প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী অপূর্বানন্দ - Spirituality Religion

Header Ads

প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী অপূর্বানন্দ

প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী অপূর্বানন্দ (১৯০০-১৯৯০)

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

একদিন লাটু মহারাজ ভক্তদের বলেন
কাল সকালে আমি বিশ্বনাথ।দর্শন করতে যাব।তােমরা পূজার জন্য ফুল বেলপাতা নিয়ে আসবে।”
 পরের দিন ভক্তেরা ফুল
বেলপাতা প্রভৃতি নিয়ে হাজির।
 তিনি তাদের সঙ্গে রাস্তায় বের হলেন। 
বড় রাস্তায় এসে হঠাৎ তাঁর কী খেয়াল হলাে এবং বললেন,
 “চলাে, আগে মার কাছে যাই।”
 ছােট শিশুর মতাে মা, মা’ করতে লাগলেন। 

লক্ষ্মী নিবাসের ওপরতলায় মায়ের ঘরের সামনে এসে লাটু মহারাজ কেমন যেন হয়ে গেলেন।

 কাঁপতে কাঁপতে মার পাদপদ্মে পুস্পাঞ্জলি দিয়ে অশ্রু বিসর্জন করতে লাগলেন।

 সে-সময় মা লাটু মহারাজের মাথায় হাত বােলাতে লাগলেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী বিভূতিবাবু লিখেছেন
এই দৃশ্যটি অতীব মনােরম। সেদিন মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তবে বিশ্বনাথের মন্দিরে গমন করেছিলেন। লাটু মহারাজ তাঁর মাতৃভক্তি ইচ্ছাপূর্বক গােপন করে রাখতেন।”
স্বামী অপূর্বানন্দ বহু বৎসর ধরে কাশী অদ্বৈত আশ্রমের অধ্যক্ষ ছিলেন।

 তিনি মায়ের এই মূল্যবান ঘটনাটি আমাকে টেপে বলেন এবং তাঁর জননী শ্ৰীসারদাদেবী গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন।




Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna
তিনি শেষবারের মতাে অদ্বৈত আশ্রমে এসেছিলেন কলকাতা যাওয়ার দু-তিন দিন পূর্বে—বেলা দশটা নাগাদ।

 পূর্ব ব্যবস্থামতাে স্বামী শান্তানন্দ মহারাজ সেদিন শ্রীমায়ের সঙ্গে ছিলেন।

 এসেই মা সােজা ঠাকুরঘরে যান এবং দরজা বন্ধ করে দেন।

 পরে জানা যায়
তিনি ঐদিন বস্ত্রাঞ্চলে ঢেকে নিজের একটি ছােট বাঁধানাে ছবি এনেছিলেন।

 ঢুকেই আগে ঠাকুর প্রণাম করেন এবং ঠাকুরঘরের পূর্বদিকের দেওয়ালে যে খালি কুলুঙ্গিটি ছিল
তাতে নিজের ছবিটি রেখে—কাপড়ের গাঁট খুলে যে সামান্য ফুল-বিল্বপত্র এনেছিলেন তা দিয়ে নিজের ছবি পূজা করলেন এবং একটু পরেই ঠাকুরঘর থেকে বেরিয়ে এসে চন্দ্র মহারাজকে ডেকে বললেন,
বাবা চন্দ্র, কুলুঙ্গির ছবিটিতেও রােজ দুটি ফুল দিয়াে।”

 চন্দ্র মহারাজ শ্রীমাকে প্রণাম করে তাঁর আদেশ শিরােধার্য করে নিলেন।

 এদিকে মা এসেছেন খবর পেয়ে আর সব সাধু তাঁকে প্রণাম করলে তিনি সকলকে আশীর্বাদ করে লক্ষ্মী নিবাসে ফিরে গেলেন।




Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

শ্রীমা চলে গেলে চন্দ্র মহারাজ ঠাকুরঘরে গিয়ে দেখলেন যে, মা কুলুঙ্গিটিতে নিজের ছবি পূজা করে রেখে গিয়েছেন।

 তা দেখে 
" মহাপুরুষ মহারাজকে সব বললেন। তিনিও ঠাকুরঘরে এসে দেখলেন। দেওয়ালের খালি কুলুঙ্গিতে মায়ের ছবি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুর ও মাকে প্রণাম করে সেবাশ্রমে গিয়ে মহারাজকে সব কথা বলাতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে গম্ভীর হয়ে বললেন, “তারকদা, লক্ষণ বড় সুবিধার নয়। মনে হচ্ছে মা সরে পড়বার আয়ােজন করছেন।”

হরি মহারাজও সেবাশ্রমেই ছিলেন। 

মহাপুরুষজী তখনই হরি মহারাজকে সেসব কথা জানালেন।

 তা শুনে তিনি গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বললেন

মহামায়ার ইচ্ছাই পূর্ণ হবে। সেই থেকে কাশী অদ্বৈত আশ্রমে শ্রীমায়ের পটপূজা চলে আসছে। 

কাশী অদ্বৈত আশ্রমে শ্রীমায়ের পটপূজার কথা মহাপুরুষ মহারাজের কাছে শােনা।

 তিনি ১৯২৮ সালে প্রসঙ্গক্রমে কেদারবাবাকে বলেছিলেন।

 পরে আমরা যােগীন মহারাজ
শান্তানন্দ মহারাজ প্রমুখের কাছেও তা শুনেছিলাম।
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna



স্বামী অপূর্বানন্দ দীর্ঘকাল মহাপুরুষ মহারাজের সেবক ছিলেন। 
তাঁর রচিত মহাপুরুষ শিবানন্দ
শিবানন্দ বাণী
শিবানন্দ পত্ৰসংগ্রহ
স্বামী শিবানন্দ স্মৃতিসংগ্রহ,
সৎপ্রসঙ্গে স্বামী বিজ্ঞানানন্দ প্রভৃতি গ্রন্থ অতুলনীয়। 
১৯৯০ সালে। 
যখন কাশীতে যাই তখন অপূর্বানন্দ মহারাজকে দেখলাম সেবাশ্রমের হাসপাতালে শুয়ে আছেন। 
সেই বছরেই ১১ অক্টোবর তিনি দেহত্যাগ করেন।


No comments

Powered by Blogger.