প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ (১৯০৭-১৯৯৮)
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী ধীরেশানন্দ (১৯০৭-১৯৯৮)
Sri
Ramakrishna
|
২৪/১১/১৯৮১,
কাশী
সেবাশ্রম।
জগতের
কত চিত্ৰই না নিয়ত আমাদের
সামনে আসছে আর কোথায় বিলীন
হয়ে যাচ্ছে। একজন উত্তরাখণ্ডী
সাধু বায়ােস্কোপের দৃষ্টান্ত
দিয়ে খুব বলতেন। এমন দৃষ্টান্ত
স্বপ্নও নয়,
কারণ
বায়ােস্কোপ জাকালেই দেখা।
যায়। পর্দার ওপর কত দৃশ্য—বৃষ্টি
হচ্ছে—আগুন লেগেছে—তাতে
কিন্তু পর্দা একটুও আর্দ্র
বা দগ্ধ হয়নি। সেইরূপ শুদ্ধ
পর্দা হচ্ছে শুদ্ধ ব্ৰহ্ম।
মেশিনটা হলাে বুদ্ধি-ফিতার
ছােট ছােট ছবিগুলি যেন
বাসনা—বিজলির আলােক হলাে
মায়া। আলােকের বলেই যেমন
ছােট ছােট ছবিগুলি পর্দায়
বড় বড় আকারে দেখা যায়,
সেইরূপ
মায়ার অচিন্ত্য শক্তিবলে
বুদ্ধিস্থ সূক্ষ্ম বাসনাগুলি
শুদ্ধ আত্মাতে অধ্যস্ত হয়ে
দৃশ্যরূপ ধারণ করে। কিন্তু
পর্দার ন্যায় শুদ্ধ ব্রহ্মে
কোনাে বিকার নেই।
Sri
Ramakrishna
|
৫/৩/১৯৮২,
কাশী
সেবাশ্রম।
তােমার
লেখা লাটু মহারাজের বই খুঁজে
পেয়ে পড়েছি। খুব ভাল লেগেছে।
বেশ বই হয়েছে। সুন্দর collection,
সুন্দর
arrangement,
ইংরেজিও সুন্দর। খুব লেখাে,
তােমার
কলমের ডগায় মা-সরস্বতী
বসুক। বক্তৃতার চেয়েও লেখায়
কাজ বেশি হয়। কারণ সেটা
স্থায়ী। How
a Shepherd Boy Became a Saint বই-এর
৮৮ পৃষ্ঠাতে যে ঘটনাটা দিয়েছ,
তা
আমি পূজনীয় সুধীর মহারাজের
(স্বামী
শুদ্ধানন্দ)
মুখে
শুনেছি। পূজনীয় সারদানন্দ
মহারাজ হয়তাে তা শুনে বলে
থাকবেন। ঘটনাটা হয়েছিল সুধীর
মহারাজকে নিয়েই। তাঁর বর্ণনা
ঃ “লাটু মহারাজকে নিয়ে এক
সভায় এক পণ্ডিতের উপনিষদ্
ব্যাখ্যা শুনতে গিয়েছি। “তং
স্বাচ্ছরীরাৎ প্রবৃহেঞ্জাদিবেষীকাং
ধৈর্যেণ’ (কঠ
উপনিষদ,
২/৩/১৭)–এর
ব্যাখ্যা শুনেই লাটু মহারাজ
ঐ সভার মধ্যেই জোরে বলে উঠলেন,
“এই
সুধীর!
পণ্ডিত
ঠিক বলেছে। আমি অপ্রস্তুত।
বলি,
‘মহারাজ,
চুপ
চুপ। আবার ঐরূপ বললেন। আমি
বললাম,
মহারাজ,
চুপ
চুপ। কিছুক্ষণ পরপর তিনি ঐরূপ
বলাতে লােকের বিরক্তিভাজন
হওয়ার ভয়ে বললাম,
“মহারাজ,
চলুন
মঠে যাই। তাঁকে নিয়ে মঠে
এলাম। একঘরে থাকি। রাত্রে
আমি ঘুমােচ্ছি। তিনি জেগে
বসে,
ডেকে
বলছেন,
এই
সুধীর।
Sri
Ramakrishna
|
আমি
উঠলাম। তিনি বললেন,
‘পণ্ডিত
ঠিক বলেছে। আমি আবার শুলাম।
আবার ঐ ডাক—এই সুধীর,
পণ্ডিত
ঠিক বলেছে। কিছুক্ষণ পরপর
এইরূপ চলল। আমার আর সারারাত
ঘুম হলাে না। লাটু মহারাজ এমনই
তন্ময় হয়েছিলেন ঐ ভাবে!
স্বানুভূত
বিষয় কিনা!
তাই
এত উল্লাস!”
।
আরেকটি
ঘটনা। লাটু মহারাজ (স্বামীজীকে)
বলছেন,
“দেখ
ভাই লােরেন,
কিশুববাবু
টাউন হলে কিমন লিকচার দেয়।
তুই ভাই অমন লিকচার দিবি,
আর
আমি তাের জন্য এক কুঁজো জল
লিয়ে বসে থাকব।” স্বামীজী
America
থেকে
লিখেছিলেন ঃ “লেটো ভাই-এর
ইচ্ছা এখানে পূরণ করছি। খুব
lecture
দিচ্ছি।”
স্বামীজীর Calcutta
lecture-এ
লাটু মহারাজ এক কুঁজো জল নিয়ে
বসে থেকে তাঁর ইচ্ছাটা যােলাে
আনাই পূরণ করতে পেরেছিলেন।
সুখ-দুঃখ
সব স্বকর্ম জন্য। তাই কাকে
দোষ দেব?
ভগবান
আমার কর্মানুসারেই সুখ-দুঃখ
ফল দিচ্ছেন মাত্র। তাঁর
পক্ষপাতিত্ব নেই এ-বিষয়ে।
তাই খুশিচিত্তে দুটোই নেওয়া
বুদ্ধিমানের কাজ।
Sri
Ramakrishna
|
aa
No comments