প্রশ্ন : বৈশাখী পূর্ণিমাকে ‘Thrice blessed day' কেন বলা হয় মহারাজ? - Spirituality Religion

Header Ads

প্রশ্ন : বৈশাখী পূর্ণিমাকে ‘Thrice blessed day' কেন বলা হয় মহারাজ?

Sri Ramakrishna



Sri Ramakrishna

Sri Ramakrishna

Sri Sarada Devi, Swami Vivekananda, Swami Shivananda

Sri Sarada Devi, Swami Vivekananda, Swami Shivananda


প্রশ্ন : বৈশাখী পূর্ণিমাকে ‘Thrice blessed day' কেন বলা হয় মহারাজ? 


মহারাজ : ভগবান বুদ্ধের সেদিন জন্ম, বােধিলাভ এবং মহাসমাধি।
 
প্রশ্ন:আর্য সত্য কেন বলা হয়

মহারাজ : আর্যদের দ্বারা পরীক্ষিত সত্য।

 এখানে আর্য মানে জাতি নয়— পূজ্য যারা, তাদের দ্বারা।

 জনৈক মহারাজ শরীরের কুশল জিজ্ঞেস করলে পূজনীয় মহারাজ বললেন, ‘শরীর জানে দুঃখ জানে, মন তুমি আনন্দে থেকো।'
হরি মহারাজ বারবার ঠাকুরের এই কথাটি বলতেন।
 তবে অন্য কারুর কাছে ঠাকুর বলেছেন কিনা উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 
প্রশ্ন:নির্বাণ কী, মহারাজ

মহারাজ : অহমাত্মিকা বুদ্ধির নিবৃত্তি। চিত্তবৃত্তি, বাসনা বা তৃষ্ণার নিবৃত্তি। তার দ্বারা হয় কী, যে ‘আমি’ ‘আমি’ করছে, তার শেষ হয়ে যায়। দীপ নিভে যায়।। 

প্রশ্ন:-তাহলে রইল কী
মহারাজ : কিছুই রইল না। তুমি কী চাইছ, ‘আমি’টা থাকুক? 

প্রশ্ন:-আমিনা থাকলে অভাব কার হবে

মহারাজ : প্রবর্তকের হবে। যে ই পথে চলবে, তার হবে।
 
প্রশ্ন:—প্রবর্তক না থাকলে নির্বাণ কার হবে

মহারাজ : দীপ জ্বলছে, তার পর নির্বাণ হল। 
বাসনারূপ তেলের দীপ জ্বলছিল। তেল শেষ হয়ে গেল।
 দীপ শেষ হয়ে গেল।

প্রশ্ন:-এটা তাে মাছিকে মারতে লােকটাকে মারা হল। 
মহারাজ : তুমি তাে কটাক্ষ করছ।
 তার মানে, তুমি লােকটাকে বাঁচিয়ে রাখতে চাও
এর নামই বাসনা। নির্বাণে অনন্ত বাসনার নিবৃত্তি হবে।

প্রশ্ন:তাহলে নির্বাণ কার জন্য

মহারাজ : ‘কেউ বলে সত্য যদি থাকত, তাহলে ‘কার’ নির্বাণ—এ প্রশ্ন উঠত। যেটাকে দীপশিখা বলছ, সেটা—জ্বলন্ত তৈলকণাগুলােই দীপশিখা বলে প্রতীত হচ্ছে। যখন জ্বলন্ত তৈলকণা রইল না, কী রইল?
মানুষ কী চায়?
দুঃখের নিবৃত্তি। কার দুঃখের নিবৃত্তি
যার দুঃখ হচ্ছে, সে নিবৃত্তি চায়। যার দুঃখ রইল না, দুঃখনিবৃত্তি হয়ে গেল, তার দুঃখ কোথায় থাকবে

প্রশ্ন:আমিত্বের বিনাশ কী মানুষ চায় 

মহারাজ : সাধারণ মানুষ তাে এই সংসারটা ভােগ করতে চায়। তাই আমিটা বাঁচিয়ে রাখতে চায়। যখন ‘আমি’ বলতে যে বন্ধন বােঝায়, সেগুলাে চলে যায়; তখন আমি রইল কোথায়?
তুমি, আমি কিছুই রইল । ব্রহ্ম-স্বরুপে আমি-টামি থাকবে না। 

প্রশ্ন:অনন্ত জীবনের কথা বলা হয়, সেটা কার ?
 
