প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী - Spirituality Religion

Header Ads

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী



Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna


১৯৬১ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মঠ ও মিশনের বহু সাধু বেলুড় মঠে আসেন। কারণ, তখন স্বামী মাধবানন্দজী আমেরিকায় ব্রেন সার্জারির জন্য যেতে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। তিনি ছিলেন সঙ্ঘের প্রবাদপ্রতিম সন্ন্যাসী ও শ্রীশ্রীমায়ের শিষ্য স্বামী ভূতেশানন্দজী রাজকোট থেকে এসেছিলেন মাধবানন্দজীকে দেখতে এবং অদ্বৈত আশ্রমে কয়েক দিন ছিলেন। ১৯৬১ সালের প্রারম্ভে অদ্বৈত আশ্রম ৪ ওয়েলিংটন লেন থেকে ৫ ডিহি এন্টালি রােডে স্থানান্তরিত হয়। গম্ভীরানন্দজী একদিন ভূতেশানন্দজীকে রবিবারের ক্লাস নিতে বলেন। সেদিন ভূতেশানন্দজীর গলা ভাল ছিল না। তিনি সকাল থেকে গরম জলে নুন দিয়ে কয়েক বার gurgle করতে থাকেন। তাঁর স্বর সেদিন সত্যিই খুব খারাপ ছিল। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছিলেন বক্তৃতা না দিতে। তিনি বললেন, “ঠাকুরের কাজ দেখবে আমি ঠিক হয়ে যাব।” তিনি সেই ভাঙা গলায় এক ঘণ্টা বক্তৃতা দিলেন। দেহ ভুলে ঠাকুরের কাজ ঘটনাটি তুচ্ছ, তবে শিক্ষণীয়।
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

তারপরেও মহারাজ অদ্বৈত আশ্রমে কয়েক বার এসেছেন। একবার মনে আছে কনখলের মাখন মহারাজ (স্বামী প্রজ্ঞানানন্দজী) ভূতেশানন্দজী একসঙ্গে আমাদের অতিথি হয়েছিলেন। মহারাজকে এক গুজরাটি ভক্ত এক বাক্স গেঞ্জি দেয়। মাখন মহারাজ তা থেকে কয়েকটা গেঞ্জি নিয়ে বলেন, “এই বিজয়, তােমার অনেক ধনি-ভক্ত আছে। এ গেঞ্জিগুলি আমি নিলাম।” মহারাজ বললেন, “দেখুন মাখন মহারাজ, এ গেঞ্জি নেবেন না। আমাদের আশ্রম গরিব। ভিক্ষার দ্বারা চলে।” মাখন মহারাজ বললেন, “আরে, আশ্রম তাে ভিক্ষার দ্বারাই চলে। তাছাড়া আর কীভাবে চলবে?” উভয়েই ছিলেন ব্যয়কুণ্ঠ। আমি দেখলাম দুই প্রাচীন সাধু বালকবৎ গেঞ্জি নিয়ে টানাটানি করছেন। পুষ্প নামে মহারাজের এক গুজরাটি ভক্ত-মহিলা কলকাতায় থাকতেন।

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

মহারাজ তাঁকে ছােটবয়স থেকে জানতেন। একবার তিনি মহারাজকে দেখতে এলে আমরা ঠাট্টা করে বললাম, “আপনি সাধুদর্শনে এসেছেন। গাটিয়া-ফল-মিষ্টি ছাড়া সাধুদর্শন হয়?” তিনি হেসেছিলেন এবং পরদিন প্রচুর গাটিয়া ও ফল-মিষ্টি নিয়ে হাজির হন। মহারাজ আশ্রমে থাকলে আশ্রম বেশ জমজম করত।
মহারাজ যেখানেই যেতেন সেখানেই শাস্ত্রের ক্লাস নিতেন এবং ঠাকুর, মা ও ঠাকুরের সন্তানদের প্রসঙ্গ করতেন। ভগবৎ-প্রসঙ্গ দ্বারা তিনি এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতেন যে, মন স্বভাবতই উধ্বগামী হতাে।


No comments

Powered by Blogger.