প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী সত্যস্বরূপানন্দ(বিশেষ মহারাজ)
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী সত্যস্বরূপানন্দ(বিশেষ মহারাজ)
Sri
Ramakrishna
|
“সত্যি
আশ্চর্য বােধ হয়,
মা
তাঁর আত্মীয়দের কী করে
মায়ানমাহের দ্বারা। ঢেকে
রেখেছিলেন—ঐজন্য তাঁরা মাকে
চিনতে পারেননি। তাঁরা দেখতেন।
কত গণ্যমান্য লোেক মায়ের
কাছে আসতেন,
দীক্ষা
নিতেন,
পুজো
করতেন কিন্তু তাঁরা মায়ের
স্বরূপ জানতে পারতেন না। মা
তাঁদের টাকা,
এটা-ওটা।
দিয়ে ভুলিয়ে রাখতেন। কালীমামাই
মাকে বেশি উৎপাত করতেন। শেষে
প্রসন্নমামাও মায়ের কাছে
নানা সাহায্য দাবি করতেন।”
আমি—মাকে
দেখে আপনার কী মনে হয়েছিল?
মহারাজ—আমি
তাে তখন ছেলেমানুষ। মাকে দেখে
বাড়ির মার মতােই মনে হতাে।
তবে লােকমুখে শুনতাম—মা
সাক্ষাৎ জগদম্বা।
আমি—মায়ের
কোনাে বিশেষত্ব আপনার মনে
পড়ছে?
মহারাজ
বললেন,
“হ্যাঁ।
মা কখনও কাউকে মনে কষ্ট দিয়ে
কথা বলতে পারতেন না। গােলাপ-মা
ছিলেন উচিত বক্তা। তিনি ঝাঁঝালাে
ভাষায় সরাসরি বলে দিতেন,
তাতে
অনেকে মনে কষ্ট পেত। মা কিন্তু
এমন সুন্দর করে সাজিয়ে কথা
বলতেন যাতে অপরের হৃদয়ে আঘাত
না লাগে। যেমন কাউকে হয়তাে
বাজার করতে টাকা দিয়েছেন,
সে
বাকি পয়সা ফেরত
Sri
Ramakrishna
|
দেয়নি।
মা তাকে বলতেন,
'হ্যাঁ
বাবা,
তােমাকে
বাজার করতে টাকা দিয়েছিলাম,
তােমার
আর কি কিছু পয়সার দরকার?'
সে
ব্যক্তি লজ্জিত হয়ে বলত,
“না,
মা।
আমি আপনাকে বাকি পয়সা দিতে
ভুলে গিয়েছি। সে তখন বাকি
পয়সা ফেরত দিত।
“তিনি
অপরের দুঃখ-কষ্ট
সহ্য করতে পারতেন না। নিজের
দারুণ অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও
মা সব সহ্য করতেন। একবার নবাসনের
বউ (মন্দাকিনী
রায়)-এর
নিউমােনিয়া হয়। সে মায়ের
ঘরের মেঝেতে বিছানা নিল। ঘরে
দুর্গন্ধ। কিশােরী মহারাজ
মায়ের অসুবিধা বুঝে তাকে
জোর করে পালকি করে কোয়ালপাড়ায়
নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা
করেন। মা কিশােরী মহারাজকে
কয়েক বার বারণ করেছিলেন
মন্দাকে সরাতে,
কারণ
সে মায়ের সেবা করত এবং মায়ের
আশ্রয় নিয়েছিল। সে মনে কষ্ট
পাবে। বলে মা শত অসুবিধা সহ্য
করেছিলেন। শেষে মন্দা ভাল
হয়ে জয়রামবাটী ফিরে আসে।
Sri
Ramakrishna
|
No comments