মহারাজ : সাধকের। সাধক ভাববে, ‘আমি ব্রহ্ম। “আমি ব্রহ্ম’, ‘আমি 
ব্রহ্মহ্লা’ বলতে বলতে আমিত্বটা ঘুচে যাবেব্রহ্মই থাকবে। 
যথােদকং শুদ্ধে শুদ্ধমাসিক্তং তাদৃগেব ভবতি। এবং মুনের্বিজানত আত্মা ভবতি গৌতম।” 
 (কঠোপনিষদ,২।১।১৫) 
যেমন, এক শুদ্ধ জলবিন্দু শুদ্ধ জলরাশিতে পড়লে সে শুদ্ধ জলরাশিই হয়ে যায়, তার আর কিছু থাকে না; যে বিজ্ঞানীব্রহ্মজ্ঞতার এই ‘আমি’-রূপ গণ্ডিটা চলে গেলে তবে ব্রহ্মজ্ঞ হবে। ব্রম্মজ্ঞ নয়ব্রহ্মস্বরূপে স্থিতি হবে। কার স্থিতি হবেব্রহ্মর স্থিতি হবে। আরােপ চলে যাবে। এইজন্য শঙ্করের আলােচনায় আছে, অবিদ্যা কার? উত্তর-অবিদ্যা যার, তার। আমিই তাে অবিদ্যায় ভুগছি। তাহলে আর প্রশ্ন করছি কেন?
খুব তসিদ্ধ কথা। অবিদ্যা থেকে ‘আমি’র উৎপত্তি, অবিদ্যা নাশ হলে আমি’ কোথায় যাবে?
অবিদ্যার নিবৃত্তির সাথে সাথে ‘আমি’রও নিবৃত্তি হবে। ব্রহ্মবাদীরা বলেন, যখন সমস্ত আরােপ দূর হয়ে গেল, হাতে আরােপ তাে রয়ে গেল। তখন আর বর্ণনা কী করব?
বলে, তখন বর্ণনা-অশব্দ, অস্পর্শ, অরূপ, অব্যয়ম্। শূন্য এবং ব্রহ্ম খুব বেশি তফাত নয়, এক। বৌদ্ধগণের শূন্য মানে জগতের শূন্য নয়, জগতের আরােপ হয় যেজন্য, সেই শূন্যের নিবৃত্তি। 

প্রশ্ন:জটিল দর্শন নিয়েও বুদ্ধ কীভাবে এত জনপ্রিয় হলেন
মহারাজ : বুদ্ধ তাে কোন তর্কগ্রন্থ রচনা করেননি। তিনি বলেছেন, মানুষের যে-বাসনা, তার নিবৃত্তি। খুব বাস্তব কথা। বলেছেন, একজনের গায়ে তীর লেগেছে। তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে—তীরটা কোনদিক থেকে এল, তীরের ফলা কত বড় ইত্যাদি। সে বলছে, আগে তীরটা সরাও, তারপর প্রশ্ন কর। কোথা থেকে এল, কীভাবে এল—অত বিচারের দরকার কী?
সােজা কথা-বাসনার নিবৃত্তি। আমাকে—সবাই এখানে এসে বলে—আমার খুব অশান্তি, অশান্তি কীভাবে যাবে
আমি বলি, একটা উপায় আছে। শুনে তারা সাগ্রহে বলে—কী উপায়
বলি, বাসনার নিবৃত্তি। কেউ বলে, আমার কোন বাসনা নেই। আমি বলি, তবে তােমার দুঃখও নেই। অপ্রাপ্ত বস্তুর প্রাপ্তির জন্য মনের আকাঙ্ক্ষা, তাকে বলে বাসনা। বাসনা নেই, তাহলে দুঃখ আসবে কোথা থেকে
কেউ বলে, সংসার চাই না। জিজ্ঞাসা করি, তবে কী চাও?
তখন বােঝা যায়—সংসার থাকবে, কিন্তু সংসারের দুঃখ-কষ্ট থাকবে না, এই চায়। পতি-পুত্র কন্যা সবাই মিলে তারা এখানে অমর হয়ে থাকবে—এই চায়। আকাশকুসুমের মতাে কল্পনা। এর পারে যেতে হবে। তাই তাে উপনিষদ বলছেন
যত্রহি দ্বৈতমিব ভবতি তদিতর ইতরংপশ্যতি তদিতর ইতরং জিতি তদিতরইতরং রসয়তে তদিতর ইতরমভিবদতিতদিতর ইতরং শৃণােতি তদিতরইতরং মনুতে তদিতর ইতরং স্মৃতিতদিতর ইতরং বিজানাতি যত্রত্বস্য সমাত্মৈবাভৃৎ তৎ কেনকং পশেৎ তৎ কেন কং জিঘ্ৰেৎ তৎকেন কং রসয়েৎ তৎ কেন কমভিবদেৎতৎ কেন কং শৃণুয়াৎতৎ কেন কং মন্বীত তৎ কেন কংস্পৃশেৎ তৎ কেন কং বিজানীয়াযেনেদং সর্বং বিজানাতি তংকেন বিজানীয়াৎ। ষ এষ নেতিনেতাত্মাহগৃহ্যো ন হিগৃহ্যতেহশীর্ষো ন হি শীর্ষতেইসঙ্গোন হি সজ্যতে হসিতাে ন ব্যথতেন রিষ্যতি বিজ্ঞাতারমরে কেনবিজানীয়াদিতি।” (বৃহদারণ্যকোপনিষদ্,৪৫।১৫)

