প্রশ্ন:--মহারাজ, ব্যস্ততা থাকলে কী করব?
|
Sri
Ramakrishna
|
Sri
Ramakrishna
|
Sri
Ramakrishna
|
প্রশ্ন:--মহারাজ, ব্যস্ততা থাকলে কী করব?
মহারাজ : কী আর করবে, ঐরকম নােঙর টানবে! (সকলের হাসি) আসল কথা, যতটুকু সময়ই কর না কেন, ভাবের সঙ্গে করার চেষ্টা করবে। ভাবটাই আসল। একটা ভাব নিয়ে করলে যতটুকু সময়ই কর তাতে উপকার হবে। মন শান্ত না হলে নিজেকে যাচাই করা যায় না, মনকে বিশ্লেষণ করা যায় না।
কঠোপনিষদে বলা হয়েছে :
“অষ্ঠমাত্রঃ পুরুষােন্তরাত্মা সদা জনানাং হৃদয়ে সন্নিবিষ্টঃ ।।
তংস্বাচ্ছরীরাৎ প্রবৃহেন্মুঞ্জাদিবেষীকাংধৈর্যেণ৷৷” (2/3/17)
অর্থাৎ ঘাসের কোরকটাকে যদি আলাদা করতে হয়, তবে সেটা হঠাৎ টান দিলে ভেঙে যাবে। খুব সন্তর্পণে ধীরে ধীরে কোরকটাকে ঘাস থেকে পৃথক করতে হয়। সেইরকম খুব ধৈর্যের সাথে আত্মাকে অনাত্মা দেহাদি থেকে আলাদা করতে হয়। এই শ্লোকে আত্মাকে দেহ থেকে আলাদা করার কথা বলা হয়েছে। সেরকম ধ্যানের সময় মনকে যাতে নিবিষ্ট করতে চাইছি সেটা ছাড়া অন্য সব বস্তু থেকে মনকে পৃথক করে এনে ইষ্টবস্তুতে নিয়ােগ করতে হবে।
গীতাতে রয়েছে
“শনৈঃশনৈরুপরমে ৰুদ্ধ্যা ধৃতিগৃহীতয়া।আত্মসংস্থং মনঃ কৃত্বা নকিঞ্চিদপি চিন্তয়েৎ যতােযতাে নিশ্চরতি মনশ্চঞ্চলমস্থিরম্। ততস্ততােনিয়ম্যৈতদাত্মন্যেব বশংনয়েৎ ॥” (6/25-26)
খুব ধীরে ধীরে—‘শনৈঃ শনৈঃ’ বলা হয়েছে। কারণ, সমাধির চেষ্টা করছি। যে-অবস্থা লাভ করতে চাই, তার জন্য মনকে তাে শান্ত করতে হবে। ধ্যান করতে হলে মনকে শান্ত করতেই হবে। মন শান্ত হয়ে এলে জীবনটাতে তার ছাপ পড়বে। চলন-বলন সব শান্ত হবে। জীবনে শান্তভাব আসবে, চরিত্রে মৃদুভাব আসবে। তড়বড় করলে হবে না। কীর্তন যারা করে—খােল-করতাল বাজিয়ে খুব নাচানাচি, লাফালাফি করে। ধ্যানীর এ-অবস্থা ভাল লাগে না। ঠাকুরের জীবনে দুটোই খুব লক্ষ করা যায়। যখন নাচছেন, সে কী নৃত্য! যারা সঙ্গে গাইছে বা নাচছে তারা শুধু নয়, যারা শুনছে বা দেখছে তারাও ঘেমে যাচ্ছে। আবার একসময় বলছেন : “এখন হৈচৈ ভাল লাগে না।” অর্থাৎ শান্তভাব।
প্রশ্ন:-তিনি সব ভাবের পরাকাষ্ঠা দেখাবেন কিনা, তাই দুটোই দেখিয়েছেন।
মহারাজ : ব্রক্ষ্ম শব্দটা বলা হচ্ছে তাে?
প্রশ্ন:--তা বলা হচ্ছে।
মহারাজ : তাতে, সেটা তাে আর ব্রষ্মের স্বরূপ হল না।।
No comments