শেষ শয্যায় শুয়েও চেয়ে ছিলেন, সবাই যেন ভাল থাকে এবং ঠাকুর ও মাকে যেন বুঝতে পারে, তাঁদের উপলব্ধি করতে পারে
শেষ শয্যায় শুয়েও চেয়ে ছিলেন, সবাই যেন ভাল থাকে এবং ঠাকুর ও মাকে যেন বুঝতে পারে, তাঁদের উপলব্ধি করতে পারে
Sri
Sarada Devi
শেষ শয্যায় শুনতে চেয়েছিলেন ' খন্ডন ভববন্ধন '
শেষবার যখন বেলভিউ ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিলেন, তখন হয়তো নিজেই বুঝতে পেরেছিলেন , এ যাত্রায় আর বাড়ি ফিরবেন না । আমাকে বলতেন , ' সমরজিৎ, আমাকে এবার ছেড়ে দাও । আমি আর পারছি না ।'( Golden Era )আমি সান্ত্বনা দেওয়ার ভঙ্গিতে বলতাম, ' কী বলছেন ! আপনার জন্য সারা পৃথিবীতে আপনার অনুরাগীরা উদ্বেল হয়ে আছেন । আর আপনি চলে যেতে চাইছেন ? আপনি থাকলে আমাদের উপকার হবে । আপনার জন্য আপনি থাকবেন না, থাকবেন আমাদের জন্য । ' ( Golden Era)এই কথাগুলো শুনে একদম চুপ করে যেতেন । সেই সময় আমার মুখেই শুনেছিলেন, বর্তমানে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের যিনি সেক্রেটারি, স্বামী সর্বগানন্দ মহারাজ, ভীষণ ভাল ঠাকুরের গান করেন । এবং সেই কথা শুনতেই, উনি আমাকে চেপে ধরেন, স্বামী সর্বগানন্দ মহারাজকে যদি আমি একদিন হাসপাতালে আসার জন্য অনুরোধ করি । ( Golden Era)স্বামী সর্বগানন্দ মহারাজ এসেছিলেন, গানও শুনিয়েছিলেন । এবং তখনই জানা যায়, মিসেস সেন ও স্বামী সর্বগানন্দ মহারাজ, দুজনেই একই গুরু ভাইবোন! দুজনেই দীক্ষা নিয়েছিলেন প্রভু মহারাজের(স্বামী
বিরেশ্বরানন্দজি মহারাজ) কাছে ।
শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের মূহুর্তে আমি মিসেস সেনের কাছে ছিলাম না , তবে ঠিক আগের দিনই উনি আমার কাছে শুনতে চেয়েছিলেন ' খন্ডন ভববন্ধন ' গানটি । ( Golden Era)ওটা গেয়ে শোনানোর পর উনি আমাকে অনেক আদর করলেন । বললেন, ' ভালো থেকো । ঠিক এভাবেই মানুষের সেবা কোরো । '
মৃত্যুর আগে উনি আমাকে শ্রী শ্রী সারদা মায়ের ছবি ও বাণী সম্বলিত একটা ছোট্ট কার্ড দিয়েছিলেন । যেটি আমি এখন সবসময় আমার জামার বুক পকেটে রাখি ।( Golden Era)কার্ডটা দিয়ে বলেছিলেন , ' এটা পড়ো, আমি শুনি । ' তাতে লেখা ছিল, ' দেখা না পেলে কোথা থেকে ভালবাসা হয় ! এই তোমার সঙ্গে দেখাটি হয়েছে, আমি মা , তুমি আমার ছেলে । '
সুচিত্রা সেনের জীবনদর্শন |
সত্যিই, আমার তো মা নেই, উনিই আমার কাছে মায়ের রূপ নিয়ে ধরা দিয়েছিলেন । যে মায়ের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো কখনও ভুলতে পারব না ।
*সুচিত্রা সেনের জীবনদর্শন*
লিখছেন ডাক্তার সমরজিৎ নস্কর । ( আনন্দলোক পত্রিকা, ২০১৬ )
No comments