প্রাচীন সাধুদের কথা _ স্বামী ধর্মেশানন্দ(ধীরেন মহারাজ) ১৮৯৯-১৯৯৪
প্রাচীন সাধুদের কথা _ স্বামী ধর্মেশানন্দ(ধীরেন মহারাজ) ১৮৯৯-১৯৯৪
Sri
Ramakrishna
|
শ্ৰীম
সত্যিই ঋষি ছিলেন।
মর্টন
ইনস্টিটিউশনের ছাদে টবে ফুল,
গাছপালা,
লতা
দিয়ে কুঞ্জ তৈরি করেছিলেন—যাতে
অসীম নীল আকাশ ছাড়া কিছু না দেখা যায়।
এভাবে ছাদে আশ্রম
করে ঋষিদের মতাে থাকতেন।
যেই
সন্ধ্যা হতাে,
শ্ৰীম
গায়ের লােম check
করতেন।
বলতেন,
“দেখুন,
এখন
সাধনভজনের সময়।
অন্যা বাচো
বিমুঞ্চথামৃতস্যৈষ সেতুঃ’–এখন
সব কথাবার্তা বন্ধ করে আত্মাকে
জানাে—এটিই মােক্ষপ্রাপ্তির
উপায়।
ঠাকুরের কোনাে ঘড়ি
ছিল না।
তিনি গায়ের লােম
check
করে
সন্ধ্যা হলাে কি না ঠিক করতেন।”
আমি
ঠাকুরের অন্যান্য শিষ্যকেও
দর্শন করেছি।
আমি একদিন স্বামী
অভেদানন্দকে দেখতে যাই।
তিনি
তখন ধ্যান শেষে পায়চারি
করছিলেন।
আমি তাঁকে প্রণাম
করে আশীর্বাদ প্রার্থনা করি।
আমি বললাম,
“মহারাজ, আমি পুরী যাচ্ছি। আশীর্বাদ করুন আমার যাতে ভক্তি হয়।”
অভেদানন্দ
মহারাজ বললেন,
“দেখ, বেশি ঘুরলে ভক্তি হয় না। একজায়গায় চেপে বসে ধ্যানজপ করাে আর ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করাে।”
Sri
Ramakrishna
|
আরেক
বার সারগাছিতে স্বামী অখণ্ডানন্দের
কাছে গিয়েছি।
সেখানে খুব
জ্বর হলাে।
তারপর কয়েক দিন
পরে জ্বর নিরাময় হলে অখণ্ডানন্দ
মহারাজ আমাকে বলেন,
“মাত্ৰাস্পর্শাস্তু কৌন্তেয় শীতােষ্ণসুখদুঃখদাঃ। আগমাপায়িনােহনিত্যাস্তাংস্তিতিক্ষস্ব ভারত।'(গীতা, ২/১৪)
—হে
কৌন্তেয়,
ইন্দ্রিয়ের
সঙ্গে বিষয়ের সংযােগহেতু
শীত-উষ্ণ,
সুখ-দুঃখ
অনুভূত হয়। এরা আসে ও যায়—অনিত্য।
সুতরাং সহ্য করাে।
“দেখ, ভগবান বলছেন—সহ্য করাে। ব্যাধিকে শরীরে guest বলে মনে করবে। Guest বাড়িতে আসে আবার চলে যায়। সে চিরদিনের জন্য থাকে না। মনে জোর রাখবে। ব্যাধিকে যদি guest ভাবতে পার, তবে বেশি কষ্টবােধ হবে না।”
Sri
Ramakrishna
|
কলকাতায়
ছাত্রাবস্থায় আমি বন্ধু
সুরেন্দ্রের সঙ্গে ঠাকুরের
গৃহিশিষ্য।
ভাই ভূপতির কাছে
যাই।
তিনি গৃহস্থ হওয়া সত্ত্বেও
সদা একটা দিব্যভাবে থাকতেন।
দু-হাত
তুলে সবাইকে আশীর্বাদ করতেন।
কখনাে তিনি আট-দশ
ঘণ্টা হরি হরি’ করতেন।
তাঁর
কিছু শিষ্য ছিল।
পরীক্ষার পর
আমি ভাই ভূপতির কাছে যাই তাঁকে
test
করবার
জন্য—ইনি মনের কথা জানেন কি
না।
আমি মনে মনে ঠিক করলাম,
ইনি
যদি বলেন—হ্যাঁ,
success হবে’-তবেই
বুঝব। ভূপতি হঠাৎ বলেন,
“হ্যাঁ, success হবে।”
এই ঘটনা আমার ঈশ্বরবিশ্বাস
এনে দিয়েছিল।
স্বামী
কৈলাসানন্দ বলেছিলেন যে,
তিনি
একবার ভাই ভূপতিকে জিজ্ঞাসা
করেছিলেন,
“ঠাকুর কীসে খুশি হন?”
তিনি
উত্তর দেন,
“কেউ কামিনীকাঞ্চন ত্যাগ করলে ঠাকুর খুব খুশি হতেন।”
Sri
Ramakrishna
|
No comments