স্বামীজী তাে বেগুন পেয়ে হেসে কুটিপাটি! বললেন, ‘বেশ করেছিস_স্বামী সারদানন্দের স্মৃতিকথা - Spirituality Religion

Header Ads

স্বামীজী তাে বেগুন পেয়ে হেসে কুটিপাটি! বললেন, ‘বেশ করেছিস_স্বামী সারদানন্দের স্মৃতিকথা


স্বামী সারদানন্দের স্মৃতিকথা

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna
আর একটি মজার গল্প বলেছিলেন, “একবার স্বামীজী, গঙ্গা ও আমি হিমালয়ে ঘুরছি। ঘুরতে ঘুরতে স্বামীজীর একটু শরীর খারাপ হওয়ায় একটি গাছের তলায় কম্বল বিছিয়ে শুয়ে পড়লেন।

 বললেন, একটু বেগুনের ঝােল খেতে ইচ্ছে হচ্ছে।

 আমরা দুজনে বললাম, হাতে নেই পয়সা।
 ডাল-রুটি ভিক্ষে মিলে না। 
কোথায় পাব বেগুন
স্বামীজী বললেন, “দ্যাখনা, কোথাও পাওয়া যায় কি না।
 আমরা দুজনে ঘুরতে ঘুরতে এক সাধুর আশ্রম দেখলাম।
 সেখানে অনেকগুলি বেগুন গাছও আছে, গাছে বেগুনও হয়েছে।
 সাধু আমাদের অভিবাদন করে বসালেন ও বেদান্তের প্রকরণের কথা শুরু করলেন। 
আমরা ঠার সঙ্গে বেদান্তের আলােচনায় যােগ দেওয়ায় তিনি খুব খুশি হলেন।
 কিছুক্ষণ পরে, আমাদের বড় গুরুভাই একটু অসুস্থ।
 আমরা তার কাছে যাব', বলে তার জন্য দুটি বেগুন ভিক্ষা চাইলাম। 
কিন্তু তিনি দিলেন না।

 তার আশ্রমে আমাদের ভিক্ষা নেবার কথা তাে বললেনই না।
 ফিরে স্বামীজীকে বলতে তিনি বললেন, “তােরা দুজনে আবার যা। 

একজন তার সঙ্গে বেদান্ত আলােচনা করবি।

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

আর একজন তার বাগান থেকে বেগুন নিয়ে আসবি। 

সাধুর বেগুন থাকতে চাইতেও যখন দেননি, তখন জোর করে নিলে কিছু দোষ বা অন্যায় হবে না।
 যদি হয় সে দোষ বা অন্যায়ের জন্য আমি দায়ী।

 তােরা যা।' তখন আমি গিয়ে, ওঁ নমাে নারায়ণ স্বামীজী মহারাজ’ বলে, অভ্যর্থনা করতেই তিনি খুশি হয়ে, আমাকেও অভিবাদন করে ভিতরে ডাকলেন ও আমরা তার বেদান্ত আলােচনায় খুশি হয়ে আবার এসেছি মনে করে আবার বেদান্ত আলােচনা শুরু করলেন।

 এদিকে গঙ্গা চারটি বেগুন তুলে নিয়ে একটু দূরে এসে জোরে জোরে হাততালি বাজাতেই কার্য উদ্ধার হয়ে গেছে জেনে আমিও সাধুকে নমাে নারায়ণায় জানিয়ে ও ভিক্ষার ব্যবস্থায় বেরােতে হবে বলে সরে পড়লাম।

স্বামীজী তাে বেগুন পেয়ে হেসে কুটিপাটি! বললেন, ‘বেশ করেছিস। এখন দুটি ভাতের চেষ্টা দেখ দিকি। 

গঙ্গা ভাত ডাল ভিক্ষা করে আনল তিন মূর্তির জন্য। 
আমি বেগুনের ঝােল রাঁধলাম। তিনজনে খেয়ে খুব আনন্দ করলাম।”

Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

একদিন মহারাজ বিকালে চা খেয়ে বেশ ঘেমেছেন দেখে, আমি তাকে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছি দেখে মহারাজ বললেন,
 “আমি একটু ঘেমে হালকা হব বলে গরম গরম চা খেলুম। আর তুই এলি চাষার মতাে হুস হুস করে হাওয়া করতে।” 
আমি বললুম,
 “ঘাম দেখে হাওয়া করছি—আবার চাষা বলছেন কেন?”
তিনি হাসতে হাসতে বললেন, “শােন, একজন চাষা তার মেয়ের বিয়ের জন্য গুরুদেবের আশীর্বাদ ভিক্ষা করতে গিয়ে গুরুমার কাছে জানল, গুরুদেব তার এক বড়লােক শিষ্যের বাড়ি কলকাতায় গেছেন। 
চাষা সেখানে গিয়ে দেখল—ঐ ধনী শিষ্য জলে পাখা ভিজিয়ে গুরুদেবকে হাওয়া করছে। 
সে নূতন জিনিস শিখলাে ও স্থির করল এবার গুরুদেব আমার বাড়ি এলে আমিও পাখা ভিজিয়ে বাতাস দিব।
 বেচারা গুরুদেব তার বাড়িতে।
 শীতকালের সন্ধ্যার পরে গিয়ে হাজির। 
শিষ্য গুরুদেবকে বসিয়ে প্রণাম করেই

Sri Sarada Devi

Sri Sarada Devi


একখানা পাখা পুকুরের ঠাণ্ডা জলে ডুবিয়ে এনে জোরে জোরে হাওয়া দিতে লাগল।

 গুরুদেবের প্রাণান্ত! বললেন, “তাের তাে কোন কাণ্ডজ্ঞান নেই।

 আমি শীতে মরছি আর তুই এলি ভিজে পাখা নিয়ে হাওয়া করতে!” তখন শিষ্য বললে, “আপনার বড়লােক শিষ্য ভিজে পাখার হাওয়া দিচ্ছিল—তাকে আপনি কিছু বলেননি। 

আর আমি গরিব বলে আমাকে বকছেন?” গুরুদেব বললেন, “বেটা, সে যে গরমের দিনে দুপুরে হাওয়া করেছিল। 
আর তুই শীতের দিনে রাত্রে হাওয়া দিচ্ছিস!”


No comments

Powered by Blogger.