প্রাচীন সাধুদের কথা
প্রাচীন সাধুদের কথা
Sri
Ramakrishna
|
মহারাজ
বললেন,
“আমরা
তখন মঠে আছি। হরিপ্রসন্ন
মহারাজ মাঝে মাঝে এলাহাবাদ
থেকে মঠে আসতেন স্বামীজীর
মন্দিরের construction
supervise করবার
জন্য। তিনি খুব গম্ভীর ছিলেন।
মহারাজ তাঁকে গুপ্ত ব্ৰহ্মজ্ঞানী
বলতেন। আমি তখন মঠের অফিসে
কাজ করতাম এবং সময় পেলে বিজ্ঞান
মহারাজের সেবা করতাম। আমি
তাঁর খাবার নিয়ে যেতাম। তিনি
খুব খেতে পারতেন।
“স্বামীজীর
মন্দির আস্তে আস্তে হয়েছে।
টাকা ছিল না। যখন টাকা জোগাড়
হতাে তখন বিজ্ঞান মহারাজকে
খবর দেওয়া হতাে। তিনি বেশ
কয়েক বার এলাহাবাদ থেকে
এসেছেন। স্বামীজীর মন্দিরের
সামনে চেয়ারে বসে কাজ দেখতেন
আর একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকতেন।
Sri
Ramakrishna
|
“আমার
মনে আছে—একদিন বিজ্ঞান মহারাজকে
ব্রেকফাস্ট দিচ্ছি। রাজা
মহারাজ আমাকে বললেন,
‘ওকে
কী দিচ্ছিস?
ও
খেতে ভালবাসে। আমার ঘরে যা
সেখানে meatsafe
(আলমারি)
থেকে
সন্দেশ ও অন্যসব মিষ্টি,
ফল
এনে ওকে দে। আমি তা-ই
করলাম। তখন মঠের খুব গরিব
অবস্থা। সকালে শুধু মুড়ি বা
একটু পাঁউরুটি আর চা। রাতে
একটা তরকারি,
রুটি
আর একটু দুধ।
“অভেদানন্দজী
যখন আমেরিকা থেকে মঠে আসেন
তখন পরেশ মহারাজ (অমৃতেশ্বরানন্দ)
তাঁর
সেবক ছিলেন। দীর্ঘকাল আমেরিকাতে
থাকার জন্য মঠের ঐরকম খাবারে
তাঁর খুব অসুবিধা হতে লাগল।
কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে
খেতেন এবং adjust
করে
নিলেন।
“একদিন
মঠের পূর্ব বারান্দায় আমরা
মহারাজের সামনে বসে আছি।
হরিপ্রসন্ন মহারাজও ছিলেন।
সুধীর মহারাজ এসে মহারাজকে
বললেন,
‘আমি
দু-জনকে
রেঙ্গুনে যেতে বললাম। কিন্তু
তারা যেতে চায় না। আপনি যদি
একটু বলে দেন তাহলে যাবে।
মহারাজ বললেন,
‘সঙ্ঘের
কাজ ঠাকুরের কাজ। তােমরা এসেছ
ঠাকুরের কাজ করবার জন্য। ঠিক
ঠিক সাধনভজন না করলে নিষ্কাম
কর্ম করতে পারবে না। ঠাকুরের
কাজ
Sri
Ramakrishna
|
কামনাবাসনা
ও অহঙ্কারকে দাবিয়ে রাখে।
বারাে আনা মন ঠাকুরের ওপর রেখে
চার আনা মন দিয়ে যদি কাজ
করাে—তাতেই যথেষ্ট হবে।
ঠিকমতাে সাধনভজন করলে কর্মে
প্রবৃত্তি হবে এবং বােধ হবে
ঠাকুরের কাজ করছি। এখন সাধুরা
সকালে এক ঘণ্টা,
সন্ধ্যায়
এক ঘণ্টা বসে। মহারাজ কিন্তু
সাধুদের আরাে বেশি সময় সাধনভজন
করতে বলতেন।
“মহাপুরুষ
মহারাজ সন্ধ্যার সময় মঠের
আমগাছতলায় বসে থাকতেন এবং
নজর রাখতেন সাধুরা সন্ধ্যায়
ঠাকুরঘরে জপধ্যান করতে যাচ্ছে
কি না।
“রাজা
মহারাজের কাছে দীক্ষা চাইলাম।
তিনি আমাকে এক বছর গায়ত্রী
মন্ত্র জপ করতে বললেন এবং
মালাও দিলেন। তারপর বললেন,
“আমি
ভুবনেশ্বর থেকে ফিরে এসে তােকে
দীক্ষা দেব। তারপর মঠে ফিরে
তিনি আমাকে বললেন,
‘তুই
হরিপ্রসন্নের সেবা করছিস,
ওর
কাছ থেকে দীক্ষা নে। আমি বললাম,
না
মহারাজ। আপনার কাছ থেকে দীক্ষা
চাই। তখন তিনি বললেন,
‘তুই
তা হলে পেসনের কাছ থেকে
recommendation
নিয়ে
আয়।'
তিনি
আবার আমাকে মহারাজের কাছে
পাঠিয়ে দিলেন। মহারাজ দীক্ষার
ব্যাপারে খুব ঘােরাতেন।
Sri
Ramakrishna
|
“আমাকে
দীক্ষার পরে বলেছিলেন,
“দেখ,
বেশি
উপদেশ পালন করতে হবে না। সত্য
ও ব্রহ্মচর্য—এই দুটি পালন
করলেই যথেষ্ট হবে।।
“পেতাপুরী
নামে একটা ছেলে এসেছিল। মহারাজ
তাকে দীক্ষা দেন ও স্নেহ করতেন।
তার খুব তপস্যা করবার ইচ্ছা
ছিল। আমি তিন মাস ভুবনেশ্বরে
ছিলাম মহারাজের শরীর ত্যাগের
পর। সেখানে তখন স্বামী আত্মানন্দ
ও স্বামী অচলানন্দ ছিলেন।
পেতাপুরী আশ্রমে খেয়ে বাইরে
এক মন্দিরে গিয়ে তপস্যা করত।
শেষে সে হেঁটে কাশী চলে যায়।
বেশি তপস্যা করতে গিয়ে তার
মাথা খারাপ হয়ে যায়। কাশী
আশ্রমে এসে সে উৎপাত শুরু করে
দেয়। সে হাতে একটা লাঠি নিয়ে
আসত। যাহােক,
সাধুরা
তাকে শান্ত করার চেষ্টা করত।
সে বলত,
“এরা
গান গায়—মা,
আমায়
দে মা পাগল করে। এখন আমি পাগল
হয়েছি,
এরা
এখন আমাকে মারতে আসে। জোর করে
ধ্যানজপ করলে অনেকের মাথা
খারাপ হয়ে যায়।
“মহাপুরুষজীর
খুব স্নেহ ও ভালবাসা পেয়েছি।
একদিন বিকালে আমি
No comments