প্রাচীন সাধুদের কথা
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী শঙ্করানন্দ (১৮৮০-১৯৬২)
Sri
Ramakrishna
|
নিম্নোক্ত
তিনটি পরােক্ষ উপদেশ আমার
জীবনে খুব কাজে লেগেছে। অবশ্য
এগুলি অপর সাধুদের মুখ থেকে
শুনে নিজের ভাষায় লিপিবদ্ধ
করলাম।
প্রথম:- বেলঘরিয়া
রামকৃষ্ণ মিশনের নৃপেন
মহারাজ (স্বামী
ধ্যানাত্মানন্দ)।
একদিন মহারাজের কাছে এসে বলেন,
“মহারাজ, গত
তিন দিন আমার ঘুম হয়নি রামকৃষ্ণ
মিশনের ভবিষ্যতের কথা ভেবে।
আমি ঠাকুরের কয়েক জন সন্তানকে
দেখেছি; তারপর স্বামীশুদ্ধানন্দজী, স্বামীবিরজানন্দজীকে
দেখেছি; আর
এখন আপনাকে দেখছি। ভাবছি—এরপর
কী হবে?”
মহারাজ(স্বামী
শঙ্করানন্দ) তখনই
গুরুগম্ভীর স্বরে বলে উঠলেন,
“এ
সংঘ কার?” ব্যস।
ঐ একটা কথায় স্বামী ধ্যানাত্মানন্দজীর
উদ্বেগ ও দুর্ভাবনা দূর হয়ে
গেল।
Sri
Ramakrishna
|
দ্বিতীয়:-
জনৈক
সাধু মহারাজের কাছে গিয়ে
বলেন,
“মহারাজ,
আমি
যখন বাড়ি ছেড়েছিলাম আমার
কত বৈরাগ্য ও ব্যাকুলতা ছিল।
মঠে কুড়ি বছর চলে গেল। এখন
সেরূপ বােধ তাে হচ্ছে না।”
মহারাজ(স্বামী
শঙ্করানন্দ)
ভারী
গলায় বললেন,
“বাড়ি
ফিরে যাও।” “মহারাজ,
এ
কী বলছেন!”
“
মহারাজ(স্বামী শঙ্করানন্দ)এখুনি বাড়ি চলে যাও।”
“মহারাজ, আমি সন্ন্যাসী। আমি কেন বাড়ি যাব?”
মহারাজ(স্বামী শঙ্করানন্দ)এখুনি বাড়ি চলে যাও।”
“মহারাজ, আমি সন্ন্যাসী। আমি কেন বাড়ি যাব?”
মহারাজ(স্বামী
শঙ্করানন্দ)“বাড়ি
গেলে দেখতে পাবে তােমার ভাই
ও বন্ধুরা কীভাবে সংসারে বদ্ধ
হয়ে জীবনযাপন করছে;
অভাব-অনটন,
রােগে-শােকে
জ্বলেপুড়ে মরছে। তাদের দেখে
তােমার জীবন তুলনা করবার
সুযােগ হবে। দেখ,
ঐ
ত্যাগ ও ব্যাকুলতা এখন তােমার
অঙ্গীভূত হয়ে রয়েছে,
তাই
দেখতে পাচ্ছ না। মঠ থেকে বাইরে
গেলে পার্থক্যটা দেখতে পাবে।”
Sri
Ramakrishna
|
তৃতীয়
:-
জনৈক
ব্রহ্মচারী অদ্বৈত বেদান্তের
সাধন করত। সে মন্দিরে যেত না,
ধ্যানজপও
করত না। অহং ব্রহ্মাস্মি’—এই
ভাবে মনন ও বিচার করত। কিন্তু
তার কর্মে ও সেবায় খুব নিষ্ঠা
ছিল।
মহারাজ(স্বামী
শঙ্করানন্দ)
একদিন
তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন,
“তুই
মন্দিরে যাস—নিয়মিত ধ্যানজপ
করিস?”
ব্রহ্মচারী
বলল,
“না
মহারাজ।”
তখন
মহারাজ(স্বামী
শঙ্করানন্দ)
তাকে
বললেন,
“তুই
আজ থেকে সকাল-সন্ধ্যায়
আমার ঘরে বসে নিয়মিত ধ্যানজপ
করবি। দেখ,
সদভ্যাসগুলি
ছেড়ে দিলে তারা এক এক করে
ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু ঐগুলিকে
ধরে থাকলে তারা চরিত্র গঠন
করে দেয়। সদভ্যাস কখনও
ছাড়বি
না।
No comments