প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ
Sri
Ramakrishna
|
গম্ভীর
মহারাজ খুব চাপা প্রকৃতির ও
নিরভিমান লােক ছিলেন। তাঁর
মধ্যে আত্মম্ভরিতা কখনাে
দেখিনি। কত সুন্দর বক্তৃতা
দিতেন,
কত
গল্প রচনা করেছেন,
কিন্তু
কখনাে ওসব বিষয়ে আলােচনা
করতেন না। কেউ ঐ প্রসঙ্গ তুললে
এড়িয়ে যেতেন বা অন্য প্রসঙ্গ
তুলতেন।
তিনি
মঠে যেতেন ট্রামে বা বাসে,
ভাণ্ডারির
কাছ থেকে একটা টাকা। চেয়ে
নিতেন এবং ফিরে এসে বলতেন এত
খরচ করেছি। যখন মায়াবতী যেতেন
তখন ট্যাক্সিতে করে হাওড়া
স্টেশনে পৌঁছে দিতে হতাে।
মঠের trustee
meeting-এ
যখন যেতেন,
পূজনীয়
দয়ানন্দজী ও গহনানন্দজী
তাঁকে অদ্বৈত আশ্রম থেকে তুলে
নিতেন। তাঁর বিশেষ কোনাে ভক্ত
ছিল না। অত্যন্ত সাধারণ
জামাকাপড় ব্যবহার করতেন।
ঝােল-ভাত
খেতেন জিভের ওপর তাঁর অত্যন্ত
সংযম ছিল। ‘জিতং সর্বং জিতে
রসে'—ভাগবতের
এই উক্তি তিনি জীবনে প্রতিফলিত
করেছিলেন। ১৯৬৩ সালে আমি
আশ্রমে অফিসের কাজ করি। হঠাৎ
ভাণ্ডারি ব্রহ্মচারী চলে
যাওয়ায় আমাকে তাঁর কাজ নিতে
হলাে। গম্ভীর মহারাজের জন্য
আলু,
পেঁপে
কাঁচকলা ও দু-টুকরাে
মাছ দিয়ে দুপুরে ও রাতে ঝােল
বেঁধে দিতে হতাে। ওতে তেলমশলা
নামমাত্র থাকত। একদিন আমি
বললাম,
“আপনার
মুখে অরুচি হয় না ?
একটু
তরকারি পরিবর্তন করে দেব?”
তিনি
বললেন,
“না।
Sri
Ramakrishna
|
তুমি
যেমন দিচ্ছ তেমনি দিয়ে যাও।”
তিনি পছন্দ-অপছন্দের
পরপারে দ্বন্দ্বাতীত অবস্থায়
থাকতে চেষ্টা করতেন।
তখন
স্বামীজীর জন্মশতবার্ষিকীর
উৎসব চলছে। পার্ক সার্কাসে
বিরাট প্যান্ডেলে সব অনুষ্ঠান
হতাে। অদ্বৈত আশ্রমে তখন guest
ভর্তি
নিজেদের বিছানা ছেড়ে আমরা
মেঝেতে মাদুর পেতে শুতাম।
রান্নার জন্য একটি মাত্র বামুন
২৫/৩০
জনের রান্না করে উঠতে পারত
না। আমি সকালে ৫টা নাগাদ
রান্নাঘরে গিয়ে ময়দা ঠাসতে
শুরু করতাম ও সঙ্গে সঙ্গে জপ
করতাম। ৬.৩০টায়
ঘণ্টা না পড়লে গম্ভীর মহারাজ
ঠক ঠক করে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে
উঠে রান্নাঘরে উঁকি মেরে
বলতেন,
“May I help you?”
আমার
স্বভাব ছিল যে,
কোনাে
দায়িত্ব নিলে তা ভাল করে শেষ
না করা পর্যন্ত চুপ করে থাকতে
পারি না। তার জন্য অনেকসময়
আমাকে বেশি খাটতে হয়। গম্ভীর
মহারাজ একদিন তা লক্ষ্য করে
বিকালে চা খেতে খেতে বললেন,
“Do you know the last message of Sri Krishna?” আমি
বললাম,
“না।”
তখন তিনি বললেন,
“এই
গল্পটা শােনাে। শ্রীকৃষ্ণ
তাঁর বৃন্দাবন
-লীলা
সাঙ্গ করে কংস-বধ,
শিশুপাল-বধ,
কুরুক্ষেত্র
যুদ্ধে সারথির।
Sri
Ramakrishna
|
Sri
Ramakrishna
|
No comments