প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী গম্ভীরানন্দ
Sri
Ramakrishna
|
ইতিহাসে
দেখা যায় ধর্মসম্প্রদায়গুলি
তিনভাবে চালিত হয়
- প্রথম, কোনাে ধর্মীয় নেতা তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তির দ্বারা সঙ্ঘ চালিত করেন;
- দ্বিতীয়, নৈতিকতা ও চারিত্রিক দৃঢ়তার দ্বারা কেউ সঙ্ঘ চালিত করেন;
- তৃতীয়, কেউ রাজনীতি ও বুদ্ধিমত্তার দ্বারা নেতৃত্ব করেন। কথায় বলে, Absolute power corrupts absolutely.' যাঁরা স্বামী গম্ভীরানন্দের সঙ্গে থেকেছেন, তাঁরা দেখেছেন তিনি কখনও ঐ তৃতীয় শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। তিনি কোনােদিন power ও position চাননি। তাঁর নিজমুখে শুনেছি তিনি যখন প্রথম সাধু হতে আসেন তখন প্রত্যাখ্যাত হন। তারপর দেওঘর কেন্দ্রে স্কুলশিক্ষক, হেডমাস্টার এবং পরে সেক্রেটারি হন। মায়াবতীতে তিনি ১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত প্রবুদ্ধ ভারত পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত তিনি মঠ-মিশনের অছি ও সহকারী সম্পাদকরূপে বেলুড়ে কাজ করেন; তারপর ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত তিনি অদ্বৈত আশ্রমের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৬৩ সালে তিনি আবার সহকারী সম্পাদক, ১৯৬৬ সালে সম্পাদক, ১৯৭৯ সালে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ১৯৮৫ সালে প্রেসিডেন্ট হন। তিনি যােগ্য ব্যক্তি ছিলেন। এই প্রসঙ্গে খলিফা আলির একটি উক্তি প্রণিধানযােগ্য। তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত খলিফা পদ চার বার হারিয়ে চার বার ঐ পদে অভিষিক্ত হন এবং বলেন, “সংসারে তুমি যে পদ লাভ করবে, তা তােমাকে অন্বেষণ করে বেড়াচ্ছে; অতএব তুমি তার অন্বেষণ না করে নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকো।”
Sri
Ramakrishna
|
সাধুসমাজে
দেখা যায়—বৈরাগ্যবান,
প্রেমিক,
পবিত্র,
শাস্ত্রজ্ঞ
ও নিঃস্বার্থপর সন্ন্যাসী
সদা সম্মান পান। এই অপূর্ব
গুণাবলি তিনি নিজ জীবনে অর্জন
সন্ন্যাসী
সদা সম্মান পান। এই অপূর্ব
গুণাবলি তিনি নিজ জীবনে অর্জন
করেছিলেন এবং সঙ্ঘর সাধুরা
একবাক্যে স্বীকার করেছেন।
তিনি নিজমুখে স্বীকার করেছেন
যে,
তিনি
গীতা-র
নিম্নোক্ত শ্লোকটি স্বীয়
জীবনে পালন করবার চেষ্টা
করেছেন—‘জ্ঞেয়ঃ স নিত্যসন্ন্যাসী
যাে ন দ্বেষ্টি ন কাক্ষতি।
নির্ঘদ্বো হি মহাৰাহাে সুখং
ৰন্ধাৎ প্রমুচ্যতে।'
(৫/৩)
(হে
মহাবাহাে,
যাঁর
দ্বেষ ও বাসনা নেই,
যিনি
রাগ,
সুখ,
দুঃখ,
মান-অপমান
ইত্যাদি দ্বন্দ্বশূন্য,
ত্যাগব্রতে
প্রতিষ্ঠিত,
এরূপ
পুরুষই অনায়াসে বন্ধন থেকে
মুক্ত হন।)
দীর্ঘদিন
তাঁর সঙ্গ করে দেখেছি তিনি
ছিলেন কামকাঞ্চনত্যাগী
নিষ্কলঙ্ক সন্ন্যাসী। তাঁর
কর্মশক্তি ও মনীষা দুই-ই
প্রচুর ছিল। তাঁর সত্যনিষ্ঠা,
বেদোজ্জ্বলা
বুদ্ধি,
অমলধবল
চরিত্র ও রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দে
ভক্তি তাঁর ব্যক্তিত্বকে
উজ্জ্বল করে তুলেছিল। অণুবীক্ষণ
যন্ত্রে ছােট জিনিসকে বড়
করে দেখায়,
দূরবীক্ষণ
যন্ত্র দূরের জিনিসকে কাছে
এনে দেখায়,
কিন্তু
বড় জিনিসকে ছােট করে দেখার
যন্ত্র পদার্থবিদ্যার শাস্ত্রে
উল্লেখ থাকলেও তা
No comments