মানুষকে আঘাত করলে ঠাকুর - মা ব্যাথাপান তার দুটি দৃষ্টান্ত
মানুষকে আঘাত করলে ঠাকুর - মা - স্বামীজী কী রকম মনে ব্যাথা পান তার দুটি দৃষ্টান্ত দিচ্ছি।
মানুষকে আঘাত করলে ঠাকুর - মা - স্বামীজী কী রকম মনে ব্যাথা পান তার দুটি দৃষ্টান্ত দিচ্ছি।
১) বীরেশ্বরানন্দজীর কাছে দীক্ষা প্রাপ্ত এক ভক্ত
মহিলা ভক্ত হলেও বাড়ির কাজের
মহিলাটির সঙ্গে বড় দুর্ব্যবহার
করতেন।
একদিন
রাগের মাথায় তাকে পদাঘাত
পর্যন্ত করে বসেন।
মহিলাটি
অত্যন্ত আঘাত পান--
শরীরের
চেয়ে মনে অনেক বেশি।
তবুও
তিনি সেই বাড়িতে থেকেই গৃহকর্ম
করে যান।
এর কিছুদিন পরে পায়ের
প্রবল যন্ত্রণায় ভক্ত --
মহিলাটি
অসুস্থ হয়ে পড়েন।
নানা রকম
চিকিৎসা করেও কোনো ফল হল না।
এতই
যন্ত্রণা,
রাতে
প্রায় জেগেই কাটাতে হয়।
একদিন সারারাত জেগে থেকে শেষ
রাতের দিকে যখন একটু চোখ লেগেছে,
তখন
শ্রীশ্রী মা স্বপ্নে এসে
উপস্থিত।
মা তাঁকে বলছেন :
তোমার
এ যন্ত্রণা কোনো ডাক্তার
সারাতে পারবে না।
তোমার মনে
আছে বেশ কয়েক বছর আগে ওকে
তুমি লাথি মেরেছিলে ?
তাই
তোমার এই ব্যাথা।
মহিলা স্বপ্নে
কাঁদতে কাঁদতে বলেন:
ক্ষমা
করো,
মা
,
ক্ষমা
করো।
মা রাগত ভাবে বলেন:
" আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে কী হবে? ওর কাছে ক্ষমা চাও।ও ক্ষমা করলে সারবে।"
মায়ের
কথামতো তিনি কাজের মহিলাটির
কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন ।
তিনিও
তাঁর কষ্ট অনুশোচনা দেখে ক্ষমা
করেছিলেন।
তার ব্যথা সেরে
গিয়েছিল।
২) আরেকটি
ঘটনা বলেছিলেন আমার সন্ন্যাসী
বন্ধু স্বামী জগন্নাথানন্দজী
মহারাজ।
যে
আশ্রমে তিনি ছিলেন,
সেখানকার
নাট মন্দির ধোওয়া-
মোছা
করতেন একটি বেতনভোগী দীর্ঘদিনের
কর্মী।
কাজে -
কর্মে
সে sincere,
কিন্তু
পরনের ধুতি --
গেঞ্জিটি
অত্যন্ত ময়লা পরত।
মাঝে
মাঝে মহারাজ তাকে নতুন ধুতি
-
গেঞ্জি
দিয়ে বলতেন,
মন্দিরে
যখন কাজ করবে তখন পরিষ্কার
ধুতি গেঞ্জি পরে আসবে।
সে দু
-
এক
দিন কথা শুনত,
তারপর
নতুন ধুতি -
গেঞ্জিটিকে
আর ময়লা না করে ,পুরনো
ময়লা ধুতি গেঞ্জিটি পরেই
আবার কাজ করত ।
আমার
বন্ধু মহারাজটি এক দিন রেগে
গিয়ে তাঁকে অত্যন্ত বকেন।
বকার সময় কী কী বলেছেন তাঁর
ঠিক মনে ছিল না।
তবে নিশ্চয়ই
তিনি এই কথাগুলি বলেছিলেন:
" তোমাকে দেখলে ঘেন্না হয়, তোমার চেহারা দেখলে পাপ হয়।"
রাত্রিবেলা
স্বামীজী স্বপ্নে এসে হাজির।
বড় বড় চোখ রাগে আরও বড় হয়ে
গেছে। স্বামীজী
বলছেন:
" কী বলেছ তুমি ওকে? তুমি বলেছ, ওকে দেখলে পাপ হয়, ঘৃণা হয়? তুমি জানো না ওরা আমার লোক?"
পরের
দিন সকাল হতেই আমার বন্ধু ওই
কর্মীটিকে মিষ্ট কথা বলে তুষ্ট
করেছিলেন এবং স্বামীজীর কাছে
বার বার ক্ষমা প্রার্থনা
করেছিলেন।
স্বামী
বলভদ্রানন্দজী মহারাজ
বর্তমানে :- সহ
সাধারণ সম্পাদক,
রামকৃষ্ণ
মঠ ও মিশন, বেলুড় মঠ
তথ্য
সূত্র:
সমাজ
শিক্ষা অক্টোবর,২০১৬,
রামকৃষ্ণ
মিশন আশ্রম,
নরেন্দ্রপুর।
No comments