প্রশ্ন:—অশব্দ, অস্পর্শম্ বলা হচ্ছে, সেটা তাে শাস্ত্র শব্দ দিয়েই বলছে। যেটা বলতে চাইছিল শাস্ত্র, শব্দ দিয়েই তাে বলছে।
|
Sri
Ramakrishna
|
Sri
Ramakrishna
|
প্রশ্ন:—অশব্দ,
অস্পর্শম্
বলা হচ্ছে,
সেটা
তাে শাস্ত্র শব্দ দিয়েই বলছে।
যেটা বলতে চাইছিল শাস্ত্র,
শব্দ
দিয়েই তাে বলছে।
মহারাজ : শব্দ নেই—এটা শব্দ দিয়ে বলা হচ্ছে কিনা? শব্দকে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে কি? ধরার জন্য বলা হচ্ছে।
প্রশ্ন:-স্বরূপ না হলেও সেটার কথা বলা হচ্ছে।
মহারাজ : শব্দ নেই মানে শব্দের প্রতিষ্ঠা হল?
প্রশ্ন:-শব্দ নেই কেন? ব্রহ্ম শব্দ তাে ব্যবহৃত হচ্ছে। বেদে তাে ব্রহ্ম শব্দ হিসাবেই ব্যবহৃত হয়েছে।
মহারাজ : শব্দের দ্বারা ব্ৰহ্লাকে বলা যায় না। অশব্দ মানেই হচ্ছে, তার কোন শব্দ নেই। ব্রয় শব্দও তার শব্দ নয়। ব্রহ্ম মানে সর্বব্যাপী। সবই নেই, তার ব্যাপকতা কোখেকে হবে?
প্রশ্ন:—মহারাজ, শব্দ তার নেই, স্পর্শ তার নেই, সেই জিনিসটি যে আছে। তার প্রমাণ কী?
মহারাজ
:
প্রমাণ
দরকার হয় না। যে-বস্তু
সম্বন্ধে সন্দেহ থাকে,
সে
বিষয়ে প্রমাণ দরকার হয়।
কিন্তু যে-বিষয়
নিঃসন্দেহ,
তাকে
আর প্রমাণের দরকার হয় না।
-কী
করে নিঃসন্দেহ হল?
অশব্দ,
অস্পর্শম্
যে ব্রহ্ম তাকে আমরা নিঃসন্দেহ
প্রশ্ন:-রূপে
পাচ্ছি কী করে?
দেখতেই
পাচ্ছি না,
অনুভবে
আসছে না। মহারাজ : তােমরা কারা? তােমরা তাে অজ্ঞান। কথা হল, আমরা অজ্ঞান হতে পারি, কিন্তু ব্রহ্ম যে আছে, তার প্রমাণ যদি না থাকে,
প্রশ্ন:-তাহলে আর সেইটি নিয়ে বিচার করে কী হবে?
মহারাজ : আরে বাবা ! সমস্ত প্রমাণ ব্রষ্মের দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে। ব্রহ্মকে তাে অন্য প্রমাণ প্রমাণিত করতে পারে না।
প্রশ্ন:-তাহলে আর ওটা নেই বললেই ভাল, মহারাজ।
মহারাজ :
নেই
বললে তাে একটা ব্যাখ্যা হল।
তা নয়। যে বলছে ব্রহ্ম নেই,
সে
কে?
-তাকে শব্দের দ্বারাও জানা যাচ্ছে, স্পর্শের দ্বারাও জানা যাচ্ছে—যে কথা বলছে।
মহারাজ : তাকে যদি খোঁজ কর, তার স্বরূপকে ধরতে চেষ্টা কর, তখন কি পাবে কিছু?
প্রশ্ন:-যদি
তার কিছু না থাকে,
তিনি
নেই,
শূন্য ?-তাকে শব্দের দ্বারাও জানা যাচ্ছে, স্পর্শের দ্বারাও জানা যাচ্ছে—যে কথা বলছে।
মহারাজ : তাকে যদি খোঁজ কর, তার স্বরূপকে ধরতে চেষ্টা কর, তখন কি পাবে কিছু?
মহারাজ : শূন্য বলতে গেলে তাে শব্দের দ্বারা বলা হল।
প্রশ্ন:—আমরা তাে তাই বলছি, শব্দের দ্বারা প্রকাশিত জিনিসই আছে। শব্দের অতীত কোন জিনিস নেই।
মহারাজ :
শব্দের
অতীত কথাটা বলেই ব্রষ্মের
স্বরূপকে বােঝানাে হল। স্বরুপকে
মুখে বলা যায় না। এই যে মুখে
বলা যায় না,
এটাই
হল ব্রহ্মকে বােঝানাে।
প্রশ্ন:—এটাও
তাে বুঝতে হবে। বলা যায় না—এটাও
তাে শুনে বললে আমরাও বুঝতে
পারব না। বলা যায় না,
কোন
পর্যায়ে কেন বলা যায় ?
মহারাজ
:
বলা
যায় না—এটাও তাে বলা হচ্ছে।
এ তাে উলটো কথা। বলা যায় না
মানে,
সেটি
শব্দাতীত। তাতে আবার বলা যায়
না—এটাই বলা হল। এ কোন্ দেশি
কথা?
প্রশ্ন:—পূর্বপক্ষীর
তাে কথা এই যে,
যাকে
জানার কোন উপায় নেই,
সেটা
আবার আছে কী করে ? মহারাজ : না, না। বলছি। যে-সম্বন্ধে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই, তাকে আবার আলাদাভাবে প্রমাণ করার কী প্রয়ােজন?
প্রশ্ন:-কোন সন্দেহের অবকাশ নেই !
মহারাজ : তােমার কি সন্দেহ আছে, তুমি আছ কী নেই?
প্রশ্ন:-আমার অস্তিত্ব সম্বন্ধে কোনও সন্দেহ নেই।
মহারাজ
:
সন্দেহ
নেই,
এখন
তােমার অস্তিত্বটি কী,
সেইটি
বিচার করে দেখতে দেখতে সব
শূন্য হয়ে যায়। তােমার
অস্তিত্ব খুঁজতে গেলে পাওয়া
যায় না কিছু। এই হল তােমার
স্বরূপ।
No comments