প্রাচীন সাধুদের কথা _কল্পতরু উৎসব স্বামী গম্ভীরানন্দ
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ (১৮৯৯-১৯৮৮)
|
১৯৬১
সালে অদ্বৈত আশ্রম ওয়েলিংটন
লেন থেকে ডিহি এন্টালি রােডে
স্থানান্তরিত হয়।
স্বামী
যােগাত্মানন্দজী নতুন বাড়ি
নির্মাণের কাজ দেখাশােনা
করতেন এবং গম্ভীর মহারাজের
পরামর্শ গ্রহণ করতেন।
আশ্রমের
প্রতিটি কাজে তাঁর উৎসাহের
অন্ত ছিল না।
আমাদের প্রত্যেকের
কাজ এমনভাবে ভাগ করে দেওয়া
হয়েছিল যে কারাে সঙ্গে কোনাে
ভুল বােঝাবুঝির সম্ভাবনা ছিল
না।
১৯৫৯
বা ১৯৬০ সালের ১ জানুয়ারি
গম্ভীর মহারাজ কাশীপুরে
কল্পতরু উৎসবে সভাপতিত্ব
করেন।
আমি তাঁর বক্তৃতা শুনতে
গিয়েছিলাম।
জনৈক বিখ্যাত
বক্তা (হরিপদ
ভারতী)
তাঁর
ভাষণে বলেন যে,
শ্রীরামকৃষ্ণএবার গৃহস্থদের জন্য এসেছেন।
সন্ন্যাসীরা তাে ভগবানলাভের
জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছেন,
ইত্যাদি।
আমার পরিষ্কার মনে আছে,
গম্ভীর
মহারাজ সভাপতির ভাষণে বলেন,
“শ্রীরামকৃষ্ণদেব গৃহস্থদের জন্যও আসেননি,
সন্ন্যাসীদের
জন্যও আসেননি।
যাঁরা মনে-প্রাণে
ভগবানলাভ করতে চান—তাঁদের
জন্যই।
তিনি এসেছিলেন।”
কী
অপূর্ব গুছিয়ে বলবার ক্ষমতা
ছিল তাঁর!
গম্ভীর
মহারাজের কাছ থেকে বক্তৃতার
এই বিষয়টি শিখেছিলাম—যে
topic
ঘােষণা
করা হয়েছে সেটাই বলবে,
এলােমেলাে
অপ্রাসঙ্গিক বিষয় টেনে আনবে
না।
Sri
Ramakrishna
|
গম্ভীর
মহারাজ ছিলেন খুব স্ট্রেট,
বক্তৃতার
যা বিষয় সেই বিষয়েই বলতেন।
এলােমেলাে,
অপ্রাসঙ্গিক
কথা বলতেন না।
আবােল-তাবােল
বলতেন না,
অতিশয়ােক্তি
পছন্দ করতেন না।
একটুও রংচং
লাগিয়ে কথাবার্তা বলা পছন্দ
করতেন না।
একদিন আমাকে একটা
মজার গল্প বললেন,
“শোনো
,
একজন
লােক ছিল—বড় বাড়িয়ে বলত
তার বন্ধুরা।
বলল,
‘তুই
বড় বেশি বাড়িয়ে বলিস।'
লােকটি
বলল,
“যখন
আমি বাড়িয়ে বলব তখন আমাকে
একটা খোঁচা মারিস পেছন থেকে।
গল্প বলার সময় সে বলছে,
বাঘশিকার
করতে গিয়েছিলাম,
বাঘটা
আঠারাে ফুট লম্বা।
বন্ধুরা
দিয়েছে খোঁচা।
লােকটি বলল,
'ইয়ে,
আমাদের
কাছে ফিতে ছিল না,
তবে
পনেরাে ফুট তাে হবেই।
আবার
খোঁচা।
তারপর বলল,
‘পনেরাে
ফুট না হােক,
এই
বারাে ফুট তাে হবেই।'
এমনি
করতে করতে নেমে এসেছে ছয়
ফুটে।
আবার খোঁচা।
শেষে বলল,
“তবে
কি বলতে চাস বাঘটার ল্যাজ ছিল
না?
No comments