শ্রীশ্রীমায়ের কৃপালাভে ধন্য_সুরেশচন্দ্র ঘােষ
শ্রীশ্রীমায়ের কৃপালাভে ধন্য_সুরেশচন্দ্র ঘােষ
(সুরেশচন্দ্র ঘােষ বৃহত্তর ময়মনসিংহ-এর কিশােরগঞ্জ জেলায় সহস্রাম গ্রামের বাসিন্দা।
শ্রীশ্রীমাকে প্রথম দর্শন করেন ১৩২১ সালে।
এ সময়েই শ্রীশ্রীমায়ের কৃপালাভ করেন।
১৩২১ সালে গ্রীষ্মের ছুটিতে আমরা তিনচার জন ময়মনসিংহ হতে কোলকাতা রওনা হলাম।
ইচ্ছা—মাসখানেক বেলুড় মঠে থাকব।
তার ভালবাসায় এত মুগ্ধ হয়েছিলাম যে, মঠে এসে কিছুদিন সাধুসঙ্গ করতে মনস্থ করি।
আমাদের দেখেই তিনি হাসিমুখে বলে উঠলেন,
এই যে সব বালক-ভক্ত পূর্ববঙ্গ (বাংলাদেশ) থেকে মঠে এসে উপস্থিত !
পাঁচসাত দিন হয় মঠে আছি।
সন্ধ্যার প্রাক্কালে গঙ্গাতীরে তার উপদেশ শুনার জন্য বসেছি সেসময়ে তিনি ধীরানন্দ-স্বামীজীকে বললেন, কেষ্টলাল,
এই অক্ষয়তৃতীয়া উপলক্ষে এদের মাকে দর্শন করিয়ে দাও।
আমরা নিজেদের অত্যন্ত অনুগৃহীত মনে করলাম।
কৃষ্ণলাল মহারাজের সঙ্গে অতি প্রত্যুষে কোলকাতা রওনা হলাম।
কালীঘাটে কলুষনাশিনী গঙ্গায় অবগাহন করে মনে হলাে জীবনের সমস্ত পাপ কেটে গেল ।
শ্রীশ্রীজগদম্বার দর্শনাদি করে কৃষ্ণলাল মহারাজের উপদেশানুসারে নাটমন্দিরে বসে কিছুক্ষণ ধ্যান করলাম।
তারপরে বাগবাজারে মায়ের বাড়িতে এসে দেখি, স্ত্রী ও পুরুষ ভক্তে বাড়িটি পরিপূর্ণ।
জনৈক সাধু এসে বললেন, তােমরা একএক জন করে আসবে।
তিনি একজনকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, তারপরে আমার ডাক পড়ল।
আমি ঘরে ঢুকতেই শ্রীশ্রীমা বললেন, এসাে, বাবা।
আমি শ্রীপাদপদ্মে মাথা রেখে লম্বমান হয়ে প্রণাম করলাম।
তিনি সস্নেহে বললেন, হয়েছে বাবা।
তারপরে একখানা আসন দেখিয়ে বললেন, এখানে বস।
আমি বসলাম,
পাশেই আর একখানা আসনে নিজে বসলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে, আমি যা ভাবি নি,
ভাবতে পারি নি,
তার অপার করুণাবারি-সিক্ত করে আমাকে দীক্ষা দিলেন।
জানি না কোন্ সুকৃতি বলে তাঁর এ কৃপা লাভ করলাম।
বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাঁদের স্মৃতিমালা।
বিকালবেলা আবার মাকে দর্শন করতে গেলাম।
শ্রীপাদপদ্মে প্রণত হওয়ামাত্র স্নেহময়ী আমার মাথায় ও পিঠে হাত বুলিয়ে আশীর্বাদ করলেন।
তাঁর সঙ্গে আমার এরূপ কথাবার্তা হলাে ।
আমি : মা, দীক্ষা তাে নিয়েছি, কিন্তু কর্তব্য কাজ করতে পারব কি ? মা : খুব পারবে ; কেন পারবে না ?
আমি : এখন পাঠ্যাবস্থায় আছি , মেসে থাকি—ধ্যানজপ করার নানা প্রতিবন্ধক আছে ; সময়মত করতে না পারলে পাপ হবে না ?
মা: না, পাপ আবার কিসের ?
স্নান করে ঠাকুরকে প্রত্যহ প্রণাম করবে আর প্রত্যেক কাজে তাঁকে স্মরণ করবে।
এতেই জপধ্যানের কাজ হবে।
আর যখন সময় পাবে, একমনে তার কাছে প্রার্থনা করবে।
আমি ঃ সন্ধ্যাহ্নিক যারা করেন সবাইকে দেখি, স্নান করে পবিত্রভাবে করেন।
আমার দ্বারা তাে তা সম্ভব হবে না।
মা ঃ খুব ভােরে আর রাত্রে ঘুমবার আগে যা পার তাই কোরাে।
ধ্যানজপ করা তাঁকে লাভ করার জন্যে ; তাঁর কৃপা পেয়েছ বলেই এখানে এসেছ।
সারদা মায়ের প্রনাম মন্ত্র......
নম: যথাগ্নের্দাহিকা শক্তি, রামকৃষ্ণে স্থিতা হি যা।
সর্ববিদ্যাস্বরূপাং তাং সারদাং প্রণমাম্যহম্।।
শ্রীশ্রীমায়ের কৃপালাভে ধন্য |
No comments