প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ - Spirituality Religion

Header Ads

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ

Sri Ramakrishna


একদিন হলিউড থেকে ৬৫ মাইল দূরে গম্ভীর মহারাজকে Trabuco নিয়ে যাই সেখানে তিনি দু-এক দিন ছিলেন। তিনি Laguna Beach-Blue Pacific দেখবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। স্বামী কৃষ্ণানন্দ, গম্ভীর মহারাজ, ধ্রুব ও আমি একসঙ্গে যাই। Beach-এ তখন সূর্য প্রায় অস্ত যাচ্ছে অপূর্ব দৃশ্য। তিনি গাড়ি থেকে নেমে প্রশান্ত মহাসাগর স্পর্শ করতে চাইলেন। হঠাৎ একটা ঢেউ এসে তাঁর পা ভিজিয়ে দিল। একজন আমেরিকান তাঁর গেরুয়া পােশাক দেখে বলল, “Welcome to California!” আমি বললাম, “মহারাজ, Pacific Ocean took the dust of your feet.” স্বামী কৃষ্ণানন্দের গাড়িতে বাড়তি মােজা ছিল তাঁর ভিজে মােজা পালটানাে হলাে। আমি কয়েকটা ছবি তুলেছিলাম এবং তা তাঁকে মঠে পাঠিয়েছিলাম। তিনি উত্তরে লিখেছিলেন, "The setting sun with setting Gambhirananda-বেশ হয়েছে"
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

১৯৭৭ সালে হলিউড থেকে যখন প্রথমবার মঠে যাই, গম্ভীর মহারাজ তখন জেনারেল সেক্রেটারি। তাঁর সঙ্গে বিকালে বেড়াতাম। মহারাজের সঙ্গে আমি খুব free ছিলাম। আমি একদিন বললাম, “মহারাজ, পাশ্চাত্যে আমাদের তিন ‘প’-যুক্ত সাধু চাই।” “কীরকম?” “পবিত্র, প্রেমিক ও পণ্ডিত।” স্বামী আত্মস্থানন্দজী আমাকে ঠাট্টা করে বললেন, “তুমি Monks Quarters-এ ঘুরে দেখে এসাে—ক-জন পাও।” সেপ্টেম্বর মাসের একদিন বেড়াতে বেড়াতে কথাপ্রসঙ্গে আমি বললাম, “মহারাজ, স্বামীজী বলেছেন, বড় গাছের ছায়া ছােট গাছগুলােকে বাড়তে দেয় না। ছােটদের স্থান করবার
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

জন্য আমাকে যেতেই হবে।” তিনি বললেন, “দেখ, স্বামীজী মহাপুরুষ ছিলেন তিনিই আমাদের আদর্শ।” তার পরদিন মঠে গঙ্গেশানন্দজীর কাছে শুনলাম যে, গম্ভীর মহারাজ জেনারেল সেক্রেটারির পদ থেকে resign করেছেন এবং বলেছেন যে তাঁর চোখের দৃষ্টি ভাল না থাকার দরুন তিনি ঐ গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে চান না। কাঁকুড়গাছি থেকে ভূতেশানন্দজী ও অন্যান্য প্রাচীন ট্রাস্টির অনুরােধে তাঁর term শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কাজ চালিয়ে যান। ১৯৭৭-এর শেষের দিকে তিনি তিন মাসের ছুটি নিয়ে লক্ষ্ণৌ যান এবং স্বামী বন্দনানন্দজী তাঁর কাজ পরিচালনা করতে থাকেন। তারপর তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।
Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna



১৯৮২ সালে যখন সেন্ট লুইস থেকে মঠে যাই, তিনি তখন মন্দিতে পিছনের বাড়িতে থাকতেন। একদিন আমি বললাম, “মহারাজ, আপনার শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তমালিকা গ্রন্থদ্বয়ের পরিবর্ধন হওয়া দরকার; কারণ এখন আরাে নূতন তথ্য পাওয়া গিয়েছে।” তিনি বললেন, “কে আর করবে! আমি এখন চোখে ভাল দেখি না।” তা সত্ত্বেও তিনি literary work চালিয়ে গিয়েছেন। রােজ সেবকদের মাধ্যমে তিনি যুগনায়ক বিবেকানন্দ-এর সংশােধন করেছেন এবং গীতা ও ছান্দোগ্য উপনিষদ-এর শাঙ্করভাষ্যের ইংরেজি অনুবাদ করেছেন। আমি পরামর্শ দিলাম, গীতা-manuscript ত্রিচুরের স্বামী গভীরানন্দের কাছে পাঠাতে, কারণ তিনি অদ্বৈত আশ্রমে proof reader ছিলেন এবং মহারাজের Eight Upanishads-এর press copy দেখেছেন। তিনি আমার suggestion অনুমােদন করলেন।
 একদিন কথাপ্রসঙ্গে বললেন, “আমি যখন জেনারেল সেক্রেটারি ছিলাম, আমার একটা refrigerator ছিল—তাতে ফল, মিষ্টি রাখতাম। কিন্তু এ বাড়িতে আসার সময় তা সঙ্গে আনিনি। ভক্তেরা মিষ্টি আনে, কিন্তু তা গরমে খারাপ হয়ে যায়।” আমি বললাম, “মহারাজ, আমি আপনাকে একটা refrigerator present করব।” “তুমি টাকা পাবে কোথায়?” “আপনাকে তা ভাবতে হবে না। আমার কাছে টাকা আছে। ভক্তেরা আমার তীর্থযাত্রার জন্য যথেষ্ট টাকা দিয়েছে।” তিনি মনে-প্রাণে অপরিগ্রহী ছিলেন। অবশেষে আমি নাছােড়বান্দা হওয়াতে স্বীকৃত হলেন। তারপর বললেন, “তুমি মঠ অফিসে নির্লিপ্তানন্দের কাছে যাও এবং তার সঙ্গে এ-ব্যাপারে কথা বলাে। তিনি সংঘের protocol মেনে চলতেন। আমি তক্ষুনি মঠ অফিসে নির্লিপ্তানন্দকে বলে মহারাজের জন্য refrigerator কেনার ব্যবস্থা করি। মহারাজ খুব খুশি হলেন।


এদেশের ভক্তেরা ক্রিসমাসের সময় সাধুদের জামা, সােয়েটার ও টাকা প্রভৃতি gift দেয়। আমি ঐ টাকা থেকে প্রতি বছর গম্ভীর মহারাজের ব্যক্তিগত খরচের জন্য টাকা পাঠাতাম। তিনি লিখেছিলেন ঃ “আমার বিশেষ কোনাে অভাব নেই, তুমি তােমার বিধবা মাকে কিছু টাকা পাঠিয়ো ।” আমি লিখেছিলাম যে, আমার টাকায় অন্তত আপনার জন্য যে ছেলেটা রান্না করে তার মাইনেটা হয়ে যাবে। তিনি মঠের টাকা নিজের জন্য ব্যয় করতে চাইতেন না। নিজের খরচ নিজেই চালিয়ে নিতে চেষ্টা করতেন, অথচ কারাে কাছে হাত পাততেন না। এই প্রসঙ্গে আমেরিকার ভূতপূর্ব President J. F. Kennedy-a fatto treaca try : "Ask not what your country do for you, but what you can do for your country." গম্ভীর মহারাজ তাঁর দেহ-মন-প্রাণ এবং সবকিছু রামকৃষ্ণ সংঘকে দান করে গিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.