শ্রীশ্রীমায়ের প্রথম দর্শন ও দীক্ষালাভ হয়_ শ্রীরাধাশ্যাম রায়
শ্রীশ্রীমায়ের প্রথম দর্শন ও দীক্ষালাভ হয়_ শ্রীরাধাশ্যাম রায়
শ্রীরাধাশ্যাম রায় বৃহত্তর ঢাকার মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার আবীরপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
কার্যোপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরে বসবাস করতেন।
জয়রামবাটীতে শ্রীশ্রীমায়ের প্রথম দর্শন ও দীক্ষালাভ হয়।
শ্রীশ্রীমা সংসারে থেকে তাকে কর্ম করার জন্য আশীর্বাদ করেছিলেন ।
ভারতের পিয়ারলেস (Peerless)গ্রুপ অব কোম্পানী তারই প্রতিষ্ঠা(সুনীল কুমার রায় বর্তমানে )।
মৃত্যুর পূর্বে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় অকস্মাৎ,
একদিন তিনি হাত ঘুরিয়ে আরতি করছেন।
হাতজোড় করে প্রণাম করছেন ।
বাহ্যজ্ঞান লােপ পেয়েছে,
তবে অন্তরজ্ঞানে আলােকিত হয়ে শ্রীশ্রীমায়ের শ্রীমুখ দর্শন করতে করতে তাঁর নির্ভয় ও পরম আশ্রয়স্থল-মাতৃকোলেই চলে গেলেন।
পরবর্তিকালে তিনি কোলকাতায় বসবাস করতেন।]
দেশ বিভাগের পূর্বে আমরা পূর্ববঙ্গের তথা বাংলাদেশের বৃহত্তর ঢাকার মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার আবীরপাড়া গ্রামে বসবাস করতাম।
বাবা নারায়ণগঞ্জে একটি পাট-ব্যবসার অফিসে বিশিষ্ট পদে চাকরী করতেন।
আমরা তিন ভাই ছিলাম এবং আমিই বড়।
যখন স্কুলে পড়তাম তখন আমার জীবনে একটি বিরাট পরিবর্তন ঘটে গেল ।
তকালীন প্রথা অনুযায়ী আমার বাবা-মা কুলগুরুর কাছেই দীক্ষা নিয়েছিলেন।
কিন্তু আমার চিন্তা-ভাবনা ছিল একটু অন্যরকম।
আমরা দেখেছি বাবা শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের জীবনী পড়তেন এবং ঐ সময়ে প্রচারিত “তত্ত্বমঞ্জুরী” নামে একটি বিখ্যাত ধর্মীয় পত্রিকার নিয়মিত পাঠকও ছিলেন।
সে সুবাদে বাড়িতে বসেই শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধে বই পড়ে জানার প্রথম সুযােগ হয়েছিল।
এসময় থেকেই নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনে যাতায়াত শুরু করি।
সেখানকার মহারাজদের সাথে পরিচয় হয় এবং তাঁদের কাছে।
শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা জানার আরও সুযােগ পাই।
নারায়ণগঞ্জেরই আমার এক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের নিকট জানতে পারি শ্রীমা সারদাদেবী তখনও স্থূলদেহে বর্তমান।
শুনেই আমার হৃদয়টা যেন নাড়া দিয়ে গেল ।
নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের একজন মহারাজের কাছে একদিন মনের কথাটি প্রকাশ করি।
মহারাজ শুনে বিশেষভাবে উৎসাহিত হয়ে বললেন, “এই বেলা যা, মায়ের কাছে যাবি তাে এই বেলা যা।
” আর যন স্থির থাকতে পারছি না।
বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাদের স্মৃতিমালা। শ্রীশ্রীমায়ের প্রথম দর্শন ও দীক্ষালাভ হয়_ শ্রীরাধাশ্যাম রায়
মনে সারাক্ষণই ভাবনা কি করে শ্রীশ্রীমাকে দেখব, কেমন করে তাঁর শ্রীপাদপদ্মের শরণ নেবাে।
তখন আমার একজন জ্ঞাতি দাদা মেসে থেকে চাকরী করতেন।
আমার বাড়ী থেকে স্কুলে যাতায়াত অসুবিধা বলে আমিও ঐ মেসে থেকে পড়াশুনা করি।
এদিকে জয়রামবাটীতে যাওয়া এবং মায়ের দর্শন ও দীক্ষালাভের জন্য আমার মন ভীষণ ব্যাকুল।
এরপর আমরা তিন-চারজন বন্ধু-ধীরেন, মনােরঞ্জন, সুধাংশু, অমূল্য একত্রিত হয়ে পরামর্শ করে জয়রামবাটী যাওয়ার এক বুদ্ধি আঁটলাম ।
সেদিনই আমার জ্ঞাতি দাদা বেতন পেয়েছেন।
টাকাটা কোথায় রাখতেন তা আমার জানা ছিল।
