প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী অপূর্বানন্দ (১৯০০-১৯৯০)
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী অপূর্বানন্দ (১৯০০-১৯৯০)
Sri
Ramakrishna
|
স্বামী অপূর্বানন্দ (১৯০০-১৯৯০)
১৯৫৯
সালে দুর্গাপূজার আগে আমি
কাশী অদ্বৈত আশ্রমে কয়েক
দিন ছিলাম।
স্বামী অপূর্বানন্দ
তখন ঐ আশ্রমের অধ্যক্ষ।
ছাত্রাবস্থায় আমি তাঁর
সম্পাদিত শিবানন্দ বাণী (দুই
খণ্ড)
পড়ে
মুগ্ধ হয়েছিলাম।
তিনি রােজ
সকালে ঠাকুরের ভােগের তরকারি
কাটতেন বারান্দায় বসে,
আর
সন্ধ্যাকালে আরতির গান গাইতেন।
তিনি ছিলেন শ্রীশ্রীমায়ের
শিষ্য এবং মহাপুরুষ মহারাজের
সেবক।
তিনি ঠাকুরের সন্তানদের
বহু স্মৃতিকথা সংগ্রহ করে
প্রকাশ করেছেন।
তিনি বহু
গ্রন্থের লেখক।
মহারাজ
আমাকে বিশেষ স্নেহ করতেন।
আমেরিকা থেকে আমি যতবার কাশী
গিয়েছি,
ততবারই
তিনি আরতির পর আমাকে ভক্তদের
কিছু বলতে অনুরােধ করতেন।
২৮/৮/১৯৮২,
কাশী
অদ্বৈত আশ্রম
Sri
Ramakrishna
|
২৮/৮/১৯৮২,
কাশী
অদ্বৈত আশ্রম
আমি
দীক্ষার ব্যাপারে তাঁকে
জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলেন,
“ঠাকুর
মাকে চারটি সিদ্ধ মন্ত্র দেন।
সেগুলি traditionally
চলে
আসছে।
বিরজানন্দজী সেগুলি
মায়ের কাছ থেকে পান এবং লিখে
রাখেন।
“মা দীক্ষার সময় অনেককে ইষ্টদর্শন করিয়ে দিয়েছেন—“
ঐ দেখাে
তােমার ইষ্ট।'“
মা
নিজেকে গুরু বলে দাবি করতেন
না।
বলতেন,
“ঠাকুরই
শুরু।
“মায়ের দীক্ষায় কোনাে
formality
ছিল
না।
“মহাপুরুষজী
ঠাকুরকে স্থূলভাবে দর্শন
করতেন।
মঠে দু-দিন
দর্শন হয়নি—
(১)
বেলুড়
মঠে যেদিন গােয়ালে আগুন লাগে,
আর
(২)
একদিন
উঠোনে চোরকাঁটা থাকায়।
“মহাপুরুষ
মহারাজ একদিন আমার কাঁধে ভর
দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে
Sri
Ramakrishna
|
পূর্বের
বারান্দায় দাঁড়িয়ে বলেন,
এ
দেহ মুক্ত।
যে একে দেখবে সেই
মুক্ত হয়ে যাবে।”
স্বামী
অপূর্বানন্দের পূর্বাশ্রম
ছিল পূর্ববঙ্গের নােয়াখালি
জেলায়।
তিনি ১৯১৮ সালে বেলুড়
মঠে আসেন এবং মহাপুরুষ মহারাজকে
দর্শন করেন।
তারপর বলরাম
মন্দিরে রাজা মহারাজ ও স্বামী
তুরীয়ানন্দকে দর্শন করেন।
এবং উদ্বোধনে স্বামী সারদানন্দ
ও শ্রীশ্রীমাকে দর্শন করেন।
১৯১৯ সালে তিনি সঙ্ঘে যােগদান
করেন ও বাঁকুড়ায় দুর্ভিক্ষ
সেবাকার্যে যান।
সেখান থেকে
তিনি জয়রামবাটীতে গিয়ে
শ্রীশ্রীমায়ের কাছে দীক্ষালাভ
করেন।
তাঁর মাতৃস্মৃতি তিনি
১৯৮৬ সালের ৩ অক্টোবর বিশদভাবে
বলে আমি টেপ করি।
তাঁর মাতৃস্মৃতি
শতরূপে সারদা ও শ্রীশ্রীমায়ের
পদপ্র (প্রথম
খণ্ড)
গ্রন্থে
বেরিয়ে গিয়েছে।
সেজন্য
এখানে আর পুনরুল্লেখ করলাম
না।
তবে কয়েকটি বিশেষ ঘটনা
এখানে উল্লেখ করছি।
(স্বামী
অচলানন্দ)
guide হয়ে
মাকে সব দেখান।
মায়ের খুঁড়িয়ে
খুঁড়িয়ে হাঁটতে অসুবিধা
হবে ভেবে রাজা মহারাজ ঐরূপ
ব্যবস্থা করেন।
মা সব দেখে ও
শুনে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন,
“এখানে
ঠাকুর নিজে বিরাজ করছেন,
আর
মা-লক্ষ্মী
পূর্ণ হয়ে আছেন।
তারপর লক্ষ্মী
নিকেতনে ফিরে গিয়ে মা দশ
টাকার একটি নােট চারুবাবুর
(পরে
স্বামী শুভানন্দ)
কাছে
পাঠিয়ে দেন।
শ্রীমায়ের
দেওয়া সেই নােটটি এখনাে
সেবাশ্রমের অফিসে যত্নে
সুরক্ষিত আছে।
১৯১২
সালে মা যখন কাশীতে ছিলেন তখন
সেখানে রাজা মহারাজ,
মহাপুরুষ
মহারাজ ও হরি মহারাজ ছিলেন।
বিজ্ঞান মহারাজ এলাহাবাদ
থেকে দেখা করতে এসেছিলেন।
লাটু মহারাজও তখন কাশীতে
ছিলেন,
তবে
তিনি আশ্রমে থাকতেন না।
প্রথমে
তিনি কিছু দিন কাশী অদ্বৈত
আশ্রমে ছিলেন।
তাঁর পক্ষে
কোনাে routine
মেনে
চলা সম্ভব ছিল না।
তাঁর সাধনভজন
কোনাে নির্দিষ্ট সময় বা
নিয়মের দ্বারা চালিত হতাে
না।
তাই তিনি বাইরে ভাড়াটিয়া
বাড়িতে থাকতেন।
কয়েক জন
ভক্ত তাঁর সেবা করত।
তিনি
ছিলেন তপস্বী।
বেলুড় মঠেও
তিনি থাকতে পারেননি।
যাই হােক,
কাশীতে
ভক্তেরা তাঁকে যত্ন করে খাওয়াত
ও কখনাে কখনো তিনি সৎপ্রসঙ্গ
করতেন।
No comments