প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী
Sri
Ramakrishna
|
১১
জানুয়ারি ১৯৯৬,
বেলুড়
মঠ,
সকাল
৭.৪৫
মিঃ
মহারাজ
পূজনীয় গঙ্গাধর মহারাজের
(স্বামী
অখণ্ডানন্দ)
এক
উক স্মৃতি বললেন।
একদিন
ভূতেশানন্দজী মঠের দক্ষিণ
দিকের ঝাঁপের গেট পার হয়ে
ভিতরে ঢুকলেন।
তাঁর পিছনে এক
পাগল ঝােলা কাঁধে গেট উঁচু
করে ভিতরে ঢুকবার চেষ্টা
করছিল।
গঙ্গাধর মহারাজ মঠবাড়ির
ওপরের বারান্দা থেকে দেখে
ভূতেশানন্দজীকে বললেন,
“তুমি দেখলে না তােমার পিছনে কে আসছে?ও লােকটা পাগল হতে পারে, তুমি ওকে সাহায্য করলে ?”
ভূতেশানন্দজী
বিনীতভাবে বললেন,
“মহারাজ, আমার অন্যায় হয়েছে।”
সাধুজীবনে
নিজের ভুলত্রুটি স্বীকার করে
নিজেকে সংশােধন করা একান্ত
প্রয়ােজন।
একথা মহারাজ আমাদের
বুঝিয়েছিলেন।
মহারাজ—বেলুড়
মঠে শ্রীশ্রীমায়ের দেহ যখন
সৎকার
হলাে,
তখন
কয়েক জন ভক্ত মায়ের অস্থি
সংগ্রহ করছিল।
শরৎ মহারাজ
যখন তা দেখলেন,
তখন
তীব্র চিৎকার করে বললেন,
যারা
মায়ের এই অস্থি নিচ্ছে,
তারা
যদি প্রতিদিন এই অস্থি অতি
শ্রদ্ধার সঙ্গে পূজা না করে,
তাদের
স-ব-না-শ
হবে।
আমি কখনাে তাঁর অত জোর
গলা শুনিনি।
যেসব ভক্ত অস্থি
সংগ্রহ করেছিল,
তারা
ভয়ে তা সমাধিস্থলে রেখে দিল।।
Sri
Ramakrishna
|
১২
জানুয়ারি ১৯৯৬,
বেলুড়
মঠ,
সকাল
৭.৪৫
মিঃ
আমি—কোনাে
পাশ্চাত্যবাসী যদি আপনাকে
বলে,
সে
বেদান্ত জানতে চায়,
আপনি
কোন্ বই তাকে suggest
করবেন?
মহারাজ—স্বামীজীর
বই—বিশেষত ‘জ্ঞানযােগ।
আমি—সাধুর
আচরণ কী?
মহারাজ-প্রকৃত
সাধু অপরকে খুশি করে।
সে তার
আধ্যাত্মিক আনন্দের অংশ সবাইকে
দেবে।
শান্তা মহান্তো নিবসন্তি
সন্তো বসন্তবশ্লোকহিতং চরন্তঃ।
(বিবেকচূড়ামণি,
৩৭)।
প্রকৃত সাধু কেবল ভগবানের
কথাই বলে।
মন নিচে গেলে যত
ঝগড়াঝাঁটি শুরু হয়।
সর্বদা
মনকে উঁচু স্তরে ধরে রাখতে
হয়,
যেখানে
কেবল আনন্দ ও ঐক্য।
শ্ৰীম-কে
কেউ যদি বলত যে ঠাকুরের বিষয়
কিছু বলুন,
তিনি
বলতেন,
‘আমি
শুধু তাঁকেই জানি আর তাঁর কথাই
বলি।
উপনিষদং ভাে ৰূহীতি।
উক্তা ত উপনিষদ্,
ব্রাহ্মীং
বাব ত উপনিষদমৰূমেতি।
'
(কেন
উপনিষদ,
৪/৭)।
আমি—মহারাজ,
আপনার
উপনিষদের প্রিয় শ্লোক কোনটি?
মহারাজ—তুমি
আমাকে মুশকিলে ফেললে।
তারপর
তিনি বৃহদারণ্যক উপনিষদ-এর
‘আত্মানং চেদ্ বিজানীয়াদয়মশ্মীতি
পূরুষঃ/
কিমিচ্ছ
কস্য কামায় শরীরমনুসরেৎ'
[কেউ
যদি পরমাত্মাকে ‘আমি ইনি'
এরূপে
জানেন,
তবে
তিনি কোন বস্তুর
কামনায় (এবং)
কার
প্রয়ােজনে শরীরের দুঃখে
দুঃখী হবেন?]
(৪/৪/১২)
শ্লোকটি
বললেন।
মনে হয়েছিল তিনি তাঁর
নিজের অনুভব থেকে বলছেন।
আমি—আপনি
কিন্তু কথামৃতপ্রসঙ্গ-এ
এবং বিভিন্ন ভাষণে কঠ উপনিষদ
এর এই শ্লোকটি বহুবার উদ্ধৃত
করেছেন—‘যথােদকং শুদ্ধে
শুদ্ধমাসিং তাদৃগেব ভবতি।
এবং মুনেৰ্বিজানত আত্মা ভবতি
গৌতম।'
(২/১/১৫)
Read More
No comments