সকলের অলক্ষ্যে সেখান থেকে পথের খরচ বাবদ পনর টাকা নিয়ে বালিশের তলায় একটি চিঠি লিখে বন্ধুদের সাথে জয়রামবাটীর উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
শ্রীশ্রীমায়ের কৃপা করে সুদূর নারায়ণগঞ্জ থেকে জয়রামবাটীতে টেনে আনলেন।
শ্রীশ্রীমায়ের বাড়ী প্রথম ঢুকেই মাকে দেখলাম ঘরের বারান্দার মেঝেতে পা দু'খানি লম্বা করে ছড়িয়ে বসে আছেন, যেরূপে ছবিতে আমরা দেখি ।
সে সময় মায়ের পায়ে খুব বাতের যন্ত্রণা ছিল ।
শ্রীশ্রীমাকে আমরা প্রণাম করার পর আমাদের মনের ইচ্ছাটি প্রকাশ করলাম।
শ্রীশ্রীমা সহাস্যে সম্মতি জানিয়ে সেদিন রাতে জয়রামবাটী থাকার অনুমতি দিলেন।
যে আকাক্ষা নিয়ে জয়রামবাটীতে ব্যাকুল প্রাণে ছুটে গিয়েছিলাম শ্রীশ্রীমা তা অচিরেই পূর্ণ করলেন অর্থাৎ করুণা করে আমাকে দীক্ষা দানে মানবজীবন ধন্য করলেন।
সে মহা পুণ্য লগ্নের কথা স্মরণ হলে আজও আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই।
দীক্ষার পর আমি শ্রীশ্রীমায়ের নিকট সন্ন্যাস নিতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু মা রাজী হননি।
যিনি জগৎ জননী তিনি সকলের ভবিষ্যৎ জানেন।
তাই শ্রীশ্রীমা বললেন,
তােমার জগতে অনেক কাজ আছে।সংসারে ফিরে গিয়ে কাজ কর।
তারপর মাকে বললাম, মা আমি বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে এসেছি।
- ঠাকুরের নাম করব কি করে ?
- শ্রীশ্রীমা বললেন, তবে নিলে কেন ?
একথা বলে করুণাময়ী মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন।
তারপর বললেন—
যাও তােমার কিছু করতে হবে না। শুধু দু'বেলা দু'টো প্রণাম করাে—তবেই হবে।
শ্রীশ্রীমায়ের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে ভরা মনে।
আমি নিজের দেশ নারায়ণগঞ্জে ফিরে এলাম।
বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাদের স্মৃতিমালা। শ্রীশ্রীমায়ের প্রথম দর্শন ও দীক্ষালাভ হয়_ শ্রীরাধাশ্যাম রায়
এরপর কেটে গেল বেশ ক’বছর।
এর মধ্যে আমি বি.এ পাশ করে।
কর্মজীবনে প্রবেশ করলাম।
আমি কখনই একটি মাত্র কাজের গণ্ডিতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখতে পারতাম না।
একসঙ্গে অনেকগুলাে কাজেই নিজেকে জড়িয়ে রাখতাম।
একসময় শ্রীশ্রীমায়ের কৃপায় কর্ম এবং কর্মের সাফল্যের জোয়ারে আমাকে যেন ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল,
ঠিক তখনই নানাদিক থেকে বিপর্যয় এসে আমাকে যেন থমকে দিল।
এ যেন করুণাময়ী মা তার সন্তানের রাস টেনে নিজের দিকে মােড় ঘুরালেন।
দেশ বিভাগের পরে প্রথম বাগবাজার সেন্ট্রাল এভিনিউতে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতাম,
তারপর দমদমের বাড়িতে এলাম।
তখন আর যেন কিছুই ভাল লাগত না।
সব কর্মেই অনাসক্তি।
এর ফলে ধর্মে আরও বেশি গভীর অনুরাগ এলাে।
নারায়ণগঞ্জ মিশনের মহারাজদের নিকট থেকে অনেকগুলাে গান লিখে তার সুর শিখেছিলাম।
এখন ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাড়িতে সকাল-সন্ধ্যায় মায়ের মন্দিরে সেগুলােই গেয়ে আনন্দ লাভ করি।
শেষ রাতে বিছানায় ধ্যান জপ করার অভ্যাস ছাড়া অফিসে বা বাড়িতে যখন যেখানেই থাকতাম সেখানে বসেই জপ করে নিয়ম রক্ষা করতাম।
- একাদশীর দিন
- রামনাম,
- শ্রীগুরু বন্দনা, ইত্যাদি ছাড়াও বাড়িতে প্রতি বৃহস্পতিবার
- শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত' পাঠের আয়ােজন করতাম।
পাড়ার শ্যামাপদবাবু ভাল ভক্তিগীতি গাইতেন।
