প্রশ্ন : এই যে ঘুমিয়ে পড়া, এটাকেই কি যােগে ‘লয়’ বলা হয়?
|
Sri
Ramakrishna
|
Sri
Ramakrishna
|
Sri
Ramakrishna
|
প্রশ্ন
:
এই
যে ঘুমিয়ে পড়া,
এটাকেই
কি যােগে ‘লয়’ বলা হয়?
মহারাজ
:হ্যাঁ,
যােগের
বিঘ্নগুলাের মধ্যে একটি হল
‘লয়’। মাণ্ডুক্যকারিকায় আছে
“লয়ে
সম্বােধয়েচ্চিত্তং বিক্ষিপ্তং
শময়েৎ পুনঃ।।
সকষায়ং
বিজানীয়াৎ সমপ্রাপ্তং ন
চালয়েৎ। ” (৩৪৪)
লয়ের
আসল অর্থ হল—সাধক ধ্যান করতে
করতে হঠাৎ তার মনের সামনে
থেকে ধ্যেয় বস্তু সরে যায়,
মন
জেগে থাকে কিন্তু ধ্যেয় বস্তু
থাকে
না। তখন সাধককে আবার সম্বুদ্ধ
মনের সামনে ধ্যেয় বস্তুকে
আনার
চেষ্টা করতে হয়। আর আমাদের
মতাে সাধারণদের ক্ষেত্রে লয়
মানে
ঘুম। মন ঘুমিয়ে পড়ে। তাকে
জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করতে
হয়। এরপর বিক্ষেপ—এটা সকলেরই
হয়। সকলেই জানে। ধ্যেয় বিষয়
ছেড়ে মন অন্য বিষয়ের চিন্তা
করে। তখন মনকে পুনরায় ধ্যেয়
বস্তুতে নিবিষ্ট করতে চেষ্টা
করতে হয়। কষায়’ মানে রঞ্জিত
হওয়া। মন ভােগ-বাসনা
বা
বিষয়-বাসনার
দ্বারা রঞ্জিত থাকলে সেই
বিষয়ের দিকেই আকৃষ্ট হয়।
বিষয়ের
প্রতি মন যখন আকৃষ্ট হয়,
মন
যেন সে-ব্যাপারে
সজাগ থাকে।
বলছেন—“সকষায়ং বিজানীয়াৎ। আরেকটি বিঘ্ন আছে। সেটা ‘রসাস্বাদন’।
সাধক একটু অগ্রসর হয়ে সাধনের বিন্দুমাত্র আনন্দ পেয়ে সেখানেই আনন্দ আস্বাদ করতে লেগে যায়। কিন্তু মনকে শাসন করে বােঝাতে হবে যে, আমার উদ্দেশ্য আরাে অনেক দূর।
যেমন, ঠাকুরের কাঠুরিয়ার আরাে এগিয়ে যাওয়ার গল্প। সমপ্রাপ্ত হলে মন আর বিচলিত হবে না। অর্থাৎ যে উন্নত অবস্থায় মন উঠেছে, তাকে সেখানে ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। তবে আমাদের হতাশার কিছু নেই। আমরা যেটুকু চেষ্টা বা সৎ প্রচেষ্টা করি না কেন, তা যতই সামান্য হােক, বৃথা যায় না। তা জমা থাকে।
আদর্শের দিকে, উদ্দেশ্যের দিকে যদি একটি ছােট্ট পা-ও ফেলে থাকি, ততটুকু দূরত্ব তাে কমল। ততটুকু তাে জমা হল। যদিও একথা ঠিক যে, মনে তীব্র ব্যাকুলতা না আসা পর্যন্ত আমরা। যা-ই করি না কেন, কোন কিছুই কিছু নয়। তা বলে কি চেষ্টা ছেড়ে দিতে হবে? না, যতক্ষণ না এরকম ব্যাকুলতা হচ্ছে ততক্ষণ চেষ্টা করে যেতে হবে। আমাদের এতটুকু চেষ্টাও বৃথা যায় না, বৃথা যাবে না। জমা থাকবে।
ভবিষ্যতে যখন জীবনে ঘাত-প্রতিঘাত আসবে, তখন সেই ক্ষুদ্র অথচ সৎ চেষ্টাটুকু আমাদের বাঁচাবে। যত ছােট চেষ্টাই হােক না কেন, কোন সৎ চেষ্টাই ভুলতে নেই। সেটুকু স্মরণ করলেও দুর্যোগে বিপদে। মনে বল আসে। নবানুরাগের বৈরাগ্য, চেষ্টা ইত্যাদি ভবিষ্যৎ জীবনে স্মরণ করতে হয়। তখন মনে হয়—আহা! কিরকমই না মনের অবস্থা ছিল। কত টান—কত বৈরাগ্য!
বলছেন—“সকষায়ং বিজানীয়াৎ। আরেকটি বিঘ্ন আছে। সেটা ‘রসাস্বাদন’।
সাধক একটু অগ্রসর হয়ে সাধনের বিন্দুমাত্র আনন্দ পেয়ে সেখানেই আনন্দ আস্বাদ করতে লেগে যায়। কিন্তু মনকে শাসন করে বােঝাতে হবে যে, আমার উদ্দেশ্য আরাে অনেক দূর।
যেমন, ঠাকুরের কাঠুরিয়ার আরাে এগিয়ে যাওয়ার গল্প। সমপ্রাপ্ত হলে মন আর বিচলিত হবে না। অর্থাৎ যে উন্নত অবস্থায় মন উঠেছে, তাকে সেখানে ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। তবে আমাদের হতাশার কিছু নেই। আমরা যেটুকু চেষ্টা বা সৎ প্রচেষ্টা করি না কেন, তা যতই সামান্য হােক, বৃথা যায় না। তা জমা থাকে।
আদর্শের দিকে, উদ্দেশ্যের দিকে যদি একটি ছােট্ট পা-ও ফেলে থাকি, ততটুকু দূরত্ব তাে কমল। ততটুকু তাে জমা হল। যদিও একথা ঠিক যে, মনে তীব্র ব্যাকুলতা না আসা পর্যন্ত আমরা। যা-ই করি না কেন, কোন কিছুই কিছু নয়। তা বলে কি চেষ্টা ছেড়ে দিতে হবে? না, যতক্ষণ না এরকম ব্যাকুলতা হচ্ছে ততক্ষণ চেষ্টা করে যেতে হবে। আমাদের এতটুকু চেষ্টাও বৃথা যায় না, বৃথা যাবে না। জমা থাকবে।
ভবিষ্যতে যখন জীবনে ঘাত-প্রতিঘাত আসবে, তখন সেই ক্ষুদ্র অথচ সৎ চেষ্টাটুকু আমাদের বাঁচাবে। যত ছােট চেষ্টাই হােক না কেন, কোন সৎ চেষ্টাই ভুলতে নেই। সেটুকু স্মরণ করলেও দুর্যোগে বিপদে। মনে বল আসে। নবানুরাগের বৈরাগ্য, চেষ্টা ইত্যাদি ভবিষ্যৎ জীবনে স্মরণ করতে হয়। তখন মনে হয়—আহা! কিরকমই না মনের অবস্থা ছিল। কত টান—কত বৈরাগ্য!
No comments