীরানন্দ মহারাজের কাছে কাজের ব্যাপারে চিঠি দিই। তিনি ১৫//১৯৬১ তারিখে উত্তরে লেখেন, “দেখ, ছােটবেলায় ‘পারিব না’ বলে একটা কবিতা পড়েছিলাম, তা-ই তােমাকে লিখছি। এটাই তােমার চিঠির উত্তর :


Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna


পারিব না ও-কথাটি বলিও না আর
কেন পারিবে না তাহা ভাব বার বার।।
দশ জনে পারে যাহা তুমিও পারিবে তাহা
পার কি না পার কর যতন আবার,
পারিব না বলে মুখ করিও না ভার। ”

চিঠিখানি ছিল সংক্ষিপ্ত। কিন্তু চিরদিনের জন্য তা মনে গেঁথে গিয়েছে। মায়াবতীতে তাঁর সঙ্গে থাকা আমার হয়ে ওঠেনি। কিন্তু কলকাতায় তাঁকে ঠাকুর-স্বামীজীর ও বেদান্তের গ্রন্থ প্রকাশনের ব্যাপারে অমানুষিক পরিশ্রম করতে দেখেছি। একবার পড়ে বা edit না করে বই প্রেসে ছাপতে পাঠাতেন না। বই শেষ হয়ে আসছে, তা আগে থেকে তাঁকে জানাতে হতাে। এর মধ্যে তিনি নিজের লেখা চালিয়ে যেতেন। ব্রহ্মসূত্র ইংরেজিতে অনুবাদ করতে তাঁর পাঁচ বছর লেগেছিল। তারপর নিজেই একটা portable typewriter-এর সাহায্যে টাইপ করতে শুরু করেন। ম্যানেজার মহারাজ একজন পেশাদার টাইপিস্ট লাগিয়ে ঐ কাজ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেন। স্বামীজীর জন্মশতবার্ষিকীর সময় মন্মথ ভট্টাচার্যকে লেখা স্বামীজীর একটা নতুন চিঠি পাওয়া যায়। তিনি সেটা ইংরেজিতে অনুবাদ করে আমার মারফত মঠে স্বামী মাধবানন্দজীকে দেখাতে পাঠান। তিনি সেটা পেয়ে বলেন, “স্বামী গম্ভীরানন্দ অনুবাদ করেছে, আমাকে কেন আবার দেখতে হবে?” যাহােক, স্বামী মাধবানন্দজী সেটা দেখে স্বামী গম্ভীরানন্দ মহারাজকে ফেরত পাঠান। স্বামীজীর Complete Works-এ যাতে কোনাে ভুল না থাকে তার জন্য প্রাণ দিয়ে খাটতেন। মেরি লুইস বার্কের New discoveries থেকে যেভাবে চয়ন করে স্বামীজীর Complete Works-এ তথ্য সংযােজন করেছেন সেটা তাঁর দারুণ বিচক্ষণতার পরিচয়।।





No comments

Powered by Blogger.