প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী
প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী ভূতেশানন্দজী
Sri
Ramakrishna
|
৮/৮/১৯৯৭,
বেলুড়
মঠ,
সকাল
৭টা।
আমি–আধ্যাত্মিক
অনুভূতি true
কি
false,
কী
করে ঠিক করা যায়?
মহারাজ—দুটি
উপায় আছে। প্রথম,
স্বসংবেদ্য
অর্থাৎ যে নিজে অনুভব। করেছে
সে জানে আর দ্বিতীয়,
পরসংবেদ্য
অর্থাৎ অপরে দেখে। প্রকৃত
অনুভবের দৃষ্টান্ত গীতায়
স্থিতপ্রজ্ঞের লক্ষণে বলা
হয়েছে। ঐ লক্ষণগুলির সঙ্গে
তােমার অভিজ্ঞতা মেলালে বুঝতে
পারবে তা true
কি
false.
ঐগুলি
পরিষ্কার লক্ষণ। আবার ভাগবত-এ
এই তিনটি লক্ষণ বলা হয়েছে ।
(১) ভগবানে তােমার ভক্তি বাড়বে,
(২) তােমার মন ইন্দ্রিয়ের বিষয় থেকে মুক্ত হবে,
(৩) সত্য সম্বন্ধে তােমার দৃঢ় নিশ্চয়তা আসবে এবং সে-ব্যাপারে কোনাে দ্বিধা বা সন্দেহ থাকবে না। ভক্তিঃ পরেশানুভবাে বিরক্তিরন্যত্র চৈষ ত্রিক এককালঃ। প্রপদ্যমানস্য যথাহতঃ স্যুস্তুষ্টিঃ পুষ্টিঃ ক্ষুদপায়ােহনুঘাস।
(১) ভগবানে তােমার ভক্তি বাড়বে,
(২) তােমার মন ইন্দ্রিয়ের বিষয় থেকে মুক্ত হবে,
(৩) সত্য সম্বন্ধে তােমার দৃঢ় নিশ্চয়তা আসবে এবং সে-ব্যাপারে কোনাে দ্বিধা বা সন্দেহ থাকবে না। ভক্তিঃ পরেশানুভবাে বিরক্তিরন্যত্র চৈষ ত্রিক এককালঃ। প্রপদ্যমানস্য যথাহতঃ স্যুস্তুষ্টিঃ পুষ্টিঃ ক্ষুদপায়ােহনুঘাস।
(ভাগবত,
১১/২/৪২)—ক্ষুধার্ত
ব্যক্তির মনে শান্তি থাকে
না। সে শারীরিক দুর্বলতা বােধ
করে। তারপর তীব্র ক্ষুধায়
যখন তাকে খাবার দেওয়া হয়,
সে
প্রতি গ্রাসে তুষ্টি বােধ
করে,
শরীরে
বল পায়,
মনে
শান্তি পায় এবং ক্ষুধার
যন্ত্রণা দূরীভূত হয়। এই
তিনটি লক্ষণের দ্বারা প্রকৃত
অনুভূতি নির্ধারণ করা যায়।
যদি সে সত্যদর্শনে ভেতরে
তুষ্টি বােধ করে,
আধ্যাত্মিক
শক্তি অনুভব করে এবং ভগবৎ-বিষয়ে
সব সন্দেহ চলে যায়—তখন সে
বােঝে তার দর্শন বা অভিজ্ঞতা
খাঁটি। পরসংবেদ্য ব্যাপারটা
হলাে অপর ব্যক্তির দ্বারা
দর্শনের মূল্যায়ন;
কিন্তু
এতে সন্দেহের অবকাশ থাকতে
পারে। কোনাে ব্যক্তি আধ্যাত্মিক
অনুভূতি বা দর্শনের ভান করতে
বা অনুকরণ করে দেখাতে পারে।
সে অপরকে ভাঁওতা দিতে পারে,
কিন্তু
নিজে জানে সেটি সত্য নয়।
গীতা-র
দ্বিতীয় অধ্যায়ে স্থিতপ্রজ্ঞের
লক্ষণ এবং ত্রয়ােদশ অধ্যায়ে
অহিংসা,
ক্ষান্তি,
আর্জবম্
প্রভৃতি গুণগুলি অভ্রান্ত
লক্ষণ।
মহারাজ–খুব
কম লােকেই বােঝে কুণ্ডলিনী
কী?
বাসনার
জাগরণকে কুণ্ডলিনীর জাগরণ
মনে করে। কথামৃত পড়ে লােকে
মনে করে তাদেরও কুণ্ডলিনী
জেগেছে। একজন আমাকে ঐরকম
বলেছিল। আমি বললাম,
ডাক্তার
দেখাতে। High
blood pressure হতে
পারে।
Sri
Ramakrishna
|
আমি—কী
করে ঈশ্বরের আদেশ পাওয়া যায়?
মহারাজ—একে
তিনটি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে
হবে–
(১) নিজের অভিজ্ঞতা,
(২) শাস্ত্রের সঙ্গে নিজের অনুভূতি মেলানাে,
(৩) সংশয় নিরসন। এভাবে আদেশ অভ্রান্ত কি না যাচাই করতে হবে। অনেকসময় বাসনা জাগে—মনে হয়, এ ঈশ্বরের ইচ্ছা।
(১) নিজের অভিজ্ঞতা,
(২) শাস্ত্রের সঙ্গে নিজের অনুভূতি মেলানাে,
(৩) সংশয় নিরসন। এভাবে আদেশ অভ্রান্ত কি না যাচাই করতে হবে। অনেকসময় বাসনা জাগে—মনে হয়, এ ঈশ্বরের ইচ্ছা।
omfat–St.
