রামলাল চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিকথায় শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
রামলাল চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিকথায় শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ
তখন তিনি কেবল মাছের ঝোল কি শুক্ত দিয়ে ভাত খেতেন।
একদিন আমি ও হৃদয়দাদা ঠাকুরের শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ ঘরে ( অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর যে ঘরে শুতেন ) শুয়ে আছি, অর্ধেক রাতে উঠে দেখি,
ঠাকুর দিগম্বর হয় তরকারি ( কুটনো ) কুটছেন।
মশলা, চাল, ইত্যাদি সব জোগাড় করে রেখে দিচ্ছেন।
হৃদয়দাদা এই সব দেখে ঠাকুরকে বলে উঠলেন----
"তুমি তো বেশ, ঘুম নেই, ওসব কাজ কি সকালে হয় না ?
আমরা তো রয়েছি, সকালে করে দেব আখুন,
তুমি এখন শোওগে।
আর তোমার এ সব কাজ দেখে হাসি পাচ্ছে, ঠিক একটা লোকের মতো অল্প সল্প জিনিস জোগাড় করে রাখছ।
যা চাল নিয়েছ তা দেখছি খুবই কম,
তুমি যা তরকারি কুটেছ----এ সব বোধ হয় একটা লোকেরই পেট ভরা হবে না, তা তোমার কেমন করে হবে ?
তুমি আচ্ছা কিপ্পন যা হোগ,
জ্বালালে বাবা।"
ঠাকুর এই সব শুনে বললেন---
"দেখ, ঘুম ভেঙে গিছিল তাই প্রথমে বসেছিলুম, তারপর ভাবলুম বসে বসে আর কি করব,
বরং ওসব কাজ করে রাখি তাই--যারা আমার পেটের আটকোল জানে না,
তারা ওসব জিনিস বেশি বেশি করে করবে, হয়তো কিছু অপচয়ও করবে।
আর আমি ওসব কাজ করছিলুম সাধে ?
দেখ না,
সব খাবার সময় দেখি ( অর্থাৎ কালীবাড়ির কর্মচারীরা যখন খেতেন ) পাতে কত ভাত তরকারী ফেলে দেয়।"
"আহা ! এই ভাতেরই জন্যই তো তুই কুলীন বামুনের ছেলে হয়ে কোথা শিউড় আর কোথা দক্ষিণেশ্বরে এসে দুটো ভাত ও পয়সার জন্য এদের এখানে ( অর্থাৎ রাসমণির কালীবাড়িতে ) চাকরি করতে এসেছিস।"
রামলাল চট্টোপাধ্যায়
।। কথামৃত মন্দির ।।
‘মানুষের ইচ্ছা ও ভগবানের ইচ্ছা, কিরূপে জানা যায়?
-------------------------------------------------------------
জয় শঙ্খগদাধর, নীলকলেবর পীতপটাম্বর দেহি পদম্।
জয় চন্দনচচিত কুন্ডলমন্ডিত কৌস্ত্তভলাঞ্ছিত দেহি পদম্।।
জয় পঙ্কজলোচন ভ্রুরূ-সুশোভন পাপবিমোচন দেহি পদম্।
জয় বেণু-নিনাদক রাসবিহারক বঙ্কিমসুন্দর দেহি পদম।।
No comments