প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী সত্যস্বরূপানন্দ(বিশেষ মহারাজ)১৯০০-১৯৮৭
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী সত্যস্বরূপানন্দ(বিশেষ মহারাজ)১৯০০-১৯৮৭
Sri
Ramakrishna
|
“যাহােক,
ঐকালে
আমি কোয়ালপাড়ায় মায়ের
কাছে সাত-আট
দিন ছিলাম।
মা একদিন বললেন,
'বাবা,
রাধুর
জন্য একটু মাংসের সুপ করতে
পারবে?'
আমি
বললাম,
হ্যাঁ
মা, পারবে।
তবে আমাকে একটু দেখিয়ে দিতে
হবে।
মা বললেন,
‘মাংস
ছােট ছােট টুকরাে করে কেটে
একটু ঘিয়ে ছোঁক দেবে;
তারপর
সামান্য মশলা দিয়ে জল দিয়ে
ফোটাবে।
ঐ সুপ একটা বাটিতে
করে নিয়ে আসবে।
তৃতীয় দিনে
আশ্রম থেকে গরম বাটি হাতে করে
জগদম্বা আশ্রমে যাচ্ছি।
কিন্তু
ঐ গরম সহ্য করতে না পেরে আমার
হাত থেকে বাটিটা পথে পড়ে গেল।
আমি ভয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে স্বামী
কেশবানন্দকে সব বললাম।
তিনি
বললেন,
‘করলে
কী?
করলে
কী?
মা-ঠাকরুন
কী মনে করবেন!
যাক,
তুমি
এখন মায়ের কাছে গিয়ে সব
বলাে।
আমি তাে সাহস পাচ্ছি
না।
তবুও ভয়ে ভয়ে মার কাছে
গিয়ে বললাম,
মা,
গরম
সুপের বাটিটা আমার হাত থেকে
পড়ে গিয়েছে।
মা বললেন,
'ইস!
ধরতে
শেখনি।
ধরতে শেখনি।
সাবধানে
আসতে হয়।
আমি বললাম,
“মা,
যদি
বলেন আবার আমি সুপ তৈরি করে
নিয়ে আসি।
তখন মা বললেন,
“আজ
আর দরকার নেই।
তার পরদিন মা
আশ্রমে খবর পাঠালেন,
‘ঐ
ছেলেটা সুপ তৈরি করুক;
কিন্তু
অপর কেউ যেন নিয়ে আসে।
Sri
Ramakrishna
|
“কোয়ালপাড়া
আশ্রমে সাত-আট
দিন থাকার পর মা আমাকে বলেন,
‘তুমি
মঠে রাখাল ও শরতের কাছে যাও।
তারা যেখানে পাঠায় তুমি
সেখানে থাকবে।
তারপর আমি সােজা
উদ্বোধনে যাই এবং শরৎ মহারাজের
সঙ্গে দেখা করি।
তিনি আমাকে
জিজ্ঞাসা করলেন,
কোত্থেকে
আসছ?”
আমি
বললাম,
আমি
কোয়ালপাড়া,
মায়ের
কাছ থেকে আসছি।
মা আপনার কাছে
পাঠিয়েছেন।
আমি সংসার ত্যাগ
করে এসেছি।
আপনারা যেখানে
পাঠাবেন সেখানে যাব।'
তিনি
আমাকে উদ্বোধনে খেয়ে বিশ্রাম
করতে বললেন।
তারপর বিকালে
বলরাম মন্দিরে রাজা মহারাজের
কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
মা যা
বলেছেন,
আমি
মহারাজকে তা বললাম।
তিনি শুনে
বললেন,
“তুমি
এখন কাশীতে যাও।
তারপর তােমাকে
বৃন্দাবনে বা এলাহাবাদে
পাঠানাে হবে।
মহারাজের সঙ্গে
ঐ মাত্র কথা হয়েছিল।
“মায়ের
সম্বন্ধে দুটি ঘটনা আমি অশােক
মহারাজ ও রাসবিহারী।
মহারাজের
কাছে শুনেছি।
Sri
Ramakrishna
|
“ভুবনেশ্বরে
মন্দির প্রতিষ্ঠা ও গৃহপ্রবেশের
পর রাজা মহারাজ সেখানে ছিলেন।
ঐকালে মৈমনসিং-এর
এক সাব জজ ও তাঁর স্ত্রী কুলগুরুর
কাছে দীক্ষা নেন।
দীক্ষার
পর তাঁদের মনে দারুণ অশান্তি
দেখা দিল।
বন্ধুরা বলল,
‘ভগবানের
নাম করাে,
সব
ঠিক হয়ে যাবে।
'
অশান্তি
কেবল বেড়েই চলল।
তিনি তখন
ছুটি নিয়ে সস্ত্রীক তীর্থ
করতে যান।
কাশী,
বৃন্দাবন
প্রভৃতি স্থানে সাধুদের
জিজ্ঞাসা করায়,
তাঁরা
বলেন,
“ভগবানের
নাম করাে,
তাতেই
শান্তি পাবে।
তারপর তাঁরা
দক্ষিণভারতে রামেশ্বর তীর্থ
করে পুরীতে জগন্নাথদর্শন করে
ভুবনেশ্বরে আসেন।
পাণ্ডা
তাঁদের রামকৃষ্ণ মঠে নিয়ে
আসে এবং তাঁরা মহারাজের
দর্শনপ্রার্থী হন।
তিনি তাঁদের
অপেক্ষা করতে বলেন।
No comments