John of the cross operastaga Dark night of the Soul-এর
বিষয়ে বলেছেন। অনেকেই
অধ্যাত্মজীবনে dry
spell বােধ
করে। কী করে এর হাত থেকে রেহাই
পাওয়া যায়?
মহারাজ—কোনাে-না-কোনাে
সময়ে ঐরূপ শুষ্কভাব সবার
জীবনেই আসে। উদ্যমের অভাব
হলেই অধ্যাত্মজীবনে শুষ্কভাব
আসে। সাধক হতাশ হয়ে পড়ে ধরে থাকতে হয়। কখনাে সাধনভজন
ছাড়তে নেই ঐ ভাব। কতকাল
থাকবে?
মন
আবার উঠবে। ভগবৎ-কৃপায়
depression
চলে
যায়। কৃপা খুব প্রয়ােজন,
নতুবা
নিজের চেষ্টায় সব হয় না।
Self-effort
প্রারম্ভে
খুব প্রয়ােজন। শেষে কেবল
ঈশ্বরের কৃপা। ‘অঙ্গুষ্ঠমাত্রঃ
পুরুষােহন্তরাত্মা সদা জনানাং
হৃদয়ে সন্নিবিষ্টঃ।
তং স্বাচ্ছরীরাৎ প্রবৃহেঞ্জাদিবেষীকাং ধৈর্যেণ।
অষ্ঠপরিমিত অন্তরাত্মা পুরুষ সর্বজনের হৃদয়ে সর্বদা অবস্থিত আছেন। মুঞ্জ ঘাস থেকে শিষের ন্যায় তাঁকে স্বীয় শরীর থেকে ধৈর্যের সঙ্গে পৃথক করবে। (কঠ উপনিষদ, ২/৩/১৭)। ঠাকুর হরি মহারাজকে বলেছিলেন, “ওরে কুশীলব, করিস কি গৌরব, ধরা না দিলে কি পারিস ধরিতে।
তং স্বাচ্ছরীরাৎ প্রবৃহেঞ্জাদিবেষীকাং ধৈর্যেণ।
অষ্ঠপরিমিত অন্তরাত্মা পুরুষ সর্বজনের হৃদয়ে সর্বদা অবস্থিত আছেন। মুঞ্জ ঘাস থেকে শিষের ন্যায় তাঁকে স্বীয় শরীর থেকে ধৈর্যের সঙ্গে পৃথক করবে। (কঠ উপনিষদ, ২/৩/১৭)। ঠাকুর হরি মহারাজকে বলেছিলেন, “ওরে কুশীলব, করিস কি গৌরব, ধরা না দিলে কি পারিস ধরিতে।
আমি—কী
করলে আমরা ঠাকুরকে ভালবাসতে
পারি—সেই secrets
আমাদের
বলুন।
মহারাজ-Love
generates love. প্রেম
প্রেমকে বাড়িয়ে দেয়। ভাগবতে
আছে—‘ভক্ত্যা সঞ্জায়তে
ভক্তিঃ'।
এটি আগন্তুকদের জন্য শেষে।
তােমাকে সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরে
আত্মসমর্পণ করতে হবে। প্রথমে
অহঙ্কারের প্রয়ােজন আছে—যতক্ষণ
পাখির মতাে ডানা ব্যথা না হয়।
যখন সম্পূর্ণ ক্লান্ত তখন
জাহাজের মাস্তুলে বসাে। এই
হলাে ঠাকুরের উপদেশ।
আমি—একদিন
কথাপ্রসঙ্গে Thomas
Merton's International Society-র
একটি ক্যাথলিক মেয়েকে বললাম,
“দেখ,
তােমাদের
ধর্মে আমাদের মতাে গুরু-ইষ্ট-মন্ত্র
নেই। সে Contemplative
Outreach-এর।
President
Father Thomas Keating-কে
গিয়ে আমার কথা বলেছে। তিনি
মেয়েটিকে বললেন যে,
তাদের
সাধনের উপদেশ রয়েছে Mathew
6.6-4 : 'When you pray, go to your room, close the door, and pray to
your Father, who is unseen. And your Father who sees what you do in
private, will reward you openly.' খ্রিস্টানরা
প্রার্থনার ওপর জোর দেয়,
আর
আমরা জপধ্যান করতে বলিএর
পার্থক্য কী?
মহারাজ—তুমি
যখন জপ কর তখন কেবল যন্ত্রবৎ
ভগবানের নাম উচ্চারণ কর না।
তােমার লক্ষ্য যে-ভগবান,
তাঁকে
স্মরণ করবার চেষ্টা কর। জপের
লক্ষ্য হচ্ছে সতত স্মরণ-মনন।...
খ্রিস্টানদের
প্রার্থনা হচ্ছে ঈশ্বরের
সঙ্গে যােগাযােগ করা।
আমিঠাকুর
বলেছেন,
‘ভগবান
কানখড়কে—সব শশানেন। আমাদের
প্রার্থনা is
one-track. তিনি
শােনেন কি?
মহারাজ—আমাদের
হৃদয় ভগবানের উত্তর শুনতে
পায় না। কারণ,
আমাদের
পাষাণ হৃদয় ভগবানের আহ্বানে
সাড়া দিতে জানে না। ভগবান
ডাকছেন আর আমাদের মন সংসারে
ডুবে রয়েছে। মনকে চাবুক মারতে
হবে। আত্মসমর্পণ চাই।
No comments