প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ
Sri
Ramakrishna
|
অণুবীক্ষণ
যন্ত্রে ছােট জিনিসকে বড়
করে দেখায়, দূরবীক্ষণ
যন্ত্র দূরের জিনিসকে কাছে
এনে দেখায়, কিন্তু
বড় জিনিসকে ছােট করে দেখার
যন্ত্র পদার্থবিদ্যার শাস্ত্রে
উল্লেখ থাকলেও তা সচরাচর
ব্যবহার করা হয় না। স্বামী
গম্ভীরানন্দের বিরাট ব্যক্তিত্বকে
নিজের ক্ষুদ্র বুদ্ধি দিয়ে
পরিমাপ করার ব্যাপারে নিজেকে
ঐ তৃতীয় শ্রেণির যন্ত্র বলে
মনে হয়। তিনি কর্মক্ষেত্রে
ছিলেন কঠোর এবং লােকব্যবহারে
কোমল—তাঁর এ দুটো দিক দেখবার
সৌভাগ্য আমার হয়েছে।
ইতি-র
পরে থাকে পুনশ্চ। এই স্মারকগ্রন্থে
(স্বামী
গম্ভীরানন্দ ঃ এক মহাজীবনের
কথা)
স্বামী
গম্ভীরানন্দের একটি সংক্ষিপ্ত
স্মৃতিকথা লিখেছি। এই ভূমিকা
লেখবার কালে তিনটি বিদায়চিত্র
মানসপটে ভেসে আসছে।
Sri
Ramakrishna
|
বেলুড় মঠ, শনিবার, ২২ অক্টোবর ১৯৭৭, সকাল ৭.৩০ মিঃ।
আমি
মঠ থেকে হলিউডে ফিরব। ঠাকুরের
মন্দিরের পিছনের বাড়ির
বারান্দায় গাড়ির জন্য
অপেক্ষা করছি। পূজনীয় মহারাজ
পুরানাে মিশন অফিসের ওপরতলা
থেকে হেঁটে আমাকে দেখতে এলেন।
আমি বললাম,
“আপনি
এত কষ্ট করে এলেন কেন?
আমি
তাে গতকাল বিদায় নিয়ে এসেছি।”
তিনি বললেন,
“তুমি
অত দূরে চলে যাবে,
তাই
আরেক বার দেখতে এলাম।” তিনি
তখন জেনারেল সেক্রেটারি ও
প্রাচীন সাধু,
আর
আমি এক ছােকরা। নগণ্য সাধু
তাঁর নিরভিমানতা ও আমার প্রতি
স্নেহ দেখে মুগ্ধ হলাম।
Sri
Ramakrishna
|
হাওড়া স্টেশন, মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ১৯৮২, সন্ধ্যা ৬.১৫ মিঃ
পূজনীয়
স্বামী গম্ভীরানন্দ তখন ভাইস
প্রেসিডেন্ট। তিনি দীক্ষাদির
জন্য কোথাও যাচ্ছিলেন।
মঠ
থেকে স্বামী বন্দনানন্দজী,
স্বামী
আত্মস্থানন্দজী ও স্বামী
গীতানন্দজী স্বামী গম্ভীরানন্দ মহারাজকে
হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে দিতে
গেলেন। আমিও অদ্বৈত আশ্রম
থেকে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলাম,
কারণ
সে-যাত্রায়
তাঁর সঙ্গে আর দেখা হবে না।
আত্মস্থানন্দজী স্বামী গম্ভীরানন্দ মহারাজকে বললেন,
“মহারাজ,
আমাদের
আইসক্রিম খাওয়ান।” আমি বললাম,
“I shall pay.” আত্মস্থানন্দজী
বললেন,
“No, Gambhir Maharaj will pay." স্বামী গম্ভীরানন্দ মহারাজ হেসে বললেন,
“My money is in Chetanananda's pocket.” মহারাজ
আমাকে সাধুসেবার সুযােগ দিলেন।
৭.২০
মিনিটে ট্রেন ছাড়ল। এক ঘণ্টা
তাঁর সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা
হলাে। ট্রেন ছাড়বার আগে আমি
মহারাজের হাত দু-খানি
ধরে নিজের মাথায় রেখে বললাম,
“আপনি
আমায় আশীর্বাদ করুন।” ক্ষণিকের
মধ্যে তাঁর স্নেহময় মুখটি
প্রত্যক্ষ করলাম।
No comments