প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী বােধাত্মানন্দ(ভব মহারাজ) - Spirituality Religion

Header Ads

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী বােধাত্মানন্দ(ভব মহারাজ)

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী বােধাত্মানন্দ(ভব মহারাজ)

sri Ramakrishna
Sri Ramakrishna


১৯৬৫ সালে স্বামী মাধবানন্দজী যখন অসুস্থ, তখন ট্রেনিং সেন্টারের ব্রহ্মচারীদের রাত ১১টা থেকে ভাের ৫টা পর্যন্ত তাঁর দেখাশােনার ভার পড়েছিল। 

তাঁর সেবকদের রাতে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য এই ব্যবস্থা হয়। ভব মহারাজ ঠিক করলেন, একজন ব্রহ্মচারী ১১টা-২টা এবং অপর জন ২টা-৫টা duty করবে।

 তিনি আমাকে প্রথম রাতে থাকবার জন্য নিযুক্ত করেন।

 এ-হেন একজন দুর্লভ সাধুর সেবা করা মহাসৌভাগ্যের কথা। তাঁর ঘরের কোণে মেঝেতে বসে একটা ছােট টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে আমি শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত পাঠ করতাম এবং তাঁর যদি বাথরুমে যাওয়ার প্রয়ােজন হয় তার জন্য অপেক্ষা করতাম।

প্রতি বছরে একজন ব্রহ্মচারী ভব মহারাজের সেবা করত—ঘর পরিষ্কার, কাপড় কাচা, টিফিন ও ব্রেকফাস্ট দেওয়া ইত্যাদি। আমার মনে ছিল—





sri Ramakrishna
Sri Ramakrishna


তদ্বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া। তাই দ্বিতীয় বছরে আমি বললাম 
“মহারাজ, আমাকে এক বছর আপনার সেবা করতে দিন।”

 তিনি বললেন “না, তােমাকে আমার personal service দিতে হবে না।

 তুমি ঘরে বসে শাস্ত্র অধ্যয়ন ও মনন করাে—তাতেই আমার সেবা হবে।”
১৯৬৬-তে ব্রহ্মচর্য ও ১৯৬৯-এ সন্ন্যাসের সময় ভব মহারাজ আমাদের আচার্য ছিলেন।

 ব্রহ্মচর্য ও সন্ন্যাসের মন্ত্রগুলি পরিষ্কার করে বােঝাতেন।

 তারপর হােমকালেও তিনি মন্ত্রগুলি আবৃত্তি করাতেন।

 তখন তাঁর চোখ-মুখ ভাবে বিভাের হয়ে থাকত।

১৯৬৫ সালে convocation-এর সময় ভব মহারাজ আমাকে প্রভু মহারাজ ও স্বামী যতীশ্বরানন্দজীকে নিমন্ত্রণ করতে পাঠান।

 তাঁরা এসেছিলেন এবং সাধুজীবন সম্বন্ধে সুন্দর উপদেশ দিয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালের convocation-এর সময় ভব মহারাজ বলেছিলেন, “বিদ্যা চতুষ্পৎ। 

One fourth comes from the teacher, one fourth comes from the student, 
one fourth comes from the co-students and one fourth comes in the course of time. 
So don't expect more than one fourth from me.”


sri Ramakrishna
Sri Ramakrishna


আমাদের সময়ে ট্রেনিং সেন্টারে বিকালে একটু চা ছাড়া আর কিছ ছিল না।

 সন্ধ্যাবেলায় দারুণ খিদে পেত।

 কেবল জল খেতাম।
 তারপর ১৯৬২ মার্চে শুরু হলাে বমি। 
সবাই ভাবল আমার ulcer হয়েছে। 

একদিন দেখি ভব মহারাজ আমার জন্য কয়েকখানা থিন অ্যারারুট বিস্কুট নিয়ে দেখতে এলেন। 

যাতে আমার কিছু খাবার মেলে। 
আমি তা কোনােদিন ভুলব না।
 পরে আমি একদিন হলিউডে আমার ট্রেনিং সেন্টারের অভিজ্ঞতা বলি। 

খাদ্যাভাব শুনে এক আমেরিকান মহিলা ১২,০০০ ডলার দেন। 

আমি তা প্রভু মহারাজকে ট্রেনিং সেন্টারের ব্রহ্মচারীদের বিকালের জলখাবারের জন্য পাঠাই।

 তিনি আমাকে চিঠিতে লেখেন :
 “তুমি আর ঐজন্য ভেবাে না। এখন ব্রহ্মচারীদের বিকালে মুড়ি, বিস্কুট ইত্যাদির ব্যবস্থা হয়েছে।”

১৯৬৮ সালে দুর্গাপূজার ছুটিতে, ভব মহারাজ ১০/১৫ দিনের জন্য পুরুলিয়াতে বিশ্রামের জন্য গিয়েছিলেন। 

আমিও ৭ দিনের জন্য অদ্বৈত আশ্রম থেকে সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলাম। 
মহারাজের সঙ্গে একসঙ্গে।


sri Ramakrishna
Sri Ramakrishna


বেড়াতাম এবং রাতে খাওয়ার পর নানাবিধ প্রসঙ্গ হতাে। 

একদিন তিনি গিরিশের সম্বন্ধে বলেন—যা তিনি পুরীতে কুমুদবন্ধু সেনের কাছে শুনেছিলেন।

 গিরিশ মদ খেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দুপুররাতে দক্ষিণেশ্বরে যান এবং ঠাকুর দরজা খুলে তাদের সঙ্গে ‘হরিবােল, হরিবােল’ বলে নৃত্য করেন। 

আরেক বার মদ খেয়ে গিরিশ রাতে এক বারবনিতার গৃহে থাকতে গিয়ে এক প্রচণ্ড তাপ পেয়ে বাড়ি ফিরে এলেন।

 তার পরদিন দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে ঠাকুরের কাছে সব বললেন। ঠাকুর বললেন, “ওটা আর হবেকনি, ওটা আর হবেকনি।” এটিই বকলমা মাহাত্ম।

বিজয়ার দিন সন্ধ্যাবেলায় স্বামী চানন্দজী ও আমরা ভব মহারাজকে দুর্গাপূজা সম্বন্ধে বলতে অনুরােধ করলাম।

 তিনি প্রায় এক ঘণ্টা দুর্গার মাহাত্ম্য বললেন।

 আমি ডায়েরিতে কিছু লিখে রেখেছিলাম। 

এখানে ভব মহারাজের লেখা ‘শ্রীশ্রীদুর্গাপূজা’ প্রবন্ধ (উদ্বোধন ও ৫৪ বর্ষ, ৯ম সংখ্যা) থেকে উদ্ধৃত করছি ।


এক্ষণে আমরা মূর্তি-সম্বন্ধে আলােচনা করিব। 

কোনাে কোনাে পণ্ডিত বলেন, দক্ষ-কন্যা সতী পরে শিবগেহিনী দুর্গা হইয়াছিলেন—তা রূপকমাত্র। 

রাজা দক্ষ অত্যন্ত যজ্ঞপ্রিয় ছিলেন। 

যজ্ঞবেদি তাঁহার তনয়াস্বরূপা। 

কালে বেদিস্থ অগ্নি সতীপতি শিবরূপে এবং বেদির দশদিক দুর্গার দশহাত-রূপে কল্পিত হয়েছিল

No comments

Powered by Blogger.