প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী বীরেশ্বরানন্দ (১৮৯২-১৯৮৫)
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী বীরেশ্বরানন্দ (১৮৯২-১৯৮৫)
Sri
Ramakrishna
|
১৯৭০
সালের ফেব্রুয়ারি মাসে
বীরেশ্বরানন্দজী লক্ষ্ণৌতে
‘বিবেকানন্দ পলিক্লিনিক’
উদ্বোধন করতে যান। আমরা প্রায়
একশাে ষাট জন সাধু
সমবেত
হয়েছিলাম। স্বামী শ্রীধরানন্দজী
খুব সুন্দর ব্যবস্থা করেছিলেন।
সাধুদের ব্রহ্মাবর্ত,
অযােধ্যা
ও নৈমিষারণ্য দেখার সুযােগ
হয়েছিল। প্রভু মহারাজ গড়গড়াতে
তামাক খেতেন। শ্রীধরানন্দজী
তাঁর জন্য লক্ষৌ-এর
খুব দামি সুগন্ধি তামাক কিনে
আনেন। তিনি তা সেবন করে খুব
খুশি হয়ে শ্রীধরানন্দজীকে
বলেন,
“ওহে,
তুমি
তাে আমাকে তামাক খাওয়ালে,
এখন
বেলুড় মঠে বিকাশ,
দ্বারকা
ও হিতানন্দ তামাক খায়। ওদের
জন্যও তুমি কিছু এই তামাক
ক্রয় করাে।” এতে বােঝা যায়
মহারাজ অন্যান্য সাধুর কথা
কেমন ভাবতেন।
আমি
তখন বেলুড় মঠের ট্রেনিং
সেন্টারে। স্বামীজীর জন্মদিনে
আমার ডিউটি পড়েছিল স্বামীজীর
ঘরে। ভক্তেরা স্বামীজীকে
নিবেদন করবার জন্য নানারকম
দামি সিগারেট আনতেন। আমার
দায়িত্ব ছিল দিনে কয়েক বার।
সিগারেট ধরিয়ে স্বামীজীর
টেবিলের ওপর একটা সিগারেট-ট্রের
ওপর রাখা।
Sri
Ramakrishna
|
সন্ধ্যার
পর স্বামীজীর ডিনার নিবেদন
করবার পর প্রভু মহারাজ স্বামীজীর
ঘরে এলেন। স্বামীজীর পাদুকার
ওপর প্রণাম করে আমাকে বললেন,
“দেখাে
তাে,
স্বামীজীর
আর সিগারেট প্রসাদ আছে কি না?”
আমি
কয়েকটা প্যাকেট তাঁকে দিলাম।
তিনি ওগুলি নিয়ে গেলেন আমি
অনেকসময় তাঁকে গড়গড়া বা
সিগারেট খাওয়ার সময় গভীর
চিন্তামগ্ন হতে দেখেছি।
প্রভু
মহারাজের ভিতর উপচে পড়া
ইমােশন কখনাে দেখিনি,
তবে
সাধুদের প্রতি তাঁর ভালবাসা
তাঁর কথা ও কাজে প্রকাশ পেত।
তিনি সাধুদের প্রতি খুব ক্ষমাশীল
ছিলেন কর্মবিমুখ সাধুদের
তিনি দীর্ঘকাল মঠে রেখে দিতেন
এবং পরে তাঁদের কাজে লাগাতেন।
একবার তিনি আমাকে বলেন,
“দেখ,
এ
সঙ্ঘে বিভিন্ন রকমের সাধু
আছে আমাদের সবাইকে নিয়ে
থাকতে হবে ।
কমলের লোম
বাচতে
গেলে শেষে কমলই থাকবে না।”
Sri
Ramakrishna
|
” তিনি
বলতে চাইছিলেন যে,
কেউ
পারফেক্ট নয় আমরা ঠাকুরের
সঙ্ঘে
পারফেক্ট হওয়ার জন্য এসেছি।
দোষে-গুণে
মানুষ। তিনি সবাইকে সাধুজীবন
যাপন করবার সুযােগ দিতেন।
১৯৬৫
সালের মার্চ মাসে আমি তাঁকে
বললাম,
“মহারাজ,
আমাদের
ট্রেনিং সেন্টারের সেকেন্ড
ইয়ারের কনভােকেশনে আপনাকে
আসতে হবে।” তিনি রাজি হলেন
এবং বললেন,
“তুমি
স্বামী যতীশ্বরানন্দজীকেও
নিমন্ত্রণ করাে প্রিসাইড
(সভাপতিত্ব)
করতে।”
আমি তাঁর কথামতাে যতীশ্বরানন্দজীকে
আমন্ত্রণ জানালে তিনি প্রথমে
রাজি হলেন না। আমি একটু ছেলেমানুষি
করে বললাম,
“Maharaj, how can there be convocation without the Vice-chancellor?
তাঁর
কাছে এক ধমক খেলাম। অবশ্য
তিনি এসেছিলেন এবং সাধুজীবন
সম্বোধে কতকগুলি উপদেশ দিয়েছিলেন
সেসব কথা লিখে রাখলে কত মূল্যবান
তথ্য রক্ষিত হতো
No comments