তিনিও প্রতি সপ্তাহেই আমার বাসায় এসে গান করতেন।
আমার শরীর ভাল না থাকলে আমার ছেলেমেয়েদের মধ্যে কেউ শ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃত বইখানি পড়ত।
জয়পুরিয়া কলেজের অধ্যাপক বিনয়কুমার সেন আমার বন্ধু ছিলেন।
তিনি পূজনীয় অভেদানন্দ মহারাজের শিষ্য ছিলেন।
এঁর কথামৃত পাঠের স্বাদই আলাদা।
তাঁকে মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে এনে পাঠ করাতাম।
বছরে একবার বাড়িতে প্যাণ্ডেল বেঁধে অনেক ভক্তকে নিমন্ত্রণ করে বেশ বড় করে সারাদিনের ভােগরাগ ও ভজনের অনুষ্ঠান করতাম।
সেসব মধুর স্মৃতি আজও আনন্দ দেয়। বাড়ির বাইরে।
কোথাও না গেলে ঘরে বসেই ধ্যান-জপ ও কথামৃত পাঠ নিয়েই সময় কাটাতাম।
এসময় শ্রীশ্রীমায়ের আরও অনেক দীক্ষিত শিষ্যের সঙ্গে আমার আলাপ-পরিচয় হয়।
আমারও একটা নেশার মত হয়েছিল,
স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যেখানে কথামৃত পাঠ ও ভজন-কীর্তন হতাে সেখানে যাওয়ার।
আমার স্ত্রী পুষ্পবালা ছিলেন স্বামী বিজ্ঞানানন্দজী মহারাজের শিষ্যা ।
তাঁর গুরুভক্তিও মনে রাখার মত।
বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাদের স্মৃতিমালা শ্রীশ্রীমায়ের প্রথম দর্শন ও দীক্ষালাভ হয়_ শ্রীরাধাশ্যাম রায়
স্বামী বিজ্ঞানানন্দজী মহারাজের জন্মদিনে আমার স্ত্রী (পুষ্পবালা) খুব ভােরে উঠে ক্রীমক্রেকার বিস্কুট ও চা মহারাজের ভােগে দিতেন।
কারণ পূজনীয় (স্বামী বিজ্ঞানানন্দজী)মহারাজের এটি খুব প্রিয় ছিল।
আমরাও এ প্রসাদ পেতাম।
আর এ দিনটিকে খুব উপভােগ করতাম।
এক সময় উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা অনুভব হলাে।
ক্রমান্বয়ে অফিসে যাওয়া ছেড়ে দিতে হলাে অসুখের জন্য ।
আমাদের বাড়িতে অগনিত ভক্ত বন্ধুরা আমায় দেখতে আসতে লাগলেন।
আমি তখনও দেখতে-বুঝতে পারি।
তাই স্ত্রীকে(পুষ্পবালা) বললাম এরা সব ভক্ত, এসব ভক্তসেবার যেন ক্রটি না হয়।
যে কেউ এলেই রসগােল্লা, আম এসব যেন দেয়া হয়।
এর কিছুদিন পূর্বে আমি একটি স্বপ্ন দেখলাম।
শ্রীশ্রীমা একটা মাটীর পূর্ণ কলসী নিয়ে আমাদের উঠানে এসে দাঁড়িয়েছিলেন।
- আমি মাকে জিজ্ঞাসা করলাম মা আমাকে কবে নেবে ?
- শ্রীশ্রীমা বললেন-“হ্যা বাবা নেব বৈকি! একটু দেরী আছে।
আমি মাকে প্রণাম করলাম।
মা তখন এমনভাবে নিচু হয়ে আমাকে আশীর্বাদ করলেন যে মায়ের মাথা আমার পিঠে এসে লাগলাে।
শ্রীশ্রীমায়ের এ কথা শুনে বেশ চিন্তিত হলাম।
অথচ আমার মন তখন পার্থিব সব কিছু থেকেই প্রায় তুলে নিয়েছিলাম।
সংসারে আর যেন কিছুই ভাল লাগছিল না।
প্রাণ যেন আঁটুপাটু করছিল এ নশ্বর জগৎ ছেড়ে শ্রীরামকৃষ্ণলােকে যাওয়ার জন্য।
প্রচার মানুষের বৃথাগর্বই মানুষকে প্রচারে প্রণােদিত করে
শ্রীশ্রীমায়ের কাছে তাই সকাল-সন্ধ্যায় প্রার্থনা করতাম তার করুণা লাভের জন্য ।
ঠাকুর এ যুগে আদর্শ দেখিয়েছেন তাহলে মা ও স্বামীজিকে নিজের সাথে নিয়ে এলেন কেন?
শ্রীশ্রীমায়ের প্রথম দর্শন ও দীক্ষালাভ হয়_ শ্রীরাধাশ্যাম রায়
1. Esurance home insurance progressive home
insurance
2. singleton pregnancy signs of twins in
early pregnancy signs you're having twins
3. Cigna life insurance 2022 MedlinePlus Uk
4. top skin specialist in Pune MedlinePluss UK
5. dpn skin what is it causes symptoms treatments
6. b-j medical cut-off fees eligibility
8. shiv shakti images lord shiv shakti photo
HD
9. shiv shakti images with quotes download
No comments