প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী স্বপ্ৰকাশানন্দ(১৮৯০-১৯৮৩)
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী স্বপ্ৰকাশানন্দ(১৮৯০-১৯৮৩)
Sri
Sarada Devi
|
আছে
সেই প্রকার ধ্যান করিও।”—এই
বলিয়া শ্রীমহারাজ ধ্যানের
একটি ধারা বলিয়া দিয়াছিলেন।
আমার আন্তরিক প্রীতি ভালবাসা
জানিবেন। ইতি
আপনাদের
স্বপ্ৰকাশানন্দ।
কাশী সেবাশ্রম,
১০
নম্বর ওয়ার্ড,
২
অক্টোবর ১৯৭৭,
বিকাল
৪.৩০টা
আমি
স্বামী স্বপ্ৰকাশানন্দের
কথােপকথন টেপ করি। সেই টেপ
থেকে তাঁর স্মৃতিকথা লেখা
হলাে।
রাজা
মহারাজ একদিকে ছিলেন গুরুগম্ভীর
এবং অধ্যাত্মজগতে ডুবে থাকতেন,
আবার
কখনাে কখনাে বালকের মতাে হাসি,
ঠাট্টা
ও তামাশা করতেন। তা শুনে কেউ
না হেসে থাকতে পারত না।
আমি
কখলে join
করি।
আমি ঠিক করেছিলাম যার-তার
কাছ থেকে দীক্ষা নেব না। মহারাজ
খুব কম দীক্ষা দিতেন। আমি
একদিন মহারাজের কাছে গিয়ে
দীক্ষা প্রার্থনা করলাম।
তিনি বললেন—পরে হবে। তারপর
৫ বছর পরে বেলুড় মঠে আমার
দীক্ষা হয় এবং আমি মাদ্রাজ
মঠের কর্মী হয়ে যাই।
Ma
Bhabatarini (Kali)
|
১৯২১
সালে মহারাজ,
মহাপুরুষজী,
রামলালদাদা
মাদ্রাজে আসেন এবং অক্টোবর
মাসে প্রতিমাতে দুর্গাপূজার
ব্যবস্থা করেন। ঐকালে আমি
মহারাজের প্রয়ােজনীয় জিনিস
যথাসম্ভব এনে দিতাম। মহারাজ
মাদ্রাজে স্বামী প্রভবানন্দ,
স্বামী
অশােকানন্দ ও আমাকে সন্ন্যাস-দীক্ষা
দেন।
Swami
Shivananda
|
কখলে
হরি মহারাজের সঙ্গ আমার জীবন
পালটে দিয়েছিল। তিনি
বিবেকচূড়ামণি-র
শ্লোকগুলাে ব্যাখ্যাকালে
এমন তীব্র ত্যাগ-বৈরাগ্যপূর্ণ
বাক্য ব্যবহার করতেন যে,
আমরা
ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হতাম।
একবার ক্লাসে স্বামী প্রজ্ঞানন্দ
ছিলেন। হরি মহারাজ বলতেন,
“কেবল
শুনলে হবে না। নিজ জীবনে
অভ্যাসের দ্বারা অনুভব করাে।”
প্রজ্ঞানন্দজী ঐকথা শুনে ঘরে
গিয়ে। ধ্যান করতে লাগলেন।
হরি মহারাজের ক্লাসের বিশেষত্ব
ছিল যে,
তিনি
শাস্ত্রের মর্মার্থ আমাদের
সামনে তুলে ধরতেন। আমি কখলে
১৯১৩ থেকে
Swami
Vivekananda
|
১৯১৮
সাল পর্যন্ত ছিলাম। আমার
জীবনের যা-কিছু
আধ্যাত্মিক উন্নতি তার মূলে
হরি মহারাজ। আমি হরি মহারাজ
ও রাজা মহারাজের স্মৃতিকথা
লিখেছিলাম,
কিন্তু
সেসব নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
শ্রীশ্রীমাকে
উদ্বোধনে দেখেছি,
কিন্তু
কোনাে কথা হয়নি। শরৎ মহারাজ
বলতেন,
“তােমরা
মাকে এই ব্যাবহারিক জগতে যেমন
ভাবে দেখছ,
তা
মায়ের প্রকৃত স্বরূপ নয়।
মা আমাদের শেখাবার জন্য সব
কর্ম করছেন। তিনি নিজের জন্য
কিছু করছেন না। মা রাধুকে
মানুষ করলেন,
বে
দিলেন,
আর
সেই রাধু মায়ের ওপর কত অত্যাচার
করেছে। শেষে মা রাধুর মায়া
কেটে দিয়ে বলেন—আমার কাছে
আর আসিস না।”
মহাপুরুষ
মহারাজের সঙ্গ বেলুড় মঠে
বেশি পেয়েছি। আমি মঠের ঠাকুর
ভাঁড়ারে কাজ করতাম। মন্দির
থেকে প্রসাদ নামলে আমি প্রথমে
মহাপুরুষজীর কাছে নিয়ে যেতাম।
একদিন আমি ঠাকুরের প্রসাদি
ফলমিষ্টি নিয়ে মহাপুরুষজীর
ঘরে ঢুকেছি,
তখন
শুনতে পেলাম মহাপুরুষ মহারাজ
বলছেন,
“রাজা,
ঠাকুরকে
এখনাে দেখতে পাই। তাঁকে যদি
দেখতে না পেতাম তাহলে আমার
পক্ষে জীবনধারণ কষ্টকর হতাে।”
ভক্তেরা
মহাপুরুষজীর জন্য নানাবিধ
জিনিস নিয়ে আসত। তিনি আমাকে
বলেছিলেন,
“ভক্তদের
সব জিনিস প্রথমে খানিকটা তুলে
নিয়ে ঠাকুরকে দেবে। এ-ব্যাপারে
আমাকে আর কোনাে জিজ্ঞাসা করতে
হবে না।”
No comments