অর্থাৎ, ‘কারণ যখন (ব্রহ্ম) দ্বৈতপ্রায় হয়ে থাকে, তখন একে অপরকে দেখে, একে অপরকে আঘ্রাণ করে, একে অপরকে আস্বাদন করে, একে অপরকে বলে, একে অপরকে শােনে, একে অপরকে চিন্তা করে, একে অপরকে স্পর্শ করে, একে অপরকে জানে। 
কিন্তু যখন সমস্ত এর আত্মাই হয়ে গেল, তখন কি দিয়ে কাকে দেখবে, কি দিয়ে কাকে আঘ্রাণ করবে, কি দিয়ে কাকে আস্বাদন করবে, কি দিয়ে কাকে বলবে, কি দিয়ে কাকে শুনবে, কি দিয়ে কাকে ভাববে, কি দিয়ে কাকে ছোঁবে, কি দিয়ে কাকে জানবে
যার দ্বারা লােকে এই সমস্তকে জানে, তাকে কি দিয়ে জানবে?
যাকে ‘নেতি নেতি’ বলা হয়, ইনিই সেই আত্মা।
 ইনি অগ্রহণীয়, কারণ ইনি গৃহীত হন না; ইনি অক্ষয়, কারণ এঁর ক্ষয় নেই; ইনি অসঙ্গ, কারণ এঁর আসক্তি নেই; ইনি বদ্ধ নন, অতএব এঁর ব্যথা নেই ও বিনাশ নেই।
(যিনি সকলের জ্ঞাতা) সেই বিজ্ঞাতাকে কি দিয়ে জানবে?
তােমরা জপ-ধ্যান কর যখন, তখন আমি ব্রহ্ম চিন্তা করাে কী 

প্রশ্ন:-সন্ন্যাসী তাে আত্মচিন্তা করবে। 

ভজরং ভজরং করে। 

প্রশ্ন:ব্রচিন্তাই তাে করবে সাধু, আর কী করবে ? 

মহারাজ : যে-জিনিসটা ধরতে পারে না, সেটা চিন্তা করবে কী করে
আগে আত্মচিন্তা কর, দেখ—আমি কে?
তবেই তাে ব্রম্নচিন্তা আসবে—আমি ব্রহ্ম।
 শুধু ব্রহ্মচিন্তা মানে কী?
 ব্রহ্মকে ধরতে পারবে?
যন্মনসা ন মনুতে যেনাহুর্মননা মতম্।” 
তাে ব্রহ্মচিন্তা করবে কী করে

প্রশ্ন:-আবার আছে, “মনসা এব অনুপশ্যন্ত।” 

মহারাজ : সে তাে আছে। 
যখন মন শুদ্ধ হবে তখন আর তিনি এই’
তিনি এই বিচার করতে হবে না। বিচারের নিবৃত্তি হয়ে যাবে। তখন যা আছে তাই অদ্বৈত। শুধু অনুভব।"


No comments

Powered by Blogger.