প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী মাধবানন্দজী - Spirituality Religion

Header Ads

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী মাধবানন্দজী

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী মাধবানন্দজী

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

অদ্বৈত আশ্রমের এই উৎসর্গীকরণ অনুষ্ঠানের সময়ে প্রায় দুই শত সন্ন্যাসী এসেছিলেন। তাঁদের প্রাতরাশ প্রস্তুত করার জন্য আমরা একজন খাদ্যদ্রব্য সরবরাহকারীকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। আমার ওপর ভার পড়েছিল স্বামী মাধবানন্দজী এবং অন্য প্রবীণ মহারাজদের খাবার পরিবেশন করার। বেলুড় মঠে মহারাজের সেবককে আমি পূর্বেই ফোন করেছিলাম এবং তিনি আমাকে মহারাজের প্রাতরাশের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা বলে দিয়েছিলেন। সেইমতাে আমরা ব্রিটানিয়া ক্রিমক্র্যাকার বিস্কুট, সন্দেশ এবং অন্যান্য জিনিস কিনেছিলাম। যখন প্রাতরাশ পরিবেশন করা হলাে, স্বামী মাধবানন্দজী মন্তব্য করেছিলেন, “হায় ভগবান! আমি যেখানেই যাই আমাকে একই খাবার খেতে হয়। ব্যাপারটা কী? এসব ছেলে আমাকে একটু মুখ বদলাতে পর্যন্ত দেবে না।” জীবন্মুক্ত পুরুষের পক্ষে নিয়মের বন্ধনে আবদ্ধ থাকা কষ্টকর, কিন্তু আমরা তাঁর স্বাস্থ্যের দিকটাই ভেবেছিলাম। যাই হােক, আমরা অন্যান্য জিনিসও যা দিয়েছিলাম তিনি তা আনন্দ করে খেলেন।


Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna
অদ্বৈত আশ্রমে যখন প্রথম যােগদান করি তখন আমি প্রুফ দেখার কাজ করতাম। যখনই আমার মনে কোনাে প্রশ্ন জাগত আমি স্বামী গম্ভীরানন্দজীকে জিজ্ঞাসা করতাম। একদিন তিনি আমাকে বললেন, “আমি মায়াবতী যাচ্ছি। স্বামীজীর Complete Works-এর কোথাও যদি তােমার কোনাে সন্দেহ বা প্রশ্ন জাগে, তাহলে স্বামী মাধবানন্দজীকে সে-বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবে।” রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ সাহিত্য সম্বন্ধে স্বামী মাধবানন্দজী ছিলেন বিশেষজ্ঞ। স্বামীজীর জন্মশতবার্ষিকীর সময়ে আমরা স্বামীজীর একটি অপ্রকাশিত চিঠি পেয়েছিলাম। চিঠিটি তিনি মন্মথনাথ ভট্টাচার্যকে বাংলায় লিখেছিলেন। স্বামীজীর Complete Works-এ প্রকাশের জন্য স্বামী গম্ভীরানন্দজী সেটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন এবং স্বামী মাধবানন্দজীর অনুমােদনের জন্য সেটি তাঁর কাছে পাঠিয়েছিলেন। স্বামী মাধবানন্দজী অনুবাদটি ভালভাবে খুঁটিয়ে দেখে প্রকাশের জন্য আবার অদ্বৈত আশ্রমে ফেরত পাঠান। অনেকে ধারণাই করতে পারবেন , কীভাবে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের এসব বিশিষ্ট সন্ন্যাসী নীরবে এবং লােকচক্ষর অন্তরালে স্বামীজীর কাজ করে গিয়েছেন।



Sri Ramakrishna


Sri Ramakrishna





১৯৬৩ সালে বেলুড় মঠে ব্রহ্মচারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আমার যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু স্বামী গম্ভীরানন্দজী আমাকে বললেন যে, স্বামীজীর জন্মশতবার্ষিকীতে জন্য আমার যাওয়া সম্ভবপর হবে না। স্বামীজীর Complete Workc-এর শতবার্ষিকী সংস্করণ প্রকাশের প্রস্তুতি, স্বামীজীর ৭৫টি আলােকচিত্রের মুদ্রণ, কাজ এবং পার্কসার্কাসে একটি বইমেলার আয়ােজন-বিষয়ে আমরা অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলাম। যাই হােক, আমি বেলুড় মঠে গিয়ে স্বামী মাধবানন্দজীকে বলেছিলাম, “পূজনীয় স্বামী গম্ভীরানন্দজী আমাকে বলেছেন এ বছর। [ব্রহ্মচারী] প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আসা স্থগিত রেখে স্বামীজীর কাজ করে যেতো। স্বামী মাধবানন্দজী তৎক্ষণাৎ বললেন, “গম্ভীরানন্দ ঠিক কথাই বলেছে। স্বামীজীর কাজ করাে। যদি তুমি এক বছর দেরিতে ব্রহ্মচর্য ব্রত পাও তাহলে ভেবাে না যে তুমি একজন junior সাধু হয়ে যাবে। সন্ন্যাস এবং ব্রহ্মচর্য ব্রত হলাে আনুষ্ঠানিক ব্যাপার। আসল হলাে ঈশ্বরকে উপলব্ধি করা। তুমি কি জান, কে senior কে junior? যে ঠাকুরের কাছের লােক সেই হলাে senior সঙ্ঘে যে বেশি দিন আছে, সেই senior—তা নয়।”

No comments

Powered by Blogger.