প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী
Sri
Ramakrishna
|
১৭
জুন ১৯৬০,
অদ্বৈত
আশ্রম,
কলকাতা।
এদিন
রাতে উত্তরকাশীর বিভিন্ন
সাধু-সম্প্রদায়ের
কথা ও নিজের তপস্যার কথা বললেন,
“কত
রকমের সাধু আছে। ধ্যানী সাধু
আছেন,
আবার
বাবু সাধু ঘড়িহাতে রেডিও
নিয়ে ঘুরছে। পলিটিসিয়ান
সাধু দল পাকাচ্ছে। কৈলাসের
পথে এক নাগা সাধুর আরেক সাধুর
সঙ্গে ঝগড়া হলাে। এবং সে তাকে
ঠেলে জলে ফেলে দিল। জনৈক দরদি
সাধু নিজের কম্বল অপর সাধুকে
দান করল। পাগলা সাধু আছে,
আবার
পণ্ডিত সাধুও আছে।” মহারাজের
স্মৃতি ও পর্যবেক্ষণ শক্তি
ছিল তুলনাহীন।
মহারাজ
প্রতিদিন প্রাতরাশের পর বেলুড়
মঠে যাওয়ার জন্য তৈরি হতেন।
আমি জুতাে লুকিয়ে রাখতাম
যাতে তিনি চলে না যান।
Sri
Ramakrishna
|
লক্ষ্য
করে বলতেন,
“তােমরা
বড় দুষ্টু। আমাকে মঠে যেতে
দাও।” আমি বলতাম,
“কাল
যাবেন। তার পরদিন তাঁর গেঞ্জি
ও কাপড় সাবানজলের বালতিতে
ভিজিয়ে দিয়ে বলতাম,
“আপনার
কাপড়,
গেঞ্জি
ময়লা। কাল যাবেন।” “এই দেখ,
আজও
তােমরা আমাকে যেতে দিলে না।
দেখ তাে,
নির্মল
মহারাজ (স্বামী
মাধবানন্দজী)
কী
মনে করবেন!”
।
অতীতের
সেই ছেড়ে আসা দিনগুলির কথা
যখন মনে পড়ে তখন কতই না আনন্দ
হয়। সেই প্রথম দর্শন থেকে
তাঁর সঙ্গে আমার এত ঘনিষ্ঠতা
হয়েছিল যে,
অপর
কোনাে সাধুর সঙ্গে ঐরূপ হয়নি।
মহারাজ
তখন রাজকোট কেন্দ্রের মােহন্ত।
৭/১০/১৯৬০
তারিখে আমাকে লিখেছিলেন,
“ঠাকুর
আমাদের সমগ্র সংঘকে
এরকম পবিত্র মধুর স্নেহবন্ধনে
আবদ্ধ রাখুন। তা না হলে সংঘ
জীবনের
কোনাে অর্থই নেই।
Sri
Ramakrishna
|
“আমাদের
জীবনের আদর্শ ঠাকুর-স্বামীজী।
তাঁরা যদিও অসীম এবং আমাদের
সঙ্কীর্ণ সীমার বাইরে,
তবু
আমরা যে-পরিমাণে
আমাদের তাঁদের ছাঁচে ঢালতে
পারব সেই পরিমাণে আমাদের সাধনা
সার্থক এবং ধর্মজীবন পূর্ণ
হবে। অপূর্ণ থাকতে নিরবচ্ছিন্ন
আনন্দ কারাে পক্ষে পাওয়া
সম্ভব নয়,
তবে
আদর্শে পৌঁছানাের জন্য আপ্রাণ
চেষ্টা করতে হবে। তাতে আনন্দ
হােক। বা নিরবচ্ছিন্ন দুঃখই
হােক। স্বামীজীর কথা মনে
রেখাে—রামকে পেলাম না বলে কি
শ্যামকে নিয়ে থাকতে হবে?
তবে
আমরা দুর্বল হলেও তাঁদের অনন্ত
শক্তি আমাদের পেছনে আছে।
সুতরাং অভীঃ।